ঢাকা, ১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার, ২০২৫ || ৩ মাঘ ১৪৩১
good-food
১০৩৮

ওহুদের যুদ্ধ : রণকৌশল ও নৈতিকতার মহান শিক্ষা 

মেজর ডা. খোশরোজ সামাদ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৮:২৪ ৩০ আগস্ট ২০১৯  

১. আমরা জানি যে, হজরত মোহাম্মদ (সা:) নিজ জন্মস্থান মক্কায় প্রাথমিকভাবে সন্মানিত না হলেও মদিনাবাসী তাঁকে প্রবলভাবে মমতা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন। বদরের যুদ্ধে ব্যপক পরাজয়ের গ্লানি মক্কাবাসীদের প্রতিহিংসায় উন্মত্ত করে তোলে।

২. প্রায় তিনগুন সৈন্য ও যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে মক্কাবাসীরা মদিনা আক্রমনের চেষ্টা করলে মোহাম্মদ ( সা.) এর নির্দেশনায় ওহুদ পর্বতের কাছে মুসলিম বাহিনী জমায়েত হন। রুমা নামক ছোট একটি পর্বতের ওপরে প্রায় ৫০ জন তীরন্দাজ অবস্থান গ্রহণ করেন। মক্কাবাসী কাছে এলে তীরের ঘায়ে তাদের হতাহত করাই তাঁদের দায়িত্ব ছিল।

৩. যুদ্ধের শুরুতেই মুসলিম বাহিনী আক্রমনকারীদের প্রায় পর্যুদস্ত করে তোলেন। নেতার নির্দেশ উপেক্ষা করে তীরন্দাজ বাহিনী পাহাড় থেকে নেমে ' গণিয়তের মাল ' সংগ্রহ করতে থাকেন। এই সুযোগে খালিদ বিন ওয়ালিদ তাঁর দল নিয়ে পেছন দিক থেকে আকস্মিকভাবে আক্রমন করে প্রায় ৬০ জন মুসলমানকে হত্যা করে। মোহাম্মদ (সা.) নিজে আহত হন। প্রায় তাঁর মত দেখতে এক সাহাবার মৃত্যু হলে মিথ্যে প্রপাগাণ্ডা ছড়িয়ে দেয়া হয় যে তিনি মারা গেছেন। ফলে প্রায় জিতে যাওয়া যুদ্ধের ফলাফল আপাতভাবে বদলে যায় এবং মুসলিম বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতি আশংকার চেয়ে বেশী হয়।

৪. এ কথা বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, যেহেতু মক্কাবাহিনী মদিনা জয় করতে এসেছিল, সেই লক্ষ্য পূরণ না করতে পেরে নিজগৃহে ফিরে যাওয়াকে সামগ্রিকভাবে পরাজয় হিসেবেই ধরা হয়। এছাড়া, সেই সময়ের সমরনীতি অনুযায়ী বিজয়ী দল জয়কৃত এলাকায় অন্তত তিনদিন অবস্থানের রীতিও মক্কাবাসীরা করতে ব্যর্থ হওয়ায় এ যুদ্ধে মুসলমানদেরই জয় হয়েছে বলে বিবেচনা করা হয়।

৪. শুধু ইসলামের ইতিহাসেই নয়, প্রায় সারা পৃথিবীতে সমরবিদ্যার ইতিহাসে সামরিক বাহিনীকে আজও ওহুদের যুদ্ধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে পড়ানো হয়।  'নেতার নির্দেশ অমান্য করে  Chain of Command  ভংগ করলে প্রত্যাশিত ফলাফল শত্রুর কবজায় চলে যেতে পারে বা আশংকার অতিরিক্ত ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে ' এটি এই যুদ্ধের অন্যতম রণকৌশলগত এবং নৈতিকতার অন্যতম প্রধান শিক্ষা।

 

 

ধর্ম বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর