ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৬৪৮

চাকরি দেয়া নয়, বলেছি ৩ কোটি কর্মসংস্থানের কথা: প্রধানমন্ত্রী  

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৮:০২ ১৪ জুন ২০১৯  

২০৩০ সালের মধ্যে তিন কোটি কর্মসংস্থানের কথা আমরা বলেছি, চাকরি দেয়ার কথা বলিনি। বললেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

 

প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্মসংস্থানের কথা আমরা বলেছি, চাকরি দেয়ার কথা বলিনি। ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রেখেছি। শিক্ষার কথা বলেছি; প্রযুক্তিগত শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, ভোকেশনাল ট্রেনিং। আর আমরা চাই ট্রেনিং নিয়ে শিক্ষিত হয়ে নিজের কাজ নিজে করতে শিখুক।

 

ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, কাজেই ৩ কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে। আর আছে বলেই আজ ধান কাটার লোক পাওয়া যায় না। ধান কাটার জন্য এখন লোক পাওয়া যাচ্ছে না কেন? যদি এত বেশি বেকার থাকে; তাহলে ধান কাটার লোকের অভাব হতো না।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন মানুষ একদিন ধান কাটলে ৪০০-৫০০ টাকা পাবে। আবার তিন বেলা খাবার, দুই বেলা খাবে আর এক বেলা আবার বাড়ি নিয়ে যাবে। এরপরও কৃষক ধান কাটার জন্য লোক খুঁজে পায় না। কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে বলেই এখন ধান কাটার লোকের অভাব হচ্ছে।

 

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কর্মসংস্থানের কথা বলি, আর সবার ধারণা হয়ে যায় চাকরি দেয়া। ১৬ কোটি মানুষকে কি চাকরি দেয়া যায়? পৃথিবীর কোনো দেশ দেয়?

কর্মসংস্থান হচ্ছে, মানুষ যেন কাজ করে খেতে পারে, সেই সুযোগটা সৃষ্টি করা, বললেন তিনি।

 

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়। বাজেটের আকার ধরা হয় পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। বাজেটে বেকারত্ব নিরসনে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।

 

প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়, শ্রমবাজারে বিপুল কর্মক্ষম জনশক্তির আগমন, অন্যদিকে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে শ্রমিকের চাহিদা কমে যাওয়ার বিষয়টি সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেছে এবং এর সমাধানে নানাবিধ পদক্ষেপ নিচ্ছে।

 

সরকার শিল্পখাতে কর্মসৃজনের গতি বাড়ানোর লক্ষ্যে ব্যবসা ও বিনিয়োগ পরিবেশ আধুনিকায়ন, শ্রমিকের সুরক্ষা জোরদার করা এবং পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীর অধিক হারে কর্মে প্রবেশ উপযোগী আইন-বিধি, নীতি কৌশল সংস্কারের জন্য তিন বছর মেয়াদে কার্যক্রম শুরু করেছে।

 

বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরে ১০টি আইন-বিধি, নীতি কৌশল প্রণয়ন অথবা সংস্কার সম্পন্ন হয়েছে। আগামী দুই বছরে অবশিষ্ট সংস্কার কাজ সম্পাদন করে ক্রমবর্ধমান জনশক্তির জন্য মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে।

 

এছাড়া বিশেষ জনগোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে তিন কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্বের অবসান ঘটানো হবে।

 

প্রস্তাবিত বাজেট বিষয়ে নিয়ম অনুযায়ী সংবাদ সম্মেলন করার কথা অর্থমন্ত্রীর। কিন্তু তিনি অসুস্থ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে বাজেট বিষয়ে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।

 

গত কয়েকদিন ধরে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বাজেট উপস্থাপনের জন্য হাসপাতাল থেকে সরাসরি তিনি জাতীয় সংসদে আসেন। বাজেট উপস্থাপনের সময়ও তিনি অসুস্থ ছিলেন। এমনকি বাজেট বক্তব্য কিছুটা পড়ে বাকিটা পড়ার জন্য একটু সময় নেন। কিন্তু অসুস্থতার কারণে পরে আর তিনি বাজেট উপস্থাপন করতে পারেননি।

 

পরে অর্থমন্ত্রীর হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন। বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআর সংগ্রহ করবে তিন লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৬২ দশমিক শতাংশ। অন্যদিকে প্রস্তাবিত বাজেটে অনুদান ছাড়া ঘাটতি ধরা হয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা।