ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর বুধবার, ২০২৪ || ৪ পৌষ ১৪৩১
good-food
২০

ওবায়দুল কাদেরের আশ্রয়-প্রশ্রয়,দেশত্যাগ নিয়ে তুলকালাম, যে যা বলছেন

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০২:০৮ ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪  

সাবেক সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মতো হেভিওয়েট নেতা কীভাবে এতদিন দেশেই আত্মগোপনে ছিলেন, কারা তাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন, তা নিয়ে তুলকালাম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও তিন মাস ওবায়দুল কাদের দেশেই আত্মগোপনে ছিলেন। গত ৮ নভেম্বর ওবায়দুল কাদের দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। সড়কপথে সিলেট হয়ে ভারতের মেঘালয়ের শিলং পৌঁছান এবং সেখান থেকে কলকাতায় চলে যান। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন।

 

সূত্রের খবর, প্রায় তিন মাস প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়াতেই ছিলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি নিরাপদে ও বেশ আরাম-আয়েশেই ছিলেন। সবুজ সংকেত পেয়ে তিনি দেশ ছেড়ে পালাতে সক্ষম হন। তার এই নিরাপদে দেশ ছাড়ার ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশের হাত থাকতে পারে বলে গুঞ্জন রয়েছে। যদিও সূত্রের খবর, এ ব্যাপারে ভারতে থাকা শেখ হাসিনার কোনো সুপারিশ ছিল না। কারণ, তিনি ওবায়দুল কাদেরের ওপর অনেকটা ক্ষুব্ধ ছিলেন।

 

এদিকে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ওবায়দুল কাদের কীভাবে দেশ ছাড়লেন সে সম্পর্কে সরকারকে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ রাজনৈতিক অঙ্গনে বিষয়টি নিয়ে তুমুল সমালোচনা হচ্ছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওবায়দুল কাদের এতোদিন দেশে ছিলেন সে সম্পর্কে সরকারের কাছে কোনো তথ্য ছিল না। সরকার জানতে পারলে তাকে গ্রেপ্তার করতো। ওবায়দুল কাদের কীভাবে দেশ ছেড়েছেন, তা জানতে চেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

 

পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘আমরা আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি, ওবায়দুল কাদের গত তিন মাস বাংলাদেশে ছিলেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর তিনি কোথায় ছিলেন, কীভাবে তিনি গ্রেপ্তার হননি এবং পরবর্তী সময়ে তিনি কীভাবে বাংলাদেশ ছেড়েছেন- এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, ১৫ দিনের মধ্যে এই ব্যাখ্যা দেয়া হোক।’

 

এই ব্যাপারে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ওবায়দুল কাদেরের দেশে থাকার বিষয়টি সরকার জানত না। জানলে তাকে গ্রেপ্তার করা হতো। এর আগে গত ১৯ অক্টোবর রাজশাহীর বিজিবি সদর দফতর পরিদর্শনের সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের খোঁজ দিতে পারলে সাংবাদিকদের পুরস্কৃত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সে সময় সাংবাদিকরা ওবায়দুল কাদেরের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। কিন্তু আপনারা তো অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করেন। যদি আমাকে ওবায়দুল কাদের কোথায় আছেন তা জানাতে পারেন, আমি আপনাদের একটি পুরস্কার দেবো। আপনারা আমাদের অনেক তথ্য দিতে পারেন।’

 

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের তিন মাস কোথাও লুকিয়ে থেকে দেশ ছেড়েছেন- এমন কোনো প্রমাণ সরকারের হাতে নেই। প্রেস সচিব বলেন, ৫ আগস্টের পরে দেশে তিন দিন সরকার ছিল না। এক সপ্তাহ দেশে পুলিশ ছিল না। এ পরিস্থিতিতে অনেক কিছুই হয়েছে। দেশের সাধারণ মানুষ নিজেদের নিরাপত্তা দিয়েছে, ছাত্ররা রাস্তায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করেছেন। তবে এতটুকু বলতে পারি, এ সরকারের দৃষ্টিতে যা ধরা পড়ছে তাই করছে।