ঢাকা, ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার, ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৪০৩

কণ্ঠরাজ এন্ড্রু কিশোর আছেন হৃদয়ে

ওয়ালিউর রহমান বাবু 

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:১২ ৬ জুলাই ২০২১  

সঙ্গীত অঙ্গনের উজ্জ্বল নক্ষত্র ‘কন্ঠরাজ’ এন্ড্রু কিশোরের আজ (৬ জুলাই মঙ্গলবার) প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। গত বছর এই দিনে তিনি অসুস্থ অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে যান। তার ছোট বেলা, কৈশোর, শিক্ষা জীবন কেটেছে রাজশাহী বেতার কেন্দ্রের পশ্চিমে রাজশাহী খ্রিস্টান মিশন হাসপাতাল কোয়ার্টারে। 


সঙ্গীত সম্পৃক্ত পরিবারে তার বেড়ে ওঠা। তালিম নেন সঙ্গীত দিক পাল ওস্তাদ আব্দুল আজিজ বাচ্চুর কাছে সুরবানী সঙ্গীত বিদ্যালয়ে। সান্নিধ্য পান অন্যান্য ওস্তাদদের। 


পড়াশোনার পাশাপাশি সঙ্গীত চর্চাকালীন স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হলে বড়দের সঙ্গে তিনিও রাজশাহীর সবাইকে উজ্জীবিত করতে ভূমিকা রাখতে থাকলেন। ঢাকা থেকে আসা পাকিস্তানী সৈন্যদের আক্রমণে রাজশাহী জেলা সদরের প্রতিরোধ ভেঙে গেলে পারিবারের সঙ্গে সীমান্ত পার হয়ে গেলেন। 

 

সেখানে বিভিন্ন পাড়া মহল্লার অনুষ্ঠানে গান গেয়ে সবার দৃষ্টি কাড়লেন। বিজয়ের পর দেশে ফিরে এসে দেশ গড়ার আহ্বান জানিয়ে তার কণ্ঠ দিয়ে সবাইকে আবার উজ্জীবিত করতে থাকলেন। 

 

রাজশাহী বেতারের শিল্পি এন্ড্রু কিশোর কলেজজীবন পার করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণিজ্য বিভাগে অধ্যয়নের সময় সবার প্রিয়জন হয়ে গেলেন। শিক্ষক, কর্মচারী, সহপাঠি ও বন্ধুদের কাছের এ প্রিয় মানুষ ক্যাম্পাসের বাস চালক, টোকাই, বাদাম বিক্রেতা, চা বিক্রেতা সবার কাছে আপনজন হয়ে গেলেন। 

 

পুরো ক্যাম্পাস তার পদচারণায় মেতে উঠতো। বাইরে থেকে আসারা তাকে দেখার জন্য আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতো। তিনি তাদের আপন করে নিতেন। অনুষ্ঠানে গান গাইবেন এ কথা শুনে তার ভক্ত শুভাকাঙ্খীদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান স্থল সরগরম হয়ে উঠতো। 

 

শিক্ষাজীবন শেষে নিজেকে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করলেন। অনেক সুযোগ থাকলেও এই ধারাকেই গ্রহণ করলেন। অনেক প্লেব্যাক করেছেন। ঢাকায় থাকলেও তিনি তার প্রিয় রাজশাহীকে ভুলে যাননি। বহু অসহায় পরিবার, দুস্থ মানুষ তার কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছেন, যা কখনও প্রচারে আসেনি। এই প্রচার বিমুখ শিল্পী নিজের কথা তেমন একটা ভাবতেন না, ভাবতেন অন্যদের কথা। 

 

 

ওস্তাদ আব্দুল আজিজ বাচ্চু স্মৃতি পরিষদ গঠন হওয়ার পর তিনি এই প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম দিকপালের দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা থেকে তিনি নানা পরামর্শ দিয়ে সবাইকে সহযোগিতা করতেন। সংগঠনটির কোন অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত থাকতেন। কোন সময় উপস্থিত হতে না পারলেও খোঁজ খবর দিয়ে সহযোগিতা করছেন। 

 

 

তার জীবদ্দশাতেই সুরবানী সঙ্গীত বিদ্যালয়, রাজশাহী ঘোড়ামারা রঙ্গ মঞ্চে তাদের একটি অনুষ্ঠানে তাকে ‘কন্ঠরাজ’ সম্মানে সম্মানীত করেন। অনেক অবদান রেখেও তার ভাগ্যে জোটেনি জাতীয় কোন সম্মান। অথচ তিনি শুধু রাজশাহী নন দেশের সঙ্গীত অঙ্গনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন। সঙ্গীত অঙ্গনের উজ্জ্বল নক্ষত্র ‘কন্ঠরাজ’ এন্ড্রু কিশোরের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
 

বিনোদন বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর