ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২৯১

অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করে ভালো আছেন সৌরভ, এটা কী?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:৫৪ ৫ জানুয়ারি ২০২১  

এখন বেশ সুস্থ আছেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি। করোনারি আর্টারিতে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করার পর তার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। ধীরে ধীরে সেরে উঠছেন তিনি। সবকিছু ঠিক থাকলে বুধবার (৬ জানুয়ারি) হাসপাতাল ছাড়তে পারেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি। 

 

স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি কী? এর সুবিধা-অসুবিধায় বা কী? এটি একটি শল্যচিকিৎসা। এতে হৃৎপিণ্ডের পেশীতে রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালী খোলা হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এ রক্তনালীকে করোনারি ধমনী বলে। হার্ট অ্যাটাক কিংবা ব্রেন স্ট্রোকের পর রোগিকে ঝুঁকিমুক্ত করতে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করেন চিকিৎসকরা।

 

গত শনিবার (২ জানুয়ারি ) বাড়িতে জিম করা অবস্থায় ব্ল্যাকআউটের শিকার হন সৌরভ। চোখে ঝাপসা দেখার পর মাথা ঘুরে মাটিতে পড়ে যান তিনি। এরপর দ্রুত তাকে দক্ষিণ কলকাতার উডল্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় তার। কয়েকটি টেস্ট করার পর সাবেক বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ধমনীতে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। 

 

ফলশ্রুতিতে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করে সৌরভের বিপজ্জনক একটি ব্লকে স্টেন্ট বসানো হয়। পরে তার অবস্থা স্থিতিশীল হয়। কোনো রোগির ক্ষেত্রে এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা প্রয়োজন হলে এটি করা হয়। একে পার্কিউটেনিয়াস ট্রান্সুলামিনাল করোনারি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টিও বলে। এরপর রক্তনালীতে করোনারি আর্টারি স্টেন্ট বসানো হয়। শিরা-উপশিরাতে পুনরায় রক্ত চলাচলে সহায়তা করে এটি। 

 

ভারতীয় হেলথলাইনের তথ্য অনুযায়ী, এক ঘণ্টার মধ্যে রোগির অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করলে মৃত্যুঝুঁকি হ্রাস পায়। যত তাড়াতাড়ি এটি করা যায়, তত দ্রুত হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। মূলত তিন ধরনের অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি রয়েছে। যথা: ১. বেলুন অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি, ২. লেজার অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি ও ৩. অ্যাথেরেক্টোমি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি।

 

সুবিধা
ভারতীয় সোসাইটি ফর কার্ডিওভাসকুলার অ্যাঞ্জিওগ্রাফি অ্যান্ড ইন্ট্রাভেনশনস সোসাইটির রিপোর্ট অনুসারে, তাৎক্ষণিক অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি রোগির জীবন বাঁচাতে পারে। হৃদপিণ্ডের পেশীর ক্ষতি কমে। বুকে ব্যথাতে স্বস্তি দেয়। রক্ত জমাট বাঁধে না। সর্বোপরি, হৃদরোগ ও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি হ্রাস পায়।

 

অসুবিধা
প্রতিটি চিকিৎসা পদ্ধতির অসুবিধা আছে। অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টিতে অ্যানেশথিক, রঞ্জকসহ অন্যান্য উপকরণ ব্যবহারে ফলে রোগির চিরস্থায়ী অ্যালার্জি হতে পারে। ব্লকড ধমনীতে রক্তপাত সৃষ্টি, রক্ত  জমাট বাঁধতে কিংবা ক্ষত তৈরি হতে পারে। অস্ত্রোপচারের পর অনিয়মিত হার্টবিট হওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে।

অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি রক্তনালী, হার্টের ভাল্ভ এবং ধমনীর ক্ষতি সাধন হতে পারে। এছাড়া এ প্রক্রিয়ায় কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অধিকন্তু যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে, তাদের শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

 

সতর্কতা
অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির পর শরীর নিয়ে অবহেলা করা যাবে না। রোগিকে নিজের ব্যাপারে আগের চেয়ে বেশি যত্নবান হতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খেতে হবে। ধূমপান-অ্যালকোহল ছেড়ে দেয়া শ্রেয়। ভারসাম্যপূর্ণ ডায়েট অনুসরণ করা খুবই জরুরি।