ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৪১৭

করোনাভাইরাস:কর্মীদের বাসায় বসে কাজ করতে বলছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:১৪ ১৮ মার্চ ২০২০  

করোনাভাইরাসের কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বাসায় থেকে কাজ করতে উৎসাহিত করছে। এদের মধ্যে রয়েছে গ্রামীণফোন, রবি আজিয়াটা, বাংলালিংক, ইউনিলিভার, রেকিট অ্যান্ড বেনকিজারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। বন্ধ ঘোষণার পরে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও রিমোট প্রযুক্তি ব্যবহার করে কার্যক্রম চালানোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে কোম্পানিগুলো
রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চীফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার শাহেদ আলম বলছেন, প্রায় দুই বছর আগে থেকেই আমাদের কর্মীদের বাসায় থেকে কাজ করার একটা অপশন দিয়ে রেখেছিলাম। সেটাই এখন আমাদের কাজে লাগছে। আমরা কর্মীদের বলেছি, শারীরিক উপস্থিতির দরকার না হলে অফিসে আসার দরকার নেই। সবার বাসায় কাজ করার সুবিধা আছে। সবাইকে ভিপিএন সংযোগ দিয়েছি। মিটিংগুলো ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আপাতত কয়েক সপ্তাহের জন্য তাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের উপস্থিতি অর্ধেকের কম হবে। রবি আজিয়াটায় ১৩০০-এর বেশি কর্মী কাজ করেন। 
তিনি বলেন, মার্কেটে যে কর্মীরা কাজ করেন, তাদের মুভমেন্ট সীমিত করে দিয়েছি। যাতে প্রোডাক্ট অনলাইনে বিক্রি করা যায়। ফিজিক্যাল মুভমেন্ট কমিয়ে দিয়েছি। আমাদের সব কর্মীর হেলথ ট্র্যাকার দিয়েছি। যার মাধ্যমে প্রতিদিন তাদের স্বাস্থ্য নিয়ে রিপোর্ট করতে পারবেন। ফলে তাদের ক্লোজলি মনিটরিং করা সম্ভব হচ্ছে। কোনও সমস্যা দেখা দিলে তারা তাৎক্ষণিকভাবে রিপোর্ট করতে পারবেন। আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।
তবে গ্রাহকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের কারণে সবাই বাসায় থেকে কাজ করতে পারবেন না। অনেককে অফিসে আসতে হবে।
শাহেদ আলম বলছেন, যাদের অফিসে আসতে হবে, তাদের স্বাস্থ্য সতর্কতার সব ব্যবস্থা আমরা রেখেছি। এমনকি পার্টনার কল সেন্টার সেবা দিচ্ছেন যেসব থার্ড পার্টি, তাদের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি, যাতে তারাও হাইজিন রক্ষা করেন এবং স্বাস্থ্য সতর্কতার বিষয়গুলো মেনে চলেন।'
একই ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছে গ্রামীণফোন, বাংলালিংক ও ইউনিলিভারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। গ্রামীণফোনের হেড অব এক্সটার্নাল কমিউনিকেশন মুহাম্মদ হাসান এক বার্তায় বলেন, নিরাপত্তা আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এমপ্লয়ী, যারা সরাসরি গ্রাহক সেবার সঙ্গে জড়িত নন - তাদের বাসা থেকে অফিস করার জন্য উৎসাহিত করছি।

তিনি বলেন, একই সঙ্গে যারা সরাসরি গ্রাহক সেবা দেবেন, তাদের জন্য যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে উৎসাহিত করছি। একই সঙ্গে ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি, যেন সরাসরি যোগাযোগ যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা যায়।
রিমোট ওয়ার্কিং যেভাবে কাজ করে
ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের অধ্যাপক সুমন রহমান বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহার করেই রিমোট ওয়ার্কিং ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। যেমন এখন আমরা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়ে অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করছি। নির্দিষ্ট সময়ে শিক্ষার্থীরা একটা সময় বসে ক্লাস করে নেয়া হবে। শিক্ষার্থীরা সেসময়ে উপস্থিত থেকে ক্লাসের মতো করেই শিক্ষা নিতে পারবেন, প্রশ্ন করতে পারবেন।
তিনি বলেন, এখন অনেক প্রযুক্তি তৈরি হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান নিজেদের মতো করেও নানা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে নিয়েছে। ভিপিএন ব্যবহার করে, নিজস্ব সার্ভার ব্যবহার করায় সেগুলো যথেষ্ট নিরাপদ থাকে, অন্য কেউ সেখানে প্রবেশ করতে পারেন না। ফলে অফিসে যেভাবে তারা কাজ করেন, বাসায় বসেও ঠিক একইভাবে কাজ করতে পারেন। অনেকে ফেসবুকও ব্যবহার করেন।
সুমন রহমান বলেন, এসব ক্ষেত্রে মনিটরিংয়েরও অনেক ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে। কাজ নির্দিষ্ট করে দেয়া হচ্ছে। ফলে অফিসে যেভাবে একজন কর্মীকে মনিটরিং করা হয়। এখানেও তাই হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মিটিং হয়, সিদ্ধান্ত হয়। আসলে এখনকার যুগে অফিসে বসে কাজ করা আর বাসায় বসে কাজ করার মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। তবে যাদের সরাসরি গ্রাহকদের সঙ্গে কাজ করতে হয়, তাদের অবশ্য অফিসে আসতে হয়।
সুযোগ নেই কারখানার কর্মীদের
অধ্যাপক বলছেন, অনেক বড় বড় কোম্পানি বাসায় বসে কাজ করার ব্যবস্থা করতে পারলেও, তৈরি পোশাক কারখানা, দোকানপাট ইত্যাদি খাতের কর্মীদের এ সুযোগ পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। কিন্তু তাদের অনেককে একই স্থানে বসে কাজ করতে হয়। করোনাভাইরাস জনিত পরিস্থিতিতে এ কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।