ঢাকা, ২৭ নভেম্বর বুধবার, ২০২৪ || ১৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
১৫৫৪

অন্ধকূপ কি বন্ধ হবে?

সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৪:৩৬ ১৮ মার্চ ২০১৯  

অভিযোগ, ছবি নির্মাণ নেই! নির্মাণ হলে রিলিজের জন্য হল নেই। আবার কোটি টাকা ব্যয়ের সিনেমা হলে গেলে প্রযোজকের পুঁজি নেই!

টাকা যায় কই? রেডি উত্তর - হলে দর্শকই ত নেই।

একই যাত্রায় সিনেপ্লেক্স নিয়ে কারো কোনো অভিযোগ নেই? সেখানে সিনেমা আছে। সিনেমার কমবেশি টাকা আছে, থিয়েটারে দর্শকও আছে।

আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ সিনেপ্লেক্সে ছবি মুক্তির বিপরিতে ভ্যাট ট্যাক্স ছাড়া আর তেমন কিছুই কর্তন না করে প্রদেয় ভ্যাট রিসিটসহ ব্যাংক চেকের মাধ্যমে প্রযোজকের প্রাপ্য অর্থ বুঝিয়ে দেয়া হয়।

অন্যদিকে দু’একটি বাদে প্রায় সব অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে নামমাত্র হলে কোথাও প্রজেক্টর আছে কোথাও নেই। থাকলেও অধিকাংশই নন-প্রফেশনাল প্রজেক্টর। এ যেন মৎসন্যায় যুগ! ছবি হলে মুক্তি পাবে, আয় ব্যয় উভয়ের হবে। অথচ এখানে মেশিন ভাড়া প্রযোজক এসি বিল প্রযোজক। পরিচ্ছন্ন চার্জ প্রযোজক। এমন কি হলের আলোকসজ্জাসহ আনুসঙ্গিক প্রায় সকল খরচ প্রযোজক।

ধরা যাক একটি টিকেটের মূল্য ১৫০ টাকা। সেখান থেকে এসি চার্জ আবার মেইনটেনেন্স চার্জ এবং পৌরকর বাবদ ৯০ টাকা হল মালিক আগেই নিজের কাছে রেখে অবশিষ্ট ৬০ টাকার দুইভাগ করে, হল মালিক তার ভাগের ৩০ টাকা পকেটে তুলেন, আর প্রযোজক তার ভাগের ৩০ টাকা দিয়ে পোষ্টার ব্যানার মেশিন, হলের আলোকসজ্জা, প্রতিনিধি বিলসহ প্রচারের যাবতীয় খরচ বহন করেন।

ছবি নির্মাণে কোটি টাকার সাথে এসব অনাকাঙ্খিত ব্যয় করে লগ্নিকৃত অর্থের কানাকড়ি প্রযোজকের ভাগ্যে জুটে ত না-ই, উপরন্ত ঘর থেকে আরো অর্থ নিয়ে ঢালতে হয়।

এভাবেই চলচ্চিত্রকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়ে কলকাতার ছবির বাজার সৃষ্টিতে ব্যর্থ একটি চক্র যখন বুঝতে পেরেছে তাদের কৃতকর্মের ফলে নির্মাতারা হলের জন্য আর ছবি বানাতে আগ্রহী নন, দর্শকও কথিত হলে আর আসছে না। তখন কুল হারিয়ে সিনেমাবান্ধব সরকারকে চাপে ফেলে অনৈতিক দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নির্মাতা ও প্রযোজকদের কাঁধে দোষ চাপিয়ে হল বাঁচানোর ধূয়া তুলে - হল বন্ধের হুমকি!

কেনো? হল বাঁচাবেন, দেশীয় সিনেমা বাঁচাবেন না?

জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস সামনে রেখে কেনো সরকারকে বিব্রত করতে এমন আল্টিমেটাম?

দাবি - ভারতীয় হিন্দি ছবি আমদানীর জন্য সরকারকে আইন শিথিল করতে হবে।

ব্যাপারটা এমন, আমি আমার একক লাভের জন্য অন্যের ব্যবসা হত্যা করবো, তোমরা আইন শিথিল করো।

রাষ্ট্র এই দাবি না মানলে সত্যি কি তারা তাদের আল্টিমেটাম কার্য্কর করবেন? নাকি এই হুমকি সরকারের ওপর চাপ সৃস্টির একটা অপকৌশল মাত্র।

তবে এটা ঠিক, যত দ্রুত এই অন্ধকূপগুলো বন্ধ করে একই স্থানে সিনেপ্লেক্স নির্মাণ হবে, তত দ্রুত বাংলা সিনেমা রাহুমুক্ত হবে।

 ( জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত চলচ্চিত্রকার )

বিনোদন বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর