মাতৃমৃত্যু
আজও কেন সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মরছেন মায়েরা?
লাইফ টিভি 24
প্রকাশিত: ১৯:৫৭ ১৯ নভেম্বর ২০১৯
বিশ্বে মাতৃমৃত্যু একটা বড় সমস্যা। বাংলাদেশও এর বাইরে নেই। তবে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে গত এক দশকে মাতৃমৃত্যুর হার অনেকটাই কমেছে। দেশের উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞা অনুযায়ী, একজন নারীর গর্ভাবস্থা, প্রসবাবস্থা কিংবা প্রসবোত্তর ৪২ দিনের মধ্যে শারীরিক জটিলতার কারণে বিভিন্ন রোগ যেমন ক্যান্সার, স্ট্রোক, যক্ষ্মা, ডায়াবেটিস কিংবা দুর্ঘটনাব্যতীত মৃত্যু ঘটলে, তাকে মাতৃমৃত্যু হিসেবে ধরা হয়।
জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৮ সালের জরিপ অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ৩ লাখ ৩ হাজার নারী গর্ভধারণকালীন, সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে কিংবা প্রসব পরবর্তী সময়ে উদ্ভূত শারীরিক জটিলতার কারণে মারা যান। অর্থাৎ প্রতি ২ মিনিটে একজন নারীকে এ করুন পরিণতির শিকার হতে হচ্ছে। একটু সচেতন হলে এ মাতৃমৃত্যু সহজেই প্রতিরোধ করা যায়। যদি নারীরা গর্ভাবস্থা ও প্রসবাবস্থায় যথাযথ যত্ন ও সুচিকিৎসা নিতে পারেন, তাহলেই তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব। মূলত খিঁচুনি ও প্রসব পরবর্তী অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলেই বেশিরভাগ নারীর মৃত্যু ঘটে। তবে এর পাশাপাশি জন্ডিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং শ্বাসকষ্টের মতো পরোক্ষ কারণেও অনেক নারীকে অকালে মৃত্যুবরণ করতে হয়।
একজন সুস্থ মা‘ই পারেন একটি সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে। আর একটি সুস্থ সমৃদ্ধ জাতি গঠনে সুস্থ স্বাভাবিক শিশু জন্মের বিকল্প নাই। সুস্থ স্বভাবিক শিশুর জন্ম নিশ্চিত করতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নানাবিধ কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে এ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রায় ৮ লক্ষ হতদরিদ্র নারীকে মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। বর্তমান প্রতিটি মা মাতৃত্বকালীন ভাতা হিসাবে প্রতিমাসে ৮০০ টাকা করে পাচ্ছেন। বর্তমানে একজন হতদরিদ্র মা ২ বছর পর্যন্ত মাতৃত্বকালীন ভাতা পেয়ে থাকেন। শূন্য হতে ৫ বছরের মধ্যে শিশুর ৯০ শতাংশ শারীরিক ও মানসিক বিকাশ সাধিত হয়। তাই এসময় মা ও শিশুর পুষ্টিকর খাবার খাওয়া খুবই জরুরি। এ বিষয়টি মাথায় রেখে সরকার মাতৃত্বকালীন ভাতার মেয়াদ ২ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩ বছর করার পরিকল্পনা করছে। এছাড়া মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাসে উন্নীত করা হয়েছে।
নিরাপদ মাতৃত্ব প্রতিটি নারীরই অধিকার। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে সরকার দরিদ্র গর্ভবতী মায়েদের সহায়তার জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। মাতৃত্বকালীন ভাতা হলো দরিদ্র মা ও শিশুর স্বাস্থ্য ও পুষ্টির উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি সামাজিক নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম। ২০ বছরের ঊর্ধ্ব বয়সের একজন দরিদ্র মা প্রথম এবং দ্বিতীয় সন্তান গর্ভধারণকালে এ ভাতা পেয়ে থাকেন। এ ভাতা মা-শিশুর স্বাস্থ্য ও পুষ্টির ঘাটতি পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এটি দেশে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার হ্রাসকল্পে সহায়ক হিসেবে কাজ করছে। দেশের প্রতি ইউনিয়নে গড়ে ২১ জন করে দরিদ্র মা এ ভাতা পান। ২০০৭ সাল থেকে শুরু হয় মাতৃত্বকালীন ভাতা। মাতৃত্বকালীন ভাতার কারণে গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ নিশ্চিত হচ্ছে, মা ও শিশুমৃত্যু হ্রাস পাচ্ছে, বাল্যবিবাহের হার কমছে, বিবাহ নিবন্ধন নিশ্চিত হচ্ছে এবং সর্বোপরি মা ও শিশুর স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত হচ্ছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি হাজার জীবিত শিশুর জন্ম দিতে গিয়ে ১.৭৬ জন মায়ের মৃত্যু হচ্ছে। সবমিলিয়ে এদেশে প্রতিদিন প্রায় ১৬ জন নারী, অর্থাৎ বছরে ৫ থেকে ৬ হাজার নারীর মাতৃমৃত্যু ঘটছে। তবে আশার বিষয় হলো, এ দেশের নারীদের মাঝে সচেতনতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০০১ সালে যেখানে মাত্র ৯% নারী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে সন্তান প্রসব করতেন, বর্তমানে তা ৪৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে প্রসবসেবা নেওয়ার হার আগের চেয়ে বেড়েছে। জরিপে দেখা যায়, মাতৃমৃত্যুর প্রধান কারণ রক্তক্ষরণ এবং খিঁচুনি। জন্মনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিও মাতৃ স্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। স্বাধীনতার পর মোট প্রজনন হার (টিএফআর) ছিল ৬। অর্থাৎ একজন মা তার প্রজনন বয়সে (১৫-৪৯ বছর) গড়ে ছয়টি সন্তানের জন্ম দিতেন। ২০০১ সালে এটা কমে হয় ৩ দশমিক ২। আর সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, টিএফআর ২ দশমিক ৩।
আইসিডিডিআরবি’র তথ্য অনুযায়ী ৯০’র দশকে অপুষ্টিতে ভোগা (বডি মাস ইনডেক্স অনুযায়ী) নারী ছিল ৫০ শতাংশ। বর্তমানে ২২ শতাংশ। অর্থাৎ দুই দশকে নারীর সার্বিক পুষ্টি-পরিস্থিতি ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। তবে দেশে এখনও কম ওজন নিয়ে (লো বার্থ ওয়েট) শিশু গ্রহণ করছে। এ পেছনে রয়েছে মায়ের অপুষ্টি। প্রজনন বয়সে এখন এক তৃতীয়াংশ নারী রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন। প্রতি তিনজন নারীর একজন আয়োডিন স্বল্পতার শিকার। মা আয়োডিনের স্বল্পতায় ভুগলে তার প্রভাব পড়ে শিশুর ওপর। আয়োডিন মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়। ফলে মায়ের ঘাটতির কারণে শিশুর মস্তিষ্কের পূর্ণাঙ্গ বিকাশ ঘটে না। শুধু দরিদ্রতাই নয় অসচেতনতা অনেকাংশে দায়ী।
গর্ভাবস্থায় শিশু মায়ের কাছ থেকে পুষ্টি নেয়। এ সময় মায়ের পুষ্টি চাহিদা বাড়ে। মাকে যদি বেশি পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার না খাওয়ানো হয় তাহলে মা ও শিশু দু’জনেরই পুষ্টির অভাব দিখা দেবে। এতে গর্ভের শিশুর বৃদ্ধি কম হবে, ওজন কম হবে। কম ওজনের শিশু বেশি রোগে আক্রান্ত হয়। এছাড়া এই শিশুরা অধিক হারে ইনফেকশনে আক্রান্ত হবে। গর্ভাবস্থায় শিশুর পুষ্টির অভাবে মস্তিষ্ক ঠিকমতো গঠন না হওয়ায় বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ঠিকমতো হয় না। পুষ্টিকর খাবারের অভাবে মায়ের রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। গর্ভাবস্থায় মাকে তাই স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি ফলমূল, শাকসবজি বেশি বেশি করে খেতে হবে। প্রচুর পানি পান করতে হবে ।
জাতীয় সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও রূপকল্প ২০২১-এর আলোকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রণীত পাঁচ বছর মেয়াদি ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি কর্মসূচি ২০১৭-২০২২’-এর বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এ কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন হলে দেশের সার্বিক স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে। ২০৩০ সালের মধ্যে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা’র স্বাস্থ্যবিষয়ক সূচকগুলো অর্জনে এ উন্নয়ন কর্মসূচি বিরাট ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশে এখন প্রায় ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক, ১০৭টি মেডিকেল কলেজ, ৫ হাজার ১৮২টি বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক, প্রায় ১০ হাজার ৪০০ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বিশেষায়িত হাসপাতাল ও অন্যান্য হাসপাতাল ৪৬টি, ৪২৮টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ৫ লক্ষাধিক স্বাস্থ্যসেবা দানকারী দেশের সব প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত যা, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতকে একটি মজবুত ও টেকসই কাঠামোর ওপর দৃঢ়ভাবে স্থাপন করেছে। বর্তমান সরকারের এ সাফল্যকে টেকসই করার জন্য আমাদের প্রত্যেককেই এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
- হেঁচকি কেন উঠে আর থামাবেন কীভাবে?
- নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে ইলিয়াস কাঞ্চনের ৩ প্রস্তাব
- সব রেকর্ড ভেঙে চুরমার, আইপিএলের সবচেয়ে দামি এখন পান্ত
- পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দ
- দীর্ঘ ১৬ বছর পর বাবাকে খুঁজে পেলেন মার্কিন নারী
- নির্বাচনের তারিখ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা, অন্যদের কথা ব্যক্তিগত
- বাংলাদেশসহ যে ১২৪ দেশে পা রাখলেই গ্রেপ্তার নেতানিয়াহু
- পরীমণির প্রথম স্বামীর মৃত্যু, কে এই ইসমাইল?
- ছেলের কাজের ঘোষণায় বাবা
- স্বাস্থ্য-বিষয়ক যেসব প্রচলিত তথ্যের কোনো ভিত্তি নেই
- কুমিল্লায় ‘যুদ্ধসমাধিতে’ মিলল ২৩ জাপানি সেনার দেহাবশেষ
- রাহুলের বিতর্কিত আউট নিয়ে প্রশ্ন আর সমালোচনার ঝড়
- প্রথম মিলেনিয়াল সাধু হতে যাচ্ছেন প্রয়াত ‘গড’স ইনফ্লুয়েন্সার’
- বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
- মোহিনীর জন্যই কি সায়রাকে ছাড়লেন এ আর রহমান? মুখ খুললেন আইনজীবী
- কবে বাংলাদেশের জার্সিতে দেখা যাবে, জানালেন সাকিব
- ঘর আর অফিস ম্যানেজ করবেন যেভাবে
- দায়িত্ব নিলেন আইজিপি বাহারুল আলম ও ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাত আলী
- শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
- রাজনৈতিক চাওয়া ও কূটনৈতিক চেষ্টা আ.লীগের জন্য কী অর্থ বহন করছে
- প্রথমবার সচিবালয়ে গেলেন প্রধান উপদেষ্টা
- ডায়াবেটিস কেন হয়, কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়?
- এ আর রহমানের বিচ্ছেদ, যা বললেন স্ত্রী ও সন্তান
- বিশ্বকাপ বাছাই: পয়েন্ট টেবিলে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ কোন দল কোথায়
- শীতের সকালে আদা ও তুলসী পাতা খেলে কী হয়?
- পর্তুগালকে রুখে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়া, শেষ মুহূর্তে
- ফের প্রেমে পড়েছেন পরীমনি
- শেখ হাসিনা পালিয়েছেন জানার পর যে অনুভূতি হয়েছিল, জানালেন ড. ইউনূস
- আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
- সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম রিমান্ডে
- শীতের সকালে আদা ও তুলসী পাতা খেলে কী হয়?
- শেখ হাসিনার নতুন অডিও ফাঁস, নেতাকর্মীদের যে নির্দেশনা দিলেন
- বাংলাদেশসহ যে ১২৪ দেশে পা রাখলেই গ্রেপ্তার নেতানিয়াহু
- যুগান্তকারী উদ্ভাবন, ন্যানো রোবটে জব্দ হবে ক্যানসার!
- রাজনৈতিক চাওয়া ও কূটনৈতিক চেষ্টা আ.লীগের জন্য কী অর্থ বহন করছে
- সালমান শাহর নায়িকার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যে কারণে ফ্রিজ হলো
- ফের প্রেমে পড়েছেন পরীমনি
- প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে বিএনপি আশাহত: মির্জা ফখরুল
- রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়লো
- শাস্তির মুখে পড়তে পারেন মেসি, হতে পারেন নিষিদ্ধও
- মণিপুরে বিক্ষোভকারী নিহত: বিজেপি-কংগ্রেস অফিসে আগুন
- বিশ্বকাপ বাছাই: পয়েন্ট টেবিলে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ কোন দল কোথায়
- বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
- সংস্কারের জন্য নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে
- এ আর রহমানের বিচ্ছেদ, যা বললেন স্ত্রী ও সন্তান
- ঘর আর অফিস ম্যানেজ করবেন যেভাবে
- আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
- কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে না : গভর্নর
- শেখ হাসিনা পালিয়েছেন জানার পর যে অনুভূতি হয়েছিল, জানালেন ড. ইউনূস
- ডায়াবেটিস কেন হয়, কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়?