ঢাকা, ১৯ জানুয়ারি রোববার, ২০২৫ || ৬ মাঘ ১৪৩১
good-food
৬৮৯

ঘুষের মামলায় নাজমুল হুদার জামিন

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১২:১২ ২১ জানুয়ারি ২০১৯  

ঘুষের মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হুদাকে জামিন দিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

 

সাজার রায়ের বিরুদ্ধে হুদার লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) গ্রহণ করে সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ তাকে জামিন দেন। 

 

আদালতে নাজমুল হুদার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, মনসুরুল হক চৌধুরী ও সিগমা হুদা।

 

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

 

খুরশীদ আলম খান পরে সাংবাদিকদের বলেন, উনার (নাজমুল হুদা) লিভ টু আপিল মঞ্জুর হয়েছে। সেসঙ্গে জামিনও দিয়েছেন আদালত। এখন আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি জামিনে থাকবেন।

 

সাবেক চার দলীয় জোট সরকারের মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বিএনপি থেকে বেরিয়ে তৃণমূল বিএনপি নামে নতুন দল খুলে চেয়ারম্যান হন। দলের নিবন্ধন না থাকায় একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশ নেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে।

 

২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগে এ মামলায় নাজমুল হুদাকে সাত বছরের সাজা দিয়েছিল নিম্ন আদালত। ২০১৭ সালে হাই কোর্ট তার সাজা কমিয়ে চার বছরের কারাদণ্ড দেয়।

 

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গত বছর ১৯ নভেম্বর হাইকোর্টের ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করেন সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে ৪৫ দিনের মধ্যে নাজমুল হুদাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।

 

সে অনুযায়ী গেল ৬ জানুয়ারি নাজমুল হুদা আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার দ্বিতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক এইচ এম রুহুল ইমরান।

 

এদিকে ৮ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) পাশাপাশি জামিনের আবেদন করেন নাজমুল হুদা।

 

চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান সেদিন বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার শুনানি শেষে নাজমুল হুদাকে জামিন দিলেন আপিল বিভাগ।

 

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ২০০৭ সালের ২১ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম ধানমণ্ডি থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

 

নাজমুল হুদা ও তার স্ত্রী সিগমা হুদা সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘খবরের অন্তরালের’নামে মীর জাহের হোসেন নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন বলে অভিযোগ করা হয় মামলায়।

 

২০০৭ সালের ২৭ আগস্ট বিশেষ জজ আদালতে এ মামলায় নাজমুল হুদাকে ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং আড়াই কোটি টাকা জরিমানা করে। পাশাপাশি তার স্ত্রী সিগমা হুদাকে তিন বছরের দণ্ড দেয়।

 

ওই রায়ের বিরুদ্ধে নাজমুল হুদা ও সিগমা হুদা আপিল করলে ২০১১ সালের ২০ মার্চ হাইকোর্ট তাদের খালাস দেন।

 

রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গেলে উভয় আবেদনের শুনানি করে সর্বোচ্চ আদালত ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্টের রায় বাতিল করে পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন।

 

পরে মামলাটির ফের শুনানি নিয়ে ২০১৭ সালের ৮ নভেম্বর হাইকোর্ট রায়ে নাজমুল হুদার সাত বছরের সাজা কমিয়ে চার বছরের কারাদণ্ড দেন।

 

হাইকোর্টের ওই রায়ের পর নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ না করেই সাজার বিরুদ্ধে আপিল শুনানির অনুমতি চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন নাজমুল হুদা।

 

কিন্তু ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারি সে আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।

 

হাই কোর্টের রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ‘যখন একজন ব্যক্তি সরকারের কোনো শীর্ষ পদে যায় এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে, তখন ওই দুর্নীতি দেশের অর্থনীতি, জাতীয় স্বার্থ ভাবমূর্তির ব্যাপক ক্ষতি করে।’