ঢাকা, ২২ নভেম্বর শুক্রবার, ২০২৪ || ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২৭৪

অসহ্য গরমে সুস্থ থাকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১১:০৮ ২২ এপ্রিল ২০২৪  

অসহ্য গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত। কেউ বলছে আমপাকা গরম, কেউ বলছে তালপাকা। রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা সকাল থেকেই প্রায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্য বিভাগীয় শহরে তা আরও বেশি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে বলছে আবহাওয়া অফিস।

 

প্রচণ্ড এই গরমে শ্রমজীবীদের কষ্ট আরও বেশি। ফ্যানের নিচে বসেই শুকাচ্ছে না শরীরের ঘাম। বাইরে বের হলে তো প্রাণ যায় অবস্থা। গরমের এই সময় অনেকেরই পেটের সমস্যাসহ নানা রোগ-জীবাণুর সমস্যা দেখা দেয়। তাই কী খাবেন, সে ব্যাপারে থাকতে হবে সদা সতর্ক।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রচণ্ড গরমে ঘামের সঙ্গে সোডিয়াম পটাশিয়াম বেরিয়ে যায়। সে কারণে পানিস্বল্পতা দেখা দেয় এবং দুর্বল লাগে। এ জন্য কিছুক্ষণ পরপর লবণ ও লেবুর রস দিয়ে পানি পান করা প্রয়োজন। পানি দেহের ভেতরটাকে পরিশোধিত করে। এ সময় ইসবগুল, তুকমা, তরমুজ, বেল, তেঁতুল, কাঁচা আম দিয়ে শরবত করে খাওয়া যেতে পারে।

 

টকদই প্রোবায়োটিকের কাজ করে। শরীর সুস্থ অর্থাৎ জীবাণুর হাত থেকে বাঁচায়। প্রতি বেলায় খাবারের সঙ্গে টকদই রাখতে পারলে ভালো হয়। তেঁতুল, ইসবগুল, কাঁচা আম শরীরকে স্নিগ্ধ শীতল রাখে। গরমের সময় সহজে হজম হয় না এমন খাবারে শরীর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ফলে আরও বেশি গরম লাগে।

 

এছাড়া নিদ্রাহীনতা, হজমের গোলমাল, চেহারায় ক্লান্তির ছাপ, বমি ভাব দেখা দিতে পারে। এ সময় ঝাল মসলাজাতীয় খাবার যত কম খাওয়া যায় ততই ভালো। রাত ও দুপুরের খাবারের সঙ্গে ঠাণ্ডা সালাদ রাখলে শরীরের জন্য উপকার হয়। গরমের সময় দুপুরে শাক-সবজি দিয়ে নিরামিষ খেলে ভালো হয়। ভাতের সঙ্গে আনারস, কামরাঙ্গা, আম, আমড়া জাতীয় টক ফল এবং ছোট মাছের ঝোল, সুসিদ্ধ ডাল খেলেও দেহে প্রশান্তি মিলবে।

 

রাতের খাবারে দই, চিড়া, কলা, সিদ্ধ আটার রুটি, সিদ্ধ ডিম, পাউরুটি, জেলি, সাদা সবজি, নরম খিচুড়ি রাখা যেতে পারে। গরমের সময় অনেকেই পান্তাভাত খেতে পছন্দ করেন। এতে শরীর ঠান্ডা থাকে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়। শরীরের পানির অভাব দূর করে।

 

দুপুরের চেয়ে কম হওয়া উচিৎ রাতের খাবার। কারণ রাতের দিকে মানুষের শারীরিক পরিশ্রম যেমন কমে যায় তেমনই বিপাক ক্রিয়ার হারও কম থাকে। গরমের সময় প্রায় মানুষের ডায়রিয়া বা পেট খারাপ হয়ে যায়। এতে স্বাস্থ্য যেমন নষ্ট হয় তেমনই দেহের লাবণ্য নষ্ট হয়।

 

পেটের গোলমাল থেকে বিরত থাকার জন্য সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। গরমের পৃথক কোনো খাবার নেই। খাবার হবে সুষম ও সহজপাচ্য ও পানীয়। বাজার করার সময় ফল ও সবজি অবশ্যই কিনতে হবে। দেহ মন সুস্থ সতেজ রাখার জন্য এমন খাবারই গরমের সময় খেতে হবে।

 

গরমে শরীর সুস্থ রাখতে খাবারের কিছু টিপস

১. খালি লেবু বা লেবুর শরবত খেলে শরীরের জন্য ভালো।

২. পানি পান করতে হবে দিনে ১০/১২ গ্লাস।

৩. প্রতিদিন তাজা ফল খাওয়ার অভ্যাস করা দরকার।

 

৪. তরমুজ তৃষ্ণা মেটায়। এতে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, লাইক্লোপেন ও বিটা ক্যারোটিন। যা ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

৫. প্রচণ্ড গরমের সময় শরীর থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায় বলে খেতে হবে ডাব, শসা, আম, তরমুজ ইত্যাদি। এছাড়া পানিজাতীয় সবজি যেমন পটল, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, লাউ- এসব সবজি হালকা তেলে রান্না করে খেতে হবে।

৬. এড়িয়ে যেতে হবে ডুবো তেলে ভাজা খাবার, মাঝ, মাংস ভুনা এবং গুরুপাক খাবার।

 

৭. লবণ দিয়ে কাঁচা আম খেলে উপকার পাওয়া যাবে। হিটস্ট্রোক থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

৮. ডাবের পানি খুবই উপকারী। এতে আছে পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, সালফার, ক্লোরিন ও ফসফরাস।

৯. প্রচণ্ড রোদে গরমে ঘুরে আসার পর ফ্রিজের ঠান্ডা পানি অথবা খাবার খাওয়া উচিত নয়। এতে আরাম হলেও শরীরের তাপমাত্রা তারতম্যের জন্য ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে। এছাড়া বাইরে থেকে ঘেমে এসে এসির নিচে বসাও উচিত নয়। তাতেও লাগতে পারে ঠান্ডা।