ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৬১২

গর্ভাবস্থায় যেসব সমস্যা হতে পারে, সচেতন থাকুন

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৮:৪৫ ২ অক্টোবর ২০২০  

মা হতে চলেছেন? সচেতন থাকুন! গর্ভাবস্থা অদ্ভূত সময়। নানারকম শারীরিক সমস্যা, হরমোনের প্রভাবে মানসিক টানাপোড়েন তৈরি হয়। সেইসঙ্গে নতুন প্রাণ পৃথিবীতে আনার আনন্দ-উত্তেজনা থাকে। এ অবস্থা প্রতিটি নারীর ক্ষেত্রে আলাদা রকম অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে। কারণ সবার স্বাস্থ্য ইতিহাস, খাদ্যাভ্যাস, প্রতিদিনের রুটিন ভিন্ন হয়। আর এসবের ওপরই নির্ভর করে গর্ভাবস্থায় কোনও জটিলতা দেখা দেবে কি-না।

 

তবে গর্ভাবস্থায় কিছু জটিলতা প্রায় সব নারীরই হয়। এ নিয়ে গর্ভবতী নারীর সম্যক ধারণা রাখা দরকার। জানা থাকলে জটিলতাগুলো রোধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পারবেন। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের রিপোর্ট অনুযায়ী, গর্ভধারণের আগে একজন সম্পূর্ণ সুস্থ নারী গর্ভাবস্থায় নানা শারীরিক সমস্যায় পড়তে পারেন। যেমন-

 

* গর্ভাবস্থায় অনেকের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হতে পারে। হাইপারটেনশন এসময় খুব প্রচলিত একটি সমস্যা। বিশেষ করে সেকেন্ড ট্রিমেস্টারের পর থেকে সন্তানের জন্ম পর্যন্ত উচ্চ রক্তচাপ এবং হাইপারটেনশন অনেকেরই পিছু ছাড়ে না। গর্ভের ভেতরে থাকা ভ্রূণে যথেষ্ট অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছে দেয়ার জন্য এসময় শরীর বেশি রক্ত পাম্প করে। সেই কারণে মাঝে মাঝে ব্লাড প্রেশার চেক করে নেয়া প্রয়োজন। অধিকন্তু খাবারে লবণ কম খাওয়া দরকার।

 

* গর্ভাবস্থায় অনেক নারীর ডায়াবেটিস হয়ে যায়। তবে সন্তান জন্মের কয়েক মাসের মধ্যেই তা আবার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। কিন্তু এ অবস্থার ডায়াবেটিস হবু মা এবং তার গর্ভের সন্তানের স্বাস্থ্যে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি এর ফলে সময়ের আগেই শিশুর জন্ম পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। তাই এসময় ডায়াবেটিস ধরা পড়লে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

 

* গর্ভাবস্থায় নারীদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটা কমে যায়। যে কারণে এসময় নানাধরনের সংক্রণের আশঙ্কা থাকে। ইউরিনারি ট্র্যাক্ট, ব্লাডার, কিডনি এবং সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ অনেকেরই দেখা দেয়। সংক্রমণ এড়াতে আগে থেকে উপযুক্ত সাবধানতা নেয়া জরুরি। না হলে হবু মায়ের থেকে এ সংক্রমণ ভ্রূণের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। প্রয়োজনে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে গর্ভাবস্থায় খাওয়া নিরাপদ-এমন ওষুধ খান।

 

* হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা, বেশি বয়সে গর্ভাধারণ, স্থূলতার মতো নানা কারণে প্রিক্ল্যাম্পসিয়া হতে পারে। পেটে অসহ্য ব্যথা, মাথার যন্ত্রণা অথবা চোখে ঝাপসা দেখার মতো সমস্যার উদ্রেক ঘটতে পারে। এগুলো হলে বুঝবেন প্রিক্ল্যাম্পসিয়া হয়েছে। এ থেকে গর্ভপাত পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। তাই এ ধরনের সমস্যা হলে এখনই ডাক্তার দেখান।

 

* প্রেগনেন্সির ৩৭ সপ্তাহ পূরণ হওয়ার আগেই যদি শিশুর জন্ম হয়, তাহলে তাকে বলে প্রিম্যাচিওর লেবার। এর ফলে দুর্বল, অসুস্থ শিশুর জন্ম হয়। এ ধরনের বাচ্চাদের ওজন কম হয়। বয়সের সঙ্গে এরা ঠিকমতো বাড়ে না। তাই প্রিম্যাচিওর লেবার এড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।

 

* প্রেগন্যান্সির প্রথম ২০ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাত হলে তাকে বলে মিসক্যারেজ এবং ২০ সপ্তাহের পরে গর্ভপাত হলে বলা হয় স্টিলবার্থ। গর্ভের সমস্যা, ভ্রূণ ঠিকমতো না বাড়লে, গর্ভস্থ ভ্রূণ সংক্রমণের শিকার কিংবা মায়ের কোনও অসুখ হলে মিসক্য়ারেজ বা স্টিলবার্থ হতে পারে। যদিও মিসক্যারেজ এড়ানো গর্ভবতী নারীর হাতে থাকে না। তবু এ ধরনের ঘটনা বাবা-মায়ের জীবনে অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ট্রমা কাটিয়ে ওঠার জন্য উপযুক্ত কাউন্সেলিং প্রয়োজন।