ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
১৬৩৯

কর্পূরের কত উপকারিতা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০০:২৫ ১৮ নভেম্বর ২০২১  

কর্পূর গাছ থেকে বাই প্রডাক্ট হিসেবে সাদা রঙয়ের এক ধরনের উপাদান পাওয়া যায়, যা আমাদের কাছে কর্পূর নামেই পরিচিত। প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন দেশে কর্পূরের ব্যবহার হয়ে আসছে। এটি প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন হয়, এছাড়া রাসায়নিকভাবেও তৈরি করা যায়।

 

কীটপতঙ্গ দূর করা ও পরিবেশ বিশুদ্ধ রাখার উদ্দেশ্যে ঘরে ঘরে কর্পূর ব্যবহৃত হয়। এটি খাওয়া যায় না, মুখে গেলে মারাত্মক বিষক্রিয়া হতে পারে। তবে চিকিৎসাক্ষেত্রে এই উপাদানটির আছে অদ্ভুত কিছু উপকারিতা। 

 

* কফ দূর করে: এক গবেষণায় জানা গেছে, পুরোনো কফ সারাতে কর্পূর বেশ উপকারি। কফ ও ঠান্ডা সারাতে বাজারে যেসব রাব বা জেল পাওয়া যায়, সেগুলোতে কর্পূর থাকে। এর সুগন্ধ কফ ও ঠান্ডা সারায়। এক্ষেত্রে ছোট বাচ্চা বা বড় যাদের কফ কাশি হয়, ঘুমানোর আগে তাদের বুকে সেই জেল মালিশ করতে হয়। জেল না থাকলে এক টেবিল চামচ আমন্ড অয়েলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা কর্পূরের তেল মিশিয়ে তা বুকে মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায়।

 

* নাক বন্ধ হওয়া দূর করে: সর্দির কারণে নাক বন্ধ হয়ে গেলে কর্পূরের তীব্র গন্ধ নাক বন্ধ হওয়া দূর করে। এক্ষেত্রে গরম সরিষার তেলের সঙ্গে কর্পূর বা কর্পূরের তেল মিশিয়ে সেই তেল আস্তে আস্তে নাকের চারপাশে ও বুকে মালিশ করতে হবে। তবে ওই তেল কোনোভাবেই মুখে দেয়া যাবে না, কারণ তা মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। 

 

* শরীরের ব্যথা দূর করে: এক গবেষণায় দেখা গেছে, কর্পূর মাংসপেশি সহ শরীরের অন্য সব অংশের ব্যথা দূর করে। মাংসপেশিতে রক্ত সরবরাহ বাড়িয়ে ব্যথা দূর করে কর্পূর। তাই শরীরের ব্যথাযুক্ত স্থানে কর্পূরের তেল মালিশ করলে উপকার পাবেন। 

 

* মাথার উকুন মেরে ফেলে: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, মাথার উকুন মেরে ফেলতে কর্পূর কার্যকর। নারকেল তেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা কর্পূর তেল মিশিয়ে চুলে মাখুন। কয়েক ঘণ্টা পর চুল পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেললে উকুন মরে যাবে।

 

* মুখমণ্ডলের ইনফেকশন দূর করে: ডেমোডক্স পরজীবীর জন্য আমাদের মুখমণ্ডলে অনেক সময় ডেমোডিসাইডোসিস নামের এক ধরনের ইনফেকশন হয়। এক ফলে মুখে একজিমা, লাল হয়ে চুলকানির মতো সমস্যা দেখা দেয়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, কর্পূর তেল ত্বকের এই ইনফেকশন ৫-১০ দিনের মধ্যে দূর করে। তবে যদি বেশি সংক্রমণ হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে কর্পূর তেল ব্যবহার করতে হবে। 

 

* ব্রংকাইটিস দূর করে: তীব্র ঠান্ডা ও কফের কারণে ব্রংকাইটিস সমস্যা দেখা দেয়। এতে করে শ্বাসপ্রশ্বাস ব্যাহত হয়। এই সমস্যা দূর করতে কর্পূরযুক্ত বাজারে যেসব রাব বা জেল পাওয়া যায়, তা বেশ কার্যকর বলে গবেষণায় জানা গেছে। 

 

* হজম ও বিপাক ক্রিয়া উন্নত করে: গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন কর্পূর অল্প পরিমাণে খেলে হজম ও বিপাক ক্রিয়া উন্নত করে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। 

 

* ব্রণ দূর করে: প্রাকৃতিকভাবে মুখের ব্রণ দূর করতে কর্পূর কার্যকর বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। নারকেল তেলের সঙ্গে এক টেবিল চামচ কর্পূরের তেল মিশিয়ে অথবা কর্পূরের গোলা মিশিয়ে তা ব্রণে লাগাতে হবে। এতে ব্রণ দূর হয়। 

 

* শরীর চুলকানি কমায়: প্রায় সময় সংক্রমণ, কীট-পতঙ্গের কামড়ে, সূর্যরশ্মির তাপে আমাদের ত্বকে চুলকানি দেখা দেয়। এই অবস্থায় কর্পূরযুক্ত লোশন বা ক্রিম সেসব স্থানে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। 

 

* পাইলসের ব্যথা দূর করে: এক গবেষণায় দেখা গেছে  পাইলসের ফোলা কমানো, ব্যথা দূর করতে ও পাইলস সারিয়ে তুলতে কর্পূর উপকারি। এক্ষেত্রে নারকেল তেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা কর্পূরের তেল মিশিয়ে তা পাইলসের ফোলা জায়গায় লাগালে উপকার পাওয়া যায়। 

 

* গোড়ালি ফাটা সারাতে: আমাদের অনেকেরই পায়ের গোড়ালি ফেটে এক পর্যায়ে বেশ ব্যথার কারণ হয়ে উঠে। আবার অনেকের পায়ের পাতায় কর্ণ বা ফোস্কা পড়ে ব্যথা করে। এক্ষেত্রে একটি পাত্রে গরম পানি নিয়ে তাতে একটি কর্পূরের গোলা মেশাতে হবে। এরপর সেই পানিতে পা ডুবিয়ে বসে থাকতে হবে কিছুক্ষণ। পরে গোড়ালি পরিষ্কার করে ভালোভাবে মুছে ফেলতে হবে পা। 

 

কর্পূরের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

* কর্পূর খাওয়া যায় না। শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর এটি। মুখে গেলে বমি হওয়া, মাথা ও মাংসপেশি ব্যথা সহ বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে।

* অতিমাত্রায় কর্পূর পেটে গেলে শরীর খিঁচুনি সহ কোমায় চলে গিয়ে অনেকে মারাও যায়। 

 

* গর্ভবতী নারীরা কর্পূর খেলে গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে। 

* গবেষণায় দেখা গেছে, বাজারে পাওয়া কর্পূরযুক্ত বডি রাব বা কর্পূর অল্প পরিমাণেও শিশুদের পেটে গেলে তা মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে আসে। 

 

* ত্বকে বেশি মাত্রায় কর্পূর ব্যবহার করলে তা ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। 

* কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, কর্পূর যৌনইচ্ছা বা যৌনশক্তি কমিয়ে দিয়ে প্রজনন কমায় অনেক ক্ষেত্রে।