ঢাকা, ০৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ২০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৩৩৪

চোর-দুর্নীতিবাজ-লুটেরাদের দায় সাধারণ মানুষের ওপর চাপাবেন না

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০০:০২ ১৩ আগস্ট ২০২২  

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আরেকদিন বন্ধ! এমন আত্মঘাতী চিন্তার কোনো দরকার-ই নেই। এমন ধরনের অযৌক্তিক ভাবনা থেকে বের হয়ে আসুন প্রিয় নীতি-নির্ধারকরা। এমনিতেই শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে ৩টা মূল্যবান বছর হারিয়ে গেছে। তাই ক্ষতি পোষাতে তাদের যত বেশি পারা যায়, স্কুল -কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমের ভেতর নিয়োজিত রাখার ব্যবস্থা করুন।

 

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশ দিন নিয়মিত পাঠদানের সর্বোচ্চ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে। কারণ, শিক্ষার্থীরা গত ৩ বছরে অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত হয়েছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা এত সহজ নয়। অপূর্ণতা নিয়েই ওদের এখন এগিয়ে যেতে হচ্ছে।  সুতরাং, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের অজুহাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা দেয়ার চেষ্টা হবে পুরোপুরি আত্মঘাতি। বরং ছুটির দিনটিকেও কিভাবে কাজে লাগানো যায় সেটা ভাবুন।

 

এ মুহূর্তে কৃচ্ছতা সাধনের বিষয়টি শিক্ষার্থীদের বাইরেই থাকুক। বরং খুঁজে বের করুন বিদ্যুৎ - জ্বালানির কোথায় কোথায় অপচয় হচ্ছে। চুরি হচ্ছে কোথায় কোথায়। দুর্নীতি হচ্ছে কোথায় কোথায়। বিল খেলাপি রয়েছে কোথায় কোথায়। খেলাপির পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করুন। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করুন। বকেয়া আদায় নিশ্চিত করুন। সময় বেঁধে দিন বকেয়া/খেলাপি বিল আদায়ের। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাঠান। 

 

স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি - বেসরকারি - স্বায়িত্বশাসিত কিংবা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কাছে কত টাকা পাওনা আছে তার তালিকা তৈরি করে আদায়ের কার্যকর ব্যবস্থা নিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বয়ং বলে গেছেন, গরিব কৃষক ও সাধারণ মানুষ দুর্নীতি-অনিয়ম-লুটপাট করে না। 

 

সুতরাং, কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী-কর্মকর্তা-কর্মচারির অনিয়ম-দুর্নীতি-দায়িত্বহীনতা-অব্যবস্থাপনার অনিবার্য পরিণতি কিংবা দায় নিরাপরাধ সাধারণ মানুষের ওপর চাপিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার কৌশল মোটেও যৌক্তিক হবে না। সমর্থনযোগ্যও নয়।

 

আমার তো মনে হয় অনিয়ম-দুর্নীতি-চুরি স্থায়ীভাবে বন্ধ এবং খেলাপি বিল আদায় নিশ্চিত ও সরকারি কর্মচারিদের উচ্চাভিলাষ বন্ধ করা গেলেই পরিস্থিতি খুব সহজেই উতরানো সম্ভব।  আর সেটা করা গেলেই সাধারণ নিরাপরাধ মানুষের ওপর কোনোভাবেই দায় চাপানোর দরকার হবে না‌।

 

বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধার মোক্ষম সময় এখন-ই! আর সেটা সঠিকভাবে করতে পারলে সরকার তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জন্য ইতিহাসের পাতায় চির ভাস্বর হয়ে থাকার মুকুটে আরেকটি অনন্য পালক যুক্ত হবে।

 

লেখক: আনোয়ার হক 

সাংবাদিক ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ

মুক্তমত বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর