ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর বুধবার, ২০২৪ || ৪ পৌষ ১৪৩১
good-food
২৫

ইংল্যান্ডে নিষিদ্ধ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কি বল করতে পারবেন সাকিব?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০২:২৯ ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪  

খারাপ সময়ে নাকি সব কিছুই খারাপ যায়। এই মুহূর্তে সাকিব আল হাসানের চেয়ে এই কথা আর কেই বা ভালো উপলব্ধি করতে পারবে। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বহুবার মন্দ সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে সাকিবকে। আবার ঘুরেও দাঁড়িয়েছেন। তাই বলে এতটা বাজে সময় কখনোই কি দেখতে হয়েছে সাকিবকে?

 

রাজনৈতিক কারণে দেশে আসার সুযোগ পাচ্ছেন না সাকিব। যে কারণে দেশের হয়ে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট দেশের মাটিতে খেলার সুযোগ পাননি। দুই ফরম্যাটকে বিদায় বলা সাকিব ওয়ানডেতে যে ফিরতে পারবেন সেই সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না আপাতত। বলতে গেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারটা শেষ-ই হয়ে গেছে সাকিবের। বাকি ছিল ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট। সেখানেও এবার নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হয়েছে তাকে।

 

গতকাল সাকিব জানতে পেরেছেন, ইংল্যান্ডে আর কোনো ধরণের ক্রিকেটে বোলিং করতে পারবেন না তিনি। সবশেষ কাউন্টিতে সারের হয়ে বোলিং করার সময় সাকিবের বোলিংয়ে ত্রুটি পেয়েছে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। যে কারণে সাকিবের বোলিংয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

 

সাকিব বরাবরই বলতেন বোলিংটা তার সহজাত। ব্যাটিংয়ে যেটুকু উন্নতি তা তার চেষ্টার ফল। যদিও ব্যাট হাতে সম্প্রতি খুব একটা প্রভাব রাখতে পারছেন না তিনি। বাকি ছিল সহজাত বোলিংটা। সেই বোলিংয়েই এবার নেমে আসল নিষেধাজ্ঞার অন্ধকার। নতুন করে পরীক্ষায় পাস না করলে ইংল্যান্ডে আর বোলিং করতে পারবেন না সাকিব।

 

এখন প্রশ্ন হলো- দেশের হয়ে ওয়ানডেতে সুযোগ পেলে, বিপিএলে কিংবা অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিতে সুযোগ পেলে সেখানে কি বোলিং করতে পারবেন সাকিব? ইসিবির এই নিষেধাজ্ঞা কি আমলে নেবে আইসিসি কিংবা অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি বা বোর্ড?

 

এ ব্যাপারে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির সন্দেহজনক ও ত্রুটিপূর্ণ বোলিং নিয়ে নীতি হলো- ১১.৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘একটি জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশন যদি একজন বোলারকে তাদের নিজস্ব নীতিমালার অধীনে ঘরোয়া ক্রিকেটে বোলিং নিষিদ্ধ করে এবং সেই নিষেধাজ্ঞা যদি স্বীকৃত পরীক্ষাগারে মানসম্মত বিশ্লেষণী বিধি অনুযায়ী করা হয়, তাহলে সেই নিষেধাজ্ঞাকে আইসিসি আমলে নেবে এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আরোপ করবে।’

 

শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই নয়, অন্যান্য ঘরোয়া টুর্নামেন্টের ক্ষেত্রে কী হবে সেটাও বলা আছে একই অনুচ্ছেদে, ‘অতিরিক্ত কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া সব জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশন এবং তাদের অধীনস্থ ঘরোয়া ক্রিকেটেও একই নোটিশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে। আইসিসি এবং জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশনগুলো সিদ্ধান্ত আরোপ ও কার্যকরের জন্য সব পদক্ষেপ বিধিসম্মতভাবে নেবে।’

 

অর্থাৎ এই দুই অনুচ্ছেদে পরিষ্কার, সাকিবের বোলিংয়ে দেওয়া ইসিবির এই নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় প্রযোজ্য হবে। সহজ কথায় বল করতে পারবেন না সাকিব।

 

তবে অপর আরেকটি নীতিমালার ১১.৪ অনুচ্ছেদ বলা আছে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে সাকিবের বোলিং নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার রাখে। এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘১১.১ ও ১১.৩ অনুচ্ছেদ অনুসারে সাসপেন্ড হওয়া সত্ত্বেও খেলোয়াড়কে তার জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশন ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় বোলিং চালিয়ে যেতে অনুমতি দিতে পারবে (তবে কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না)।’ 

 

অর্থাৎ বিসিবি চাইলে সাকিবের বিপিএল বা ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে কোনো বাধা নেই। যদিও ক্যারিয়ারের শেষ দিকে থাকা সাকিব আর দেশের মাটিতে খেলার সুযোগ পাবেন কিনা তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। আর তাছাড়া বিসিবি বাদে বাকিরা ইসিবির দেওয়া সাকিবের বোলিং নিষেধাজ্ঞা মানতে বাধ্য। যে কারণে হয়তো আগামীতে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও আর দেখা যেতে না পারে অলরাউন্ডার সাকিবকে।

 

কেননা, নিয়মানুযায়ী বল ডেলিভারির সময় বোলারের কনুই ১৫ ডিগ্রির বেশি বাঁকা হতে পারে না। সাকিবের কনুই অনুমোদিত সীমার চেয়ে বেশি বেঁকেছে বলেই এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তাকে। তবে নতুন করে পরীক্ষা দিয়ে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সুযোগ থাকছে সাকিবের সামনে। এখন দেখার বিষয় গোধূলী লগ্নে সাকিব সেই চ্যালেঞ্জ নেন কিনা।

খেলাধুলা বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর