ঢাকা, ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার, ২০২৪ || ১২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৬১৮

চারবোন দেখতে প্রায় একইরকম, বিপত্তিটা সেখানেই: বাড়িতে পুলিশের হানা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৭:৫৬ ২০ মার্চ ২০২০  

চারবোন দেখতে প্রায় একইরকম। আর এখানেই বাধলো বিপত্তিটা। 


মরণব্যাধী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ছে বাংলাদেশ। লড়ছে গোটা বিশ্ব। বিশেষ করে চীনের পর ইতালির পরিস্থিতি মাত্রাছাড়া। 
এ অবস্থায় ঢাকা থেকে বাবার বাড়ি বেড়াতে গেছেন লাবনী তাবাসসুম। সঙ্গে ছোট্ট ছেলে আর মা।  তারা টাঙ্গাইলের সখিপুরের গরগোবিন্দপুর গ্রামে যান ৯ মার্চ। 


এদিকে অতি সম্প্রতি ইতালি থেকে প্রচুর সংখ্যক প্রবাসী বাঙালি তড়িঘড়ি দেশে ফিরছেন। এর মধ্যে অনেকেই বিমানবন্দর থেকে সোজা গ্রামের বাড়ি অথবা নিজেদের সুবিধেমতো এলাকায় চলে যাচ্ছেন। মিশে যাচ্ছেন আত্মীয়-স্বজন-বন্ধু বান্ধব কিংবা অন্য নিকটজনদের সঙ্গে। কোয়ারেন্টিনের ধার ধরছেন না তাদের অনেকেই। মানছেন না নিয়ম-কানুন, আইন-বিধি। এদের অনেকেই করোনাভাইরাস ছড়ানোর জন্য দায়ী বলে মনে করছেন সবাই।


আশংকাজনক হলেও এ তালিকাটা বাড়ছে ক্রমেই। তাদের নিয়ে শংকায় দেশের সচেতন মহল। সরকারও তাদের তালিকা তৈরী করে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে। স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টিনে না যাওয়াদের এ তালিকায় কারা আছেন, তা খুঁজতে একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে নির্দেশনা পৌঁছে দিচ্ছে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর। 


কিন্তু বিদেশফেরত কিংবা করোনাআক্রান্ত না হয়েও বিড়ম্বনার মুখোমুখি হতে হয়েছে সখিপুরে বাবার বাড়ি বেড়াতে যাওয়া লাবনী ও তাদের পুরো পরিবারকে। রীতিমতো পুলিশ গিয়ে হাজির তাদের গ্রামের বাড়িতে। 

 

প্রতিবেশীদের মধ্যে কারো প্ররোচনা অথবা ভুল তথ্য সরবরাহের ফলে এমনটি হয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের ধারনা।  


লাবনী লাইফটিভি’কে জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে একদল পুলিশ গিয়ে তাদের গ্রামের বাড়িতে হানা দেয়। পুলিশ সদস্যরা বলেন, তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য (ইনফরমেশন) আছে যে, ইতালিফেরত প্রবাসী নারী ও পরিবার সদস্যরা ওই বাড়িতে লুকিয়ে আছেন। ইতালিফেরতদের বের হয়ে আসার জন্য বলেন তারা। 


লাবনী পুলিশ সদস্যদের বুঝানোর চেষ্টা করেন যে ইতালিফেরত কেউ ওই বাসায় নেই। প্রয়োজনে ইতালিপ্রবাসী বোনদের সঙ্গে ভিডিওকলে তাদের কথা বলিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করবেন তিনি। 


লাইফটিভি’কে পুরো ঘটনা তুলে ধরে লাবনী জানান, তার দুই বোন থাকেন ইতালির মিলানের সানরেমোতে। তাদের মধ্যে একজন শারমিন জাহান ঝুমুর। আর সব ছোট বোন নুশরাত শীতল-ও থাকেন সেখানেই। তিনি অবিবাহিতা। 


তাদের আরেক বোন তাবাসসুম তানজিলা স্বর্ণা স্বামী-সন্তানদের নিয়ে থাকেন লন্ডনে।  


কিন্তু ৩ বোনের পরিবারের সদস্যদের কেউই দেশে ফেরেন নি। বিশ্বজুড়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা কেউই দেশে ফিরবেন না আপাতত। এটাই তাদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু তারপরেও পোহাতে হলো এমন পুলিশি ঝামেলা। 


লাবনীর বক্তব্য হলো – বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। সুতরাং অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গেই বিষয়গুলো পরিচালনা করা দরকার। বিদেশফেরতদের সব তথ্যই রয়েছে বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ বা ইমিগ্রেশনে। সেখান থেকে তথ্য সংগ্রহের পরই যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে কারো বাসায় পুলিশ যেতে পারে। কিন্তু কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়াই এভাবে হুটহাট পুলিশি অভিযান জনমনে বিভান্তি ছড়াতে পারে।    
 

বাংলাদেশ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর