ঢাকা, ২৩ নভেম্বর শনিবার, ২০২৪ || ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
১৮৩

ওষুধে লুকিয়ে থাকে হুমকি

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০০:৪৩ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২  

অসুখ হলে চিকিৎসকের কাছে যান। উনি ওষুধ দেন। সেবন করে সুস্থ হন। এটিই হলো নিয়ম। কিন্তু এই ওষুধের মাঝেও নানা হুমকি লুকিয়ে থাকে। হার্ভার্ড সংশ্লিষ্ট বস্টনের ‘ব্রিগহাল অ্যান্ড উইমেন’স হসপিটালসের ‘চিফ অব ফার্মেসি সার্ভিসেস’ উইলিয়াম চার্চিল বলেন, প্রতি মানুষের রোগ ও চিকিৎসা পরিস্থিতি আলাদা। ফলে একজন  যে ওষুধ সেবন করে উপকার পান, আরেকজনের কাছে তা অকেজো। এমনকি ক্ষতিকরও।

 

মাউথওয়াশ

মার্কিন দন্ত চিকিৎসক মার্ক বার্হেন বলেন, অ্যালকোহলযুক্ত মাউথওয়াশ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এই উপাদান মুখের ভেতরের সব ক্ষতিকর ও উপকারী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। এতে নিঃশ্বাস সতেজ হয়। কিন্তু ক্ষতিও হয়।

 

বিষয়টা বিনা প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের মতো। তাতে অন্ত্রের সব ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে। নানা রোগ আক্রমণ করে। একইভাবে মাউথওয়াশের অতিরিক্ত ব্যবহার মুখের ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট করে।  ফলে ‘ক্যাভিটিস’, ‘জিনজিভাইটিস’ ও মুখের দুর্গন্ধ হয়।


ওপিওয়েডস ওষুধ

ইউএস মায়ো ক্লিনিকের ‘ডক্টর অব ফার্মেসি’ ক্যারি ক্রিগার বলেন, ব্যথা দূর করতে যে বিষয়টি এই ধরনের ওষুধকে বেশি কার্যকর করে, সেটিই আবার একে বিপজ্জনক করে তোলে। পরিমিত মাত্রায় এই ওষুধ শরীরের ইন্দ্রিয়কে ভোঁতা করে দেয়। এভাবে ব্যথার অনুভুতি কমায় এবং ঘুম পাড়ায়। কিন্তু অতিমাত্রায় গ্রহণ করলে শ্বাসপ্রশ্বাস ও হৃদস্পন্দনের গতি কমে। ফলে মৃত্যু হতে পারে।

 

ওষুধ সেবনের পর যে সুখকর ও আরামের অনুভূতি তৈরি হয়, সেজন্য মানুষ তা বারবার খেতে চায়। আর একসময় আসক্তিতে পরিণত হয়। তাই চিকিৎসক যতটুকু সেবন করতে বলেন, ততটুকুতেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত। সেই সঙ্গে ডাক্তারকেও জানাতে হবে অন্য কী কী ওষুধ সেবন করছেন।

 

আঙুর

যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ ক্যাথরিন জেরাতস্কি বলেন, আঙুরের মতো ফল অনেক ওষুধের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করে। একে সামান্য বলে সবসময় উড়িয়ে দেয়া যায় না। সমস্যা তখনই তৈরি হয়, যখন এই ফলে থাকা জৈব রাসায়নিক উপাদান এনজাইমে সঙ্গে বিক্রিয়া করে, যেগুলো ওষুধের বিপাকক্রিয়ার জন্য জরুরি।

 

নতুন উপাদান সম্পর্কে সাবধান

ক্যামব্রিজ হেল্থ অ্যালায়েন্সের ‘ইন্টার্নিস্ট’ এবং হার্ভার্ড মেডিকাল স্কুলের সহকারী অধ্যাপক পিটার কোহেন বলেন, বাজারে প্রতিদিন নিত্যনতুন সাপ্লিমেন্ট আসছে। এতে থাকে অপরিক্ষিত বিভিন্ন উপাদান। সেগুলো কত বিপজ্জনক বা নিরাপদ তা জানি না।

 

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে এই নতুন উপাদানের মাত্রা বেড়েছে। এগুলো কতটুকু বৈধ, তা নিয়ে না করে আগে  চিন্তা করতে হয় শরীরের জন্য নিরাপদ কি-না। আর এগুলো ওষুধের দোকানে কিংবা ইন্টারনেটে সহজলভ্য হওয়ার আগেই ‘ফেডারেল ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ এগুলো পরীক্ষা করতে পারছে না বলে এদের প্রতিক্রিয়া কী,  তাও ধারণা করা যায় না।


ফার্মেসি থেকে চিকিৎসা নেয়া

সাধারণ রোগের জন্য চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে সেবনের অভ্যাস প্রায় সবারই আছে। যার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ব্যথানাশক ওষুধ বেশি থাকে। তবে মনে রাখা উচিত এগুলো খেলনা নয়। অতিমাত্রায় বা ভুলভালভাবে সেবন করলে এগুলো থেকেও বড় ধরনের বিপদ হতে পারে। দেখা দিতে পারে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগের ‍ঝুঁকি, হাঁপানি সমস্যা বাড়ানো ও নানান জটিল সংক্রমণ।