ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর বুধবার, ২০২৪ || ৪ পৌষ ১৪৩১
good-food
১০

এক গ্লাস গরম দুধে দুটি খেজুর! মিলবে যত উপকার

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০২:২৬ ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪  

গা গরম রাখতে গরম দুধের সঙ্গে খেজুর খাওয়ার চল বহু পুরনো। এছাড়াও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক কাপ বা এক গ্লাস গরম দুধে দুটো খেজুর দিয়ে খেতে পারেন। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে দৃষ্টিশক্তি হবে সব সমস্যার সমাধান। যা শরীরকে সবল ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। দুধ তো প্রোটিনে ভরপুর আর খেজুরে রয়েছে প্রাকৃতিক শর্করা।

 

এই দু’টি উপাদান একসঙ্গে মিশে তৈরি হয় দারুণ এক শক্তিবর্ধক পানীয়। ফলে শরীরচর্চা করার পরে খুব ক্লান্ত লাগলেও এই পানীয়ে চুমুক দেয়া যায়। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, রাতে শোয়ার আগে এই পানীয় খেলে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হয়ে ওঠে। এক গ্লাস গরম দুধে দুটি খেজুর খেলে যেসব রোগ থেকে মুক্তি মিলবে: 

 

 

১. খেজুরে সহজপাচ্য ফাইবারের পরিমাণ বেশি। তাই নিয়মিত গরম দুধের সঙ্গে খেজুর খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়, অন্ত্র ভাল থাকে।

২. গরম দুধের সঙ্গে খেজুর খেলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক ভাবে বাড়িয়ে তোলা সম্ভব। দুধ ও খেজুর- উভয়েই রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রনের মাত্রা। এই দুইয়ে মিশেলে আয়রনের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পায়। যা রক্তে হিমোগ্লোবিন ও প্রোটিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। একটি গবেষণায় জানা গেছে, দুধের মধ্যে দুটি করে খেজুর দিয়ে ফোটানো হলে, সেই উপাদেয় খাবারটি সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর বলে মানা হয়। প্রতিদিন সকালে, খালি পেটে একটি নির্দিষ্ট সময়ে এই উপকারী পানীয় খেতে পারেন। 

 

৩. দুধ এবং খেজুর— দুইয়ের মধ্যেই ক্যালশিয়াম রয়েছে ভরপুর মাত্রায়। হাড়ের ঘনত্ব বাড়িয়ে তুলতে এই খনিজটি বিশেষভাবে প্রয়োজন। এ ছাড়াও খেজুরে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম। যা ক্যালশিয়াম শোষণে সাহায্য করে। নিয়ম করে খেলে অস্টিয়োপোরোসিসের মতো রোগ বশে থাকে।

৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে দুধ, খেজুরের মিশ্রণ। আয়রন, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬। এই সমস্ত উপাদান রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করতে সাহায্য করে। ফলে সংক্রমণজনিত সর্দিকাশি ঠেকিয়ে রাখতে পারে এই পানীয়।

 

৫. অনিদ্রাজনিত সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে দুধ-খেজুরের মিশ্রণ। দুধে রয়েছে ‘ট্রিপটোফ্যান’ নামক উপাদান, যা ঘুমের সঙ্গে জড়িত হরমোনের সমতা বজায় রাখে। খেজুরে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম, যা স্নায়ুর উত্তেজনা বজায় রাখতে পারে। ফলে নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের পথ্য হতে পারে এই পানীয়।

৬. প্রেগন্যান্সিতে গরম দুধের সঙ্গে খেজুর খাওয়া দারুণ উপকারী। রিসার্চ বলছে, গরুর দুধে দুটি খেজুর ফেলে দিলে সেই দুধ আরো পুষ্টিকর হয়। কারণ এই বিশেষ দুধ অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। নিয়মিত খেজুর ও দুধের মিশেলে তৈরি প্রোটিন শেক রক্তের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে ও হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করে।

 

৭. ত্বকের জন্য বিশেষ ফেসপ্যাক- সারারাত দুধের মধ্যে খেজুর ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে ঘন পেস্টে মধু মিশিয়ে মুখের ত্বকে ব্য়বহার করতে পারেন। ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে স্বাভাবিক জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সুস্থ ও উজ্জ্বল ত্বক পেতে এই স্বাস্থ্যকর ফেসপ্যাক সপ্তাহে একবার করে ব্যবহার করতে পারেন। দু সপ্তাহ পর ফল মিলবে। দুধ এবং খেজুর ত্বক আর চুলের জন্য খুব উপকারী। ত্বকের দাগ ছোপ দূর করে। যাদের অতিরিক্ত চুল পড়ছে তারাও একবার খেয়ে দেখতে পারেন এই খেজুর দুধ।

 

৮. চোখের সমস্যায়- দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতেও এই খেজুর দুধ খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিত্‍সকরা। এছাড়াও চোখে অঞ্জনির সমস্যায়, যারা একটানা কম্পিউটারের সামনে কাজ করেন তাদেরও খেজুর দুধ খেতে বলছেন চিকিত্‍সকরা।

৯. ত্বকের রিঙ্কেলস থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে- খেজুর ও দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা ত্বকের আগাম বার্ধক্য়জনিত লক্ষণগুলো দূরে ঠেলে দেয়, চুলকানি বা প্রদাহ দূর করতে সাহায্য় করে। অ্য়ান্টিএজিংয়ের উপাদান রয়েছে এই উপকারী দুধে। ত্বকের জন্য়ও খেজুর ও দুধের মিশ্রণ অত্যন্ত কার্যকরী।