ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৩৩৩

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ২ চিকিৎসক

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:০৪ ২৭ মার্চ ২০২০  

করোনাভাইরাসে দেশে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৪ জন। এরমধ্যে দুজন চিকিৎসক। ফলে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৮ জনে।

 

শুক্রবার (২৭ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা করোনাভাইরাস সংক্রান্ত অনলাইন লাইভ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।


তিনি জানান, ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ১০২৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।

 

করোনা ভাইরাস সীমিত পর্যায়ে কমিউনিটিতে ছড়িয়ে পড়ছে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়ে ড. ফ্লোরা আরও বলেন, তবে এখনও তা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েনি।

 

তিনি আরও বলেন, নতুন সনাক্তকৃত চারজনের মধ্যে দুজন চিকিৎসক রয়েছেন। তারা করোনা আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছিলেন। চারজনের মধ্যে দুজন ঢাকায় ও দুজন ঢাকার বাইরের। আক্রান্ত দুজন রোগী দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন।তবে বর্তমানে চারজনই সুস্থ রয়েছেন, কোনো ধরনের জটিলতা নেই।

 

মীরজাদি ফ্লোরা বলেন, প্রথমদিকে শুধুমাত্র বিদেশ থেকে এসেছেন বা বিদেশফেরত কারো সংস্পর্শে এসেছেন তাদের নমুনাপরীক্ষা করা হতো। কিন্তু এখন যাদের বয়স ৬০বছরের বেশি এবং দীর্ঘমেয়াদি অসুখে ভুগছেন, তাদের কারো মধ্যে লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়া যাদের নিউমোনিয়া ছিল, কি কারণে নিউমোনিয়া হচ্ছে তা দেখার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন পেশার লোকজন যারা বিভিন্ন লোকের সংস্পর্শে আসে এমন লোকজনের মধ্যে লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দিলে তাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ পরীক্ষার ভিত্তিতে আমরা দেখতে চাই বাংলাদেশের কোথাও কোনো সংক্রমণ ঘটেছে কি-না।

 

তিনি বলেন, ঢাকা থেকে অনেকে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন সেখানেও যাতে লক্ষণ-উপসর্গ দেখা দিলে তারা যোগাযোগ করতে পারেন সেজন্য জেলা পর্যায়ে হটলাইন চালু রয়েছে।

 

করোনায় সতকর্তার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে অধ্যাপক সেব্রিনা বলেন, আমাদের সামাজিক বিচ্ছিন্নকরণের আজকের দ্বিতীয় দিন চলছে। এ পর্যন্তু আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের আদেশ-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে জনস্বার্থে যে আদেশ ও নির্দেশনা দেয়া হয়, সেগুলো আপনারা অবশ্যই মেনে চলবেন। জনগণের ভালোর জন্য, জনগণের সুস্থতা-স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে সরকারি পদক্ষেপগুলো নিয়েছি।

 

‘অবশ্যই ঘরের বাইরে যাবেন না, ঘরের ভেতরে থাকবেন। ঘরের ভেতরে থেকে যে বিষয়গুলো চর্চা ও পরিচর্যা করতে বলে থাকি, সেগুলো অবশ্যই মেনে চলতে হবে।’

 

তিনি জানান, ইতিমধ্যে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলবেন। কাশি শিষ্টাচার অবশ্যই মেনে চলবেন। নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে দুই হাত ধোবেন। অপরিষ্কার হাতে নাক-মুখ-চোখ স্পর্শ করবেন না। যাদের বয়স ষাটোর্ধ্ব কিংবা যাদের দীর্ঘমেয়াদি রোগ রয়েছে, তারা অবশ্যই অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করে নিজের ঘরের ভেতরেই থাকবেন। একদম নিজের ঘর থেকে বের হবেন না।

 

কারও সঙ্গে হাত-মেলানো, কোলাকুলি করা থেকেও বিরত থাকার আহ্বান জানান সেব্রিনা। ‘আমাদের পরিকল্পনায় যে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল, তাতে রোগের বিস্তারটাকে ভাগ করে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। যত ধীরে ধীরে রোগের বিস্তার হচ্ছে, সেই অনুসারে প্রস্তুতিটাকে পরবর্তী ধাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছি’-যোগ করেন আইইডিসিআরের পরিচালক।

 

এর আগে বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে নানা তথ্য জানাতে প্রত্যেকটি জেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর হটলাইন সার্ভিস চালু করছে বলেও জানান তিনি। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে, স্বাস্থ্য অধিদফতরে ও আইইডিসিআরে যে হটলাইন নম্বর ছিল, সেখানেও লাইনের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

 

জ্বর বা কাশি হলেই কোভিড-১৯ আক্রান্ত ভেবে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে ডা. ফ্লোরা বলেন, ভেবে বিচলিত বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হবেন না। আপনার দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বর ছাড়াও স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ নাম্বারটি আছে, সে নম্বরে আপনারা যোগাযোগ করুন। সেখানে অন্যান্য পরামর্শের পাশাপাশি এটি কোভিড-১৯ কিনা সে বিষয়েও পরামর্শ দেয়া হবে।