ঢাকা, ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার, ২০২৪ || ১২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২১১৬

আগাম মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়াচ্ছে কোমল পানীয়

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১২:২৭ ৬ এপ্রিল ২০১৯  

আগাম মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দিচ্ছে কোমল পানীয়।

চিনি বা কৃত্রিম মিষ্টি দিয়ে তৈরি এসব খাবারের কারণে হৃদরোগ এবং কয়েক ধরণের ক্যান্সারের আশংকা তৈরি হচ্ছে।

হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির টিএইচ চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেলথ পরিচালিত নতুন এক গবেষণায় এ তথ্য বেরিয়ে আসে।

 

দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে চালানো গবেষণাটির ফলাফল সম্প্রতি প্রকাশিত হয়।

সারা বিশ্বের ৩৭ হাজার পুরুষ এবং ৮০ হাজার নারীর ওপর গবেষণাটি পরিচালিত হয়।

 

এতে দেখা গেছে, চিনি দিয়ে তৈরি কোমল পানীয় পানের কারণে অন্য কোন কারণ ছাড়াই তাদের আগাম মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে গেছে।

 

গবেষণা বলছে, ওই জাতীয় পানীয় যত বেশি খাওয়া হবে, তাদের মৃত্যু ঝুঁকিও ততই বাড়বে।

 

গবেষক ও প্রধান লেখক ভাসান্তি মালিক বিবৃতিতে বলেছেন, যারা মাসে একবার এরকম চিনি দিয়ে তৈরি পানীয় পান করে, তাদের তুলনায় যারা চারবার পর্যন্ত পান করে, তাদের আগাম মৃত্যুর ঝুঁকি ১ শতাংশ বেড়ে গেছে। এটা বিশেষভাবে উদ্বেগজনক এই কারণে যে, সারা বিশ্বে এখন কোমল পানীয় পানের প্রবণতা বাড়ছে।

 

যারা সপ্তাতে ২ থেকে ছয়বার পান করে, তাদের বেড়েছে ৬ শতাংশ, আর যারা প্রতিদিন এক থেকে দুইবার চিনির পানীয় পান করে তাদের বেড়েছে ১৪ শতাংশ।

 

প্রতিদিন যারা দুইবারের বেশি এ ধরনের চিনি দিয়ে তৈরি পানীয় পান করেন তাদের আগাম মৃত্যুর আশংকা বেড়েছে ২১ শতাংশ।

 

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা চিনি দিয়ে তৈরি পানীয় খেয়েছেন, তাদের আগাম হৃদরোগ এবং কিছু ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউরোমনিটর বলছেন, বিশ্বে এখন কোমল পানীয় পানের হার বছরে গড়ে জনপ্রতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯১.৯ লিটারে, যা পাঁচ বছর আগেও ছিল গড়ে ৮৪.১ লিটার।

 

বিশ্বে এখন কোমল পানীয় পানের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে চীন। বছরে দেশটির একেকজন নাগরিক এ জাতীয় পানীয় পান করেন ৪১০.৭ লিটার।

 

এরপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র (৩৫৬.৮ লিটার), স্পেন (২৬৭.৫ লিটার), সৌদি আরব (২৫৮.৪ লিটার) ও আর্জেন্টিনা (২৫০.৪ লিটার)।

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, বিশ্বে পাঁচ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের মধ্যে স্থূলতার হার ১৯৭৫ সালেও ছিল ১১ মিলিয়ন, ২০১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৪ মিলিয়ন।

এ গবেষণা বলছে, অতিরিক্ত কোমল পানীয় পান করলে তার প্রভাব হতে পারে আরও ভয়াবহ।

এছাও চিনি ও অম্লীয় উপাদান দুটোই প্রচুর পরিমাণে থাকে কার্বোনেইটেড পানীয়তে। দুটোই দাঁতের শত্রু। তাই দাঁতের ক্ষয় ও সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে কোমল পানীয় বর্জনের বিকল্প নেই।  

গবেষণায় জানা যায়,  নিয়মিত কোমল পানীয় পান করলে টাইপ-টু ডায়বেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। কোমল পানীয় ‘মেটাবলিক সিন্ড্রোমবা বিপাকীয় প্রক্রিয়ার বিভিন্ন সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়, যা ক্রমেই ঠেলে দেয় হৃদরোগের দিকে। আছে উচ্চ রক্তপচাপের আশঙ্কাও।

প্রতিদিন একবার কার্বোনেইটেড পানীয় খাওয়াই কিডনি বা বৃক্কে পাথর হওয়া এবং অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত করার জন্য যথেষ্ট। যকৃতের বিভিন্ন রোগের জন্যও বিশেষভাবে দায়ী অতিরিক্ত কোমল পানীয়। স্থূলতা এবং হাড়ের ক্ষয়ও অতিরিক্ত কোমল পানীয় পানের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া। ইন্টারনেট।