করোনাকালে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ
লাইফ টিভি 24
প্রকাশিত: ০৯:৩৩ ১৪ নভেম্বর ২০২০
বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে মহামারি আকারে ধেয়ে আসা, চেপে বসা সংক্রামক ব্যধি করোনার সঙ্গে অসংক্রামক রোগ ডায়াবেটিস প্রতিরোধের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। বিশ্ব ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০২০-২৫-এ ডায়াবেটিস রোগের বিস্তার রোধে উপযুক্ত কৌশল নির্ধারণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
করোনা চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো ১৪ নভেম্বর সাড়ম্বরে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উদযাপনে এবারের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে— ‘ডায়াবেটিস চিকিৎসাসেবায় নার্সদের ভূমিকা।’ অতি অণুভাইরাস করোনার বিস্তারে ডায়াবেটিসের সংযুক্ত পরিবেশের প্রভাব থেকে ডায়াবেটিসের বিস্তার প্রতিরোধের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়টি মুখ্য বিবেচনায় ওঠে এসেছে।
করোনা ও ডায়াবেটিস রোগ—এই প্রত্যয় ও প্রয়াস সর্বত্র। মানবদেহে ইনসুলিন নামের প্রয়োজনীয় হরমোনটির অপ্রতুল নিঃসরণের কারণে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। রক্তে শর্করার পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হয়ে বেশিদিন ধরে থাকলে ডায়াবেটিস রোগ দেখা দেয়। সাধারণত ডায়াবেটিস বংশগত কারণে ও পরিবেশের প্রভাবে হয়। কখনো কখনো অন্যান্য রোগের ফলেও হয়ে থাকে। এ রোগ যেকোনো বয়সে সব লোকেরই হতে পারে।
ডায়াবেটিস একবার হলে আর সারে না। এটা সব সময়ের এবং আজীবনের রোগ। তবে আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থা গ্রহণ করে এ রোগকে ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা, প্রতিরোধ করা এবং প্রায় স্বাভাবিক জীবন যাপন করা সম্ভব হয়। অতিরিক্ত প্রস্রাব, অত্যধিক পিপাসা, বেশি ক্ষুধা, দুর্বল বোধ করা এবং কেটে-ছিঁড়ে গেলে ক্ষত তাড়াতাড়ি না শুকানো হচ্ছে এই রোগের সনাতন সাধারণ লক্ষণ।
যাদের বংশে রক্ত সম্পর্কযুক্ত আত্মীয়-স্বজনের ডায়াবেটিস আছে, যাদের ওজন খুব বেশি, যাদের বয়স চল্লিশের ওপরে এবং যারা শরীরচর্চা করেন না, গাড়িতে চড়েন এবং বসে থেকে অফিসের কাজকর্মে ব্যস্ত থাকেন, যারা নিয়মিতভাবে সুষম খাবার পরিমিত পরিমাণে খান না, ফাস্ট ফুড বা জাংক ফুড খেতে অভ্যস্ত—তাঁদের ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
অত্যধিক চিন্তা-ভাবনায়, মানসিক চাপে, দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনায়, আঘাতে, সংক্রামক রোগে, অস্ত্রোপচারে, গর্ভাবস্থায় এই রোগ বাড়াতে সাহায্য করে। এগুলোর প্রতি দৃষ্টি রেখে প্রথম থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে এ রোগ প্রতিরোধ বা বিলম্বিত করা যায় বলে অধুনা গবেষণায় প্রতিভাত হয়েছে।
ডায়াবেটিস প্রধানত দুই প্রকারের—ক. টাইপ-১ ইনসুলিন নির্ভরশীল এবং খ. টাইপ-২ ইনসুলিন নিরপেক্ষ। ইনসুলিন নির্ভরশীল রোগীদের ইনসুলিনের অভাবের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে নিয়মিত ইনসুলিন ইঞ্জেকশন নিতে হয়। পক্ষান্তরে ইনসুলিন নিরপেক্ষ রোগীদের দেহে কিছু পরিমাণ ইনসুলিন থাকে।
তবে চাহিদার প্রয়োজনে তা যথেষ্ট নয় বা শরীর ইনসুলিন ব্যবহার করতে পারে না। এসব রোগীর খাদ্য নিয়ন্ত্রণ এবং প্রয়োজনে শর্করা কমানোর বড়ি সেবন করতে হয় কিংবা প্রয়োজনবোধে সাময়িকভাবে ইনসুলিন গ্রহণ করতে হয়।
ডায়াবেটিস ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ নয়। বেশি মিষ্টি খেলে ডায়াবেটিস হয়, এ ধারণা ঠিক নয়। জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ ইব্রাহিমের ভাষায়, 3D ( Diet, Discipline and Drug) অর্থাৎ খাদ্য নিয়ন্ত্রণ, শৃঙ্খলা এবং ওষুধ এই রোগ নিয়ন্ত্রণের উপায়। খাদ্যের গুণগত মানের দিকে নজর রেখে পরিমাণমতো খাদ্য নিয়মিতভাবে গ্রহণ, জীবনের সব ক্ষেত্রে নিয়ম-কানুন বা শৃঙ্খলা মেনে অর্থাৎ কাজকর্মে, আহারে-বিহারে, চলাফেরায়, এমনকি বিশ্রামে ও নিদ্রায়, শৃঙ্খলা মেনে চলা দরকার।
নিয়ম-শৃঙ্খলাই ডায়াবেটিক রোগীর জীবনকাঠি। ডায়াবেটিক রোগীকে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে রোগ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব গ্রহণ এবং চিকিৎসকের পরামর্শমতো খাদ্য নিয়ন্ত্রণ ও নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে হয়। রোগ সম্পর্কে ব্যাপক শিক্ষা ও আত্মসচেতনতা ছাড়া ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের চিকিৎসায় আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না। তবে ডায়াবেটিস বিষয়ে শিক্ষা শুধু রোগীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না।
একই সঙ্গে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব এবং ডাক্তার ও নার্সদেরও শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। রোগী যদি চিকিৎসকের সঙ্গে সহযোগিতা করে তাঁর উপদেশ ও নির্দেশ ভালোভাবে মেনে চলেন এবং রোগ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা যথাযথভাবে গ্রহণ করেন, তবে সুখী, কর্মঠ ও দীর্ঘজীবন লাভ করতে পারেন।
ডায়াবেটিসের বিস্তারের সঙ্গে বিশ্বব্যাপী বিদ্যমান বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রসঙ্গটি সম্পৃক্ত করা হয়েছে এ জন্য যে ডায়াবেটিসের বিস্তারে ও প্রতিরোধে পরিবেশের রয়েছে বিশেষ প্রভাব। অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলেও জলবায়ুর পরিবর্তন ত্বরান্বিত হচ্ছে। দ্রুত ও দুর্বল নগরায়ণের ফলে বিশ্বের অর্ধেক জনসংখ্যা এখন শহরে বাস করে।
এখানে আছে যন্ত্রচালিত পরিবহনব্যবস্থা, চলছে বস্তির বিস্তার, শরীরচর্চাবিহীন যাপিত জীবনে বাড়ছে বয়োবৃদ্ধ জনসম্পদ, হচ্ছে বনজ প্রাকৃতিক সম্পদ উজাড়, প্রাণিজ ও সুষম খাদ্যের জায়গা দখল করছে কলকারখানায় প্রক্রিয়াকরণ কৃত্রিম অস্বাস্থ্যকর খাবার, পরিবর্তিত হচ্ছে আহারপ্রক্রিয়া, বাড়ছে বিশ্ব খাদ্য-কৃষির ব্যবসা ও বিপণনে প্রতিযোগিতা।
বর্তমানে বিশ্বে ৩৬৬ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছে। ২০৩০ সাল নাগাদ এর পরিমাণ অর্ধ বিলিয়নে দাঁড়াবে। বছরে ৪.৬ মিলিয়ন মানুষ এই রোগে মারা যায়। ডায়াবেটিসে সবচেয়ে বড় ক্ষতি কর্মক্ষমতা হারানো। এই রোগের পেছনে বার্ষিক ব্যয় হয় ৪৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
পাঁচজনের মধ্যে চারজন ডায়াবেটিক রোগী বাস করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। এ রোগ পরিবারকে অসচ্ছল করে, শ্রমশক্তি বিনষ্ট করে এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে পর্যুদস্ত করে। তাই আসুন, আমরা সবাই যাপিত জীবনে শৃঙ্খলা মেনে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ করি।
লেখক : সরকারের সাবেক সচিব
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির ন্যাশনাল কাউন্সিলের সদস্য
- বাংলাদেশসহ যে ১২৪ দেশে পা রাখলেই গ্রেপ্তার নেতানিয়াহু
- পরীমণির প্রথম স্বামীর মৃত্যু, কে এই ইসমাইল?
- ছেলের কাজের ঘোষণায় বাবা
- স্বাস্থ্য-বিষয়ক যেসব প্রচলিত তথ্যের কোনো ভিত্তি নেই
- কুমিল্লায় ‘যুদ্ধসমাধিতে’ মিলল ২৩ জাপানি সেনার দেহাবশেষ
- রাহুলের বিতর্কিত আউট নিয়ে প্রশ্ন আর সমালোচনার ঝড়
- প্রথম মিলেনিয়াল সাধু হতে যাচ্ছেন প্রয়াত ‘গড’স ইনফ্লুয়েন্সার’
- বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
- মোহিনীর জন্যই কি সায়রাকে ছাড়লেন এ আর রহমান? মুখ খুললেন আইনজীবী
- কবে বাংলাদেশের জার্সিতে দেখা যাবে, জানালেন সাকিব
- ঘর আর অফিস ম্যানেজ করবেন যেভাবে
- দায়িত্ব নিলেন আইজিপি বাহারুল আলম ও ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাত আলী
- শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
- রাজনৈতিক চাওয়া ও কূটনৈতিক চেষ্টা আ.লীগের জন্য কী অর্থ বহন করছে
- প্রথমবার সচিবালয়ে গেলেন প্রধান উপদেষ্টা
- ডায়াবেটিস কেন হয়, কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়?
- এ আর রহমানের বিচ্ছেদ, যা বললেন স্ত্রী ও সন্তান
- বিশ্বকাপ বাছাই: পয়েন্ট টেবিলে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ কোন দল কোথায়
- শীতের সকালে আদা ও তুলসী পাতা খেলে কী হয়?
- পর্তুগালকে রুখে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়া, শেষ মুহূর্তে
- ফের প্রেমে পড়েছেন পরীমনি
- শেখ হাসিনা পালিয়েছেন জানার পর যে অনুভূতি হয়েছিল, জানালেন ড. ইউনূস
- আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
- সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম রিমান্ডে
- শেখ হাসিনার নতুন অডিও ফাঁস, নেতাকর্মীদের যে নির্দেশনা দিলেন
- প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে বিএনপি আশাহত: মির্জা ফখরুল
- মণিপুরে বিক্ষোভকারী নিহত: বিজেপি-কংগ্রেস অফিসে আগুন
- কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে না : গভর্নর
- যুগান্তকারী উদ্ভাবন, ন্যানো রোবটে জব্দ হবে ক্যানসার!
- শাস্তির মুখে পড়তে পারেন মেসি, হতে পারেন নিষিদ্ধও
- প্রতিদিন লিপস্টিক ব্যবহার করলে ঠোঁটের কি ক্ষতি হয়?
- পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে ৩ মাস বিয়ে বন্ধ
- শেখ হাসিনার নতুন অডিও ফাঁস, নেতাকর্মীদের যে নির্দেশনা দিলেন
- শীতের সঙ্গে কুয়াশার তীব্রতা বাড়তে পারে
- আবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা চালু হচ্ছে
- শীতের সকালে আদা ও তুলসী পাতা খেলে কী হয়?
- শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনালাপ, সেই যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার
- আইপিএল নিলামে বাংলাদেশের ১২ ক্রিকেটার
- জুলাই-আগস্ট বিল্পবে সব হত্যার বিচার করা হবে: প্রধান উপদেষ্টা
- রাজনৈতিক চাওয়া ও কূটনৈতিক চেষ্টা আ.লীগের জন্য কী অর্থ বহন করছে
- সালমান শাহর নায়িকার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যে কারণে ফ্রিজ হলো
- অন্ধকারে ডুবে গেছে হাইফা নগরী
- পাকিস্তান থেকে আসা জাহাজে কী আছে, জানা গেলো
- ‘মিস ইউনিভার্স’ হলেন ডেনমার্কের ভিক্টোরিয়া
- যুগান্তকারী উদ্ভাবন, ন্যানো রোবটে জব্দ হবে ক্যানসার!
- ‘ভয়াল’ দর্শনে শুধু বড়রা
- ফের প্রেমে পড়েছেন পরীমনি
- রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়লো
- প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে বিএনপি আশাহত: মির্জা ফখরুল
- বাংলাদেশে পাকিস্তানের জাহাজ ভারতের উদ্বেগ কেন?