ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৪৩৯

কক্সবাজার টু ভাসানচর: নতুন ঠিকানায় রোহিঙ্গারা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৯:১৬ ৪ ডিসেম্বর ২০২০  

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা বোট ক্লাব থেকে ভাসানচরে পৌঁছেছে রোহিঙ্গাদের প্রথম দল। এই দলে রয়েছে মোট ১৬৪২ জন। নৌবাহিনীর মোট আটটি জাহাজে করে মালামালসহ সেখানে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

 

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ১৬৪২ রোহিঙ্গাকে নিয়ে ভাসানচরের উদ্দেশে সাতটি জাহাজ রওনা দেয়। এই সপ্তাহে আরও সাড়ে ৩ হাজার রোহিঙ্গাকে পতেঙ্গা হয়ে সেখানে পাঠানো হবে। ১ সপ্তাহের মধ্যে এই স্থানান্তর কাজ সম্পন্ন হবে।

 

নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমকেজেড শামীম জানিয়েছেন, এদিন সকাল সোয়া ১০টার পর চট্টগ্রাম বোট ক্লাব জেটি থেকে তিনটি, আরআরবি জেটি থেকে দুটি ও কোস্টগার্ড জেটি থেকে সেনাবাহিনীর একটি জাহাজ করে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়। দুপুর ২টার পর জাহাজগুলো ভাষানচরে নোঙর ফেলেছে। এছাড়া দুটি জাহাজে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাদের মালামাল।

 

এর আগে বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গাদের বহনকারী ৩৯টি বাস কক্সবাজারের উখিয়া কলেজের মাঠ থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা করে। ১৬৩৫ রোহিঙ্গা নারী, শিশু ও পুরুষ রাতে সেখানে পৌঁছায়। পতেঙ্গা বিএএফ শাহীন কলেজ মাঠ ও বোট ক্লাব এবং এর আশপাশের এলাকায় অস্থায়ী ট্রানজিট শিবিরে তাদের রাখা হয়।

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, পর্যায়ক্রমে ১ লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার নেওয়া হবে সেখানে। তাদের এই দল থাকবে ভাসানচরের অত্যাধুনিক আবাসন প্রকল্পে। এরই মধ্যে সেখানে মজুদ করা হয়েছে তিন মাসের খাদ্যপণ্য। প্রথমদিকে রোহিঙ্গাদের রান্না করা খাবার সরবরাহ করবে বেসরকারি সংস্থাগুলো। এজন্য ২২টি এনজিওর প্রতিনিধিরা কাজ শুরু করেছে।

 

সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারপারসন জেসমিন প্রেমা জানান, শুধু আগ্রহী রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেওয়ার কাজ করছে সরকার এবং ২২টি উন্নয়ন সংস্থা। এসব রোহিঙ্গাকে জাহাজে ওঠার পূর্বে বিভিন্ন ডাটা এন্ট্রি সাপেক্ষে বরাদ্দকৃত আশ্রয়নের টোকেন ও চাবি হস্তান্তর করা হয়। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য আধুনিক বাসস্থান ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক ও খেলার মাঠ গড়ে তোলা হয়েছে।

 

সরকারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সামছুদ্দৌজা বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য সেখানে মহিষ, ভেড়া, হাঁস, কবুতর পালন করা হচ্ছে। আবাদ করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি। পরীক্ষামূলকভাবে ধান চাষও করা হচ্ছে। প্রকল্পটিতে যেন ১ লাখ ১ হাজার ৩৬০ শরণার্থী বসবাস করতে পারেন সেই লক্ষ্যে গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করা হয়েছে। ১২০টি গুচ্ছগ্রামে ঘরের সংখ্যা ১ হাজার ৪৪০টি।

 

তিনি বলেন, সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে ১ লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

 

এর আগে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা ৩ শতাধিক রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে ভাসানচরে নিয়ে রাখা হয়েছিল। এরপর গত ৫ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি দলকে দেখার জন্য ভাসানচরে পাঠানো হয়। তারা ফেরার পর তাদের কথা শুনে রোহিঙ্গাদের একাংশ ভাসানচরে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করে বলে জানান মোহাম্মদ সামছুদ্দৌজা।

বাংলাদেশ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর