ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২৪৬

কিডনিতে পাথর হলেও চিন্তা নেই, যেভাবে হবেন বিপদমুক্ত

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:৪১ ১৭ জুন ২০২১  

কিডনিতে পাথর জমলেও 'নো টেনশন'। প্রথম থেকেই কয়েকটি বিষয়ে নজরদারি। একটু নিয়ম মেনে চলা। ব্যস, তাহলেই আপনি হবেন 'স্টোনমুক্ত', জানালেন ইউরোলজিস্ট ডা. অমিত ঘোষ। শুনলেন কোয়েল মুখোপাধ্যায়। কিডনিতে পাথর জমার সমস্যা বহুল-পরিচিত। অথচ নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চললে, পাথুরে পথও হতে পারে মসৃণ। অতএব, বৃক্ককে 'স্টোনমুক্ত' করে, তার স্বাস্থ্য ফেরাতে সচেতন হোন এখনই।


রোগ ধরবেন কীভাবে
বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে। কারও প্রবল ব্যথা হয়, যা ক্রমশ কোমর থেকে প্রস্রাবের জায়গার দিকে এগোয়। কারও মূত্রের সঙ্গে রক্ত বেরোয় আবার কারও ইনফেকশন হয়। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রথমে বোঝাই যায় না। সোনোগ্রাফি, এক্স রে করে ধরা হয়। মনে রাখবেন, লক্ষণহীনতার অর্থ, পাথর ভিতরে বাড়ছে। বড় পাথরে সাধারণত ব্যথা হয় না। কিন্তু এগুলিই কিডনির পক্ষে বিপজ্জনক। কিডনি 'ব্লক' করে নষ্টও করে দিতে পারে।


নজর থাকুক প্লেটে
ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার (দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য), ইউরিক অ্যাসিডযুক্ত খাবার (বাদাম, কফি, বেকন, টার্কি প্রভৃতি) এবং অক্সালেটজাতীয় খাবার বেশি খেলে (কচু) কিডনিতে স্টোন হওয়ার প্রবণতা বাড়ে।


পানি পান 
পানি যত বেশি পান করবেন, ছোট পাথর তত মূত্রের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। যে দিনে ১ গ্লাস পানি পান, আর যে ২৫ গ্লাস পানি পান, দু'জনের মধ্যে দ্বিতীয়জনের 'কোয়ান্টাম অফ ইউরিন প্রোডাকশন' বেশি। ফলে মূত্রের তোড়ও বেশি। তাতেই ছোট স্টোন (১-২ মিলিমিটার) শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে। তা আর বাড়তে পারবে না।


কোন পাথরে কীভাবে মুক্তি
খুব ছোট স্টোন হলে জল আর কিছু আলফা ব্লকার ওষুধ খেলে, বেরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু সামান্য বড় পাথর (১ সেন্টিমিটারের নিচে) হলে, ইএসডব্লুএল (এক্সট্রা কর্পোরিয়াল শক ওয়েভ লিথোট্রিপ্সি) করে বের করে দেওয়া যায়। এক্ষেত্রে রোগীকে অজ্ঞান করতে হয় না। শায়িত অবস্থায় তাঁর উপর একটি মেশিন থেকে ওয়েভ বিম চালিয়ে দেওয়া হয়। পাথর গুঁড়ো হয়ে বেরিয়ে যায়। 


১ সেন্টিমিটারের বেশি বড় পাথর হলে (৩-৪ সেন্টিমিটার), বের করতে 'কি হোল সার্জারি' করতে হবে। নাম পিসিএনএল (পারকিউটানিয়াস নেফ্রোলিথোটমি)। রোগীকে অজ্ঞান করে, পিঠে ছোট একটা ফুটো করতে হয়। তার ভিতর দিয়ে টেলিস্কোপের মতো ছোট যন্ত্র ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। কিডনির মধ্যে গিয়ে সেটি পাথরকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেয়। তারপর ওয়াশ করে, বের করা হয়।


কিন্তু যদি পাথর ৭ কিংবা ৮ মিলিমিটারের আকারের হয় এবং কোনওভাবে ইউরেটারের মধ্যে ঢুকে যায়, সেক্ষেত্রে ইউরিটেরো রেনোস্কোপি করতে হবে। অজ্ঞান করে, রোগীর প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে একটা টেলিস্কোপ ঢুকিয়ে দেওয়া হবে যা ইউরেটারের মধ্যে ঢুকে পাথরটিকে চূর্ণ করবে। এরই অ্যাডভান্সড স্টেজ হল আরআইআরএস। 


রেট্রোগ্রেড ইন্ট্রারেনাল সার্জারি। যদি কেউ লিথোট্রিপ্সি করতে না চান, তখন একটি টেলিস্কোপকে পুরো কিডনি পর্যন্ত ঢুকিয়ে, পাথরকে গুঁড়ো করা যায়। তবে কার ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি প্রযোজ্য হবে, তা চিকিত্সকই দেখে বলে দেবেন।

 

বছরে একটা সোনোগ্রাফি
কিডনিতে স্টোন একবার হলে বারবার হতে পারে। তাই ক্যালসিয়ামজাতীয় খাবার খেলে পাথর হবে ভেবে দুধ খাওয়া চিরতরে বন্ধ করে দিয়েও কোনও লাভ নেই। বছরে একটা করে সোনোগ্রাফি অবশ্যই করবেন। এতে রোগের 'আর্লি ডিটেকশন' সম্ভব হবে। তাছাড়া পানি বেশি পান করবেন।