ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
১৮৮৭

চলেই গেলেন আকাশে হার্ট অ্যাটাকের শিকার পাইলট নওশাদ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৭:০৫ ৩০ আগস্ট ২০২১  

মধ্য আকাশে বড় ধরনের হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়েছিলেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কৃতী পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুম। মৃত্যুর কাছে হার মানলেন অবশেষে। যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত চিরতরে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।


সোমবার (৩০ আগস্ট) পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন মাহবুব গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

এদিকে রোববার (২৯ আগস্ট) নওশাদ কাইয়ুমের মৃত্যুর গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়লেও আসলে তাকে নেয়া হয়েছিল ভারতের নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে  নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ‘কোমায়’।

 

হাসপাতালের সহকারি মহাব্যবস্থাপক রোশান ফুলবান্ধের বরাত দিয়ে রোববার বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) জানায়, ক্যাপ্টেন নওশাদের অবস্থা গুরুতর। তিনি সম্পূর্ণ ভেন্টিলেশনের সহায়তায় বেঁচে আছেন। তার মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তিনি কোমায় আছেন।

 

হাসপাতালের মেডিকেল সার্ভিসেস ডিরেক্টর ডা. সুভরজিৎ দাশগুপ্ত, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ফিজিশিয়ান ডা. রঞ্জন বারোকার এবং  ডা. বীরেন্দ্র বেলেকারের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুম।

 

শুক্রবার সকালে ওমানের মাস্কাট থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে বিজি-০২২ ফ্লাইটটি নিয়ে ঢাকা আসার পথে ভারতের আকাশে থাকা অবস্থায় ক্যাপ্টেন কাইয়ুম অসুস্থবোধ করেন। পরবর্তীতে  বিমানটিকে মহারাষ্ট্রের নাগপুরের ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করানো হয়।


আকাশে অসুস্থ হয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ক্যাপ্টেন কাইয়ুম কলকাতার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাছে জরুরি অবতরণের অনুরোধ জানান। একই সময় তিনি কো-পাইলটের কাছে বিমানটির নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেন।


কলকাতার এয়ার ট্রাাফিক কন্ট্রোল বিমানটিকে তার নিকটস্থ নাগপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করার নির্দেশ দিলে কো-পাইলটই বিমানটিকে অবতরণ করান। বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের বিমানটিতে ১২৪ জন যাত্রী ছিল। তারা সবাই নিরাপদে ছিলেন।

 

এ বিষয়ে ঘটনার দিনই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোস্তফা কামাল জানান, ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণের পর পাইলট নওশাদকে দ্রুত স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি সুস্থ আছেন। উড়োজাহাজের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। যাত্রীরা সবাই নিরাপদে আছেন। যাত্রীদের উড়োজাহাজ থেকে নামিয়ে টার্মিনালের লাউঞ্জে নেয়া হয়েছে।

 

তিনি আরও জানিয়েছিলেন, যাত্রীদেরকে নাগপুর থেকে আনতে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সন্ধ্যায় একজন পাইলট ও সহকারী পাইলট নাগপুর যাবেন। তবে চিকিৎসক যদি ওই পাইলটকে ওড়ার অনুমতি দেন তাহলে পাইলট নওশাদই ফ্লাইটটি নিয়ে দেশে ফিরবেন।

 

কিন্তু শেষ পর্যন্ত জীবিত অবস্থায় দেশে ফেরা হলো না পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুমের। 

 

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ শাখার উপ মহা ব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকার বলেন, “আমরা হাসপাতাল থেকে জানতে পেরেছি, তিনি ইন্তেকাল করেছেন।”

 

বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) সভাপতি মাহবুবুর রহমান জানান, ক্যাপ্টেন নওশাদের বয়স হয়েছিল ৪৫ বছরের বেশি। তার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সব মহল থেকে প্রয়োজনীয় উদোগ নেওয়া হচ্ছে।

 

এর আগে নওশাদ আতাউল কাইয়ুমের কাজিন ফারহানা শিফা এক ফেইসবুক পোস্টে এই বৈমানিকের মৃত্যুর খবর জানান।

 

বিএএফ শাহীন স্কুল ও কলেজে লেখাপড়া করা নওশাদ আতাউল কাইয়ুমের বাবা আববুল কাইয়ুমও একজন পাইলট ছিলেন। গেল মার্চে তিনি মারা যান।

 

তার একজন আত্মীয় ফেইসবুকে লিখেছেন, বাবাকে দেখে ছোটবেলা থেকেই আকাশে ওড়ার আগ্রহ তৈরি হয় নওশাদের মধ্যে। যে বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটি তিনি শেষ পর্যন্ত চালাতেন, সেটা ছিল তার বন্ধুর মত।