ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৩৪১

এসব ওষুধ কী বাড়িতে রাখছেন, বিপদ ডেকে আনছেন?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১২:১৯ ৬ মার্চ ২০২১  

ওমিপ্রাজোল গোত্রের ওষুধের ওপর আমরা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। যখনই পেটে কোনোরকম অস্বস্তি লাগে, তখনই গ্যাস-অম্বলের এই ওষুধ খেয়ে নেই। এই হার সবরকম মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এর কারণও রয়েছে। ওষুধটি অ্যাসিড বেরনোর পথ আটকে দেয়। ফলে আরাম পাওয়া যায়। কিন্তু এর অতিরিক্ত ব্যবহারের কুফলও রয়েছে।

 

ওমিপ্রাজোল গোত্রের ওষুধ ব্যবহারের হার গ্রাম থেকে শহরে বেশি। বিজ্ঞানীদের মতে, স্ট্রেস কম থাকা, কায়িক শ্রম করা ও ওজন কম থাকার কারণে গ্রামের মানুষের গ্যাস্ট্রিক শহুরে মানুষদের তুলনায় কম হয়। শহুরে মানুষও যদি জীবনযাপনের কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন, তাহলে ওষুধের প্রয়োজনও অনেকটাই কমে যাবে।

 

গ্যাস-অম্বলের সমস্যায় আমরা খুঁজি চটজলদি সমাধান। ফলে এই জাতীয় ওষুধের অপব্যবহার শুরু হয়েছে। এর মাশুল গুনতে হচ্ছে আমাদের। শরীরে এর প্রভাবে নানা ক্ষতি হতে পারে বলে শঙ্কা চিকিৎসকদের।

 

কোন কোন ক্ষেত্রে এই ওষুধের অপব্যবহার হচ্ছে জেনে নেই-
* ব্যথার ওষুধে অম্বল হলেও ভরা পেটে দু'চার দিন খেলে কোনও সমস্যা হয় না। কিন্তু ব্যথার ওষুধের সঙ্গে গ্যাস্ট্রিক-অম্বলের ওষুধ খাওয়া এখন স্বভাবে দাঁড়িয়েছে। গ্যাস-অম্বলের প্রবণতা না থাকলে এই ওষুধ খাওয়া একেবারেই অপ্রয়োজনীয়।

 

* হঠাৎ অম্বলে সবচেয়ে ভালো কাজ করে লিকুইড জাতীয় ওষুধ। কিন্তু মানুষ খায় ট্যাবলেট-ক্যাপসুল। সেটি যতক্ষণে কাজ শুরু করে, ততক্ষণে পানিটানি খেলে এমনিতেই অ্যাসিডিটি কমে যায়।

 

* অধিকাংশ অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে এই ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। তবুও বাড়তি সতর্কতায় আমরা এটা খেয়ে থাকি। কখনও কখনও চিকিৎসকরাও রোগীকে মানসিক আরাম দিতে এই ওষুধ দিয়ে থাকেন।

 

* গ্যাস-বদহজমের সঙ্গে অম্বল না থাকলে এর দরকার নেই। তাও ওষুধটি খাওয়ার চল হয়ে গেছে।

* আলসার বা রিফ্লাক্স কমাতে ৬-৮ সপ্তাহ ওমিপ্রাজোল গোত্রের ওষুধ খাওয়ার নিয়ম। কিন্তু শুরু করার পর অনেকেই বছরের পর বছর খেয়ে যান। কখনও খান জীবনভর।


* জীবনযাপনের অনিয়ম, খাবারে অনিয়ম, স্ট্রেস ইত্যাদি কারণে অনেকের অম্বল লেগে থাকে। তারা মূল সমস্যার সমাধান না করে এই ওষুধে নির্ভরশীল হয়ে যান।

 

গ্যাস্ট্রিক-অম্বলের ওষুধের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে কি কি কুফল দেখা দিতে পারে তা জানা যাক-
* এই ওষুধ বেশি পরিমাণে খেলে অপুষ্টি, রক্তাল্পতা, ভিটামিন বি১২-র ঘাটতি হতে পারে।
* কম বয়সে ডিমেনসিয়া বা চিন্তাভাবনার অসঙ্গতির সমস্যা দেখা দিচ্ছে আজকাল।

 

 

* প্রকোপ বাড়ে অস্টিওপোরোসিস, ব্যথা-বেদনা ও হাড়গোড় ভাঙারও।

* নিয়মিত খেলে পাকস্থলীতে অ্যাসিডের পরিমাণ কমে ক্ষতিকর জীবাণু সৃষ্টি হতে পারে। ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ে। শয্যাশায়ী বয়স্ক মানুষের নিউমোনিয়ার আশঙ্কা বাড়ে।

 

তাই গ্যাস্ট্রিক-অম্বলের ওষুধ বুঝেশুনে খাওয়া উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শের বাইরে এটি গ্রহণ না করাই ভালো।