ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৪০৭

ছোট মাছের কত পুষ্টি না জানলে পস্তাবেন

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:৫৮ ১০ মার্চ ২০২১  

'মাছে ভাতে বাঙালি' এ বিখ্যাত প্রবচন থেকে বোঝা যায় মাছ আমাদের খাদ্য হিসেবে প্রিয় ও আকর্ষণীয়। আমাদের দেশে ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের মাছ পাওয়া যায়। ছোট মাছের মধ্যে পুঁটি, ট্যাংরা, মলা, ঢেলা, চেলা, কাচকি, ফলি ইত্যাদি জনপ্রিয়। আকারে ছোট হলেও পুষ্টিতে এসব মাছ কিন্তু ক্ষুদ্র নয়। পুষ্টিগুণের দিক থেকে বিচার করলে দেখা যায় বড়, মাঝারি বা ছোট মাছে তেমন কোনো তফাৎ নেই। 


তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে ছোট মাছে পুষ্টির পরিমাণ বেশি পাওয়া যায়। কেননা এসব কাঁটাসহ খাওয়া যায়। বড়গুলোর তা খাওয়া সম্ভব হয়ে উঠে না। ছোট মাছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই বললেই চলে। সেসব খেতে হবে কাঁটাসহ ও চিবিয়ে। তাতে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। ছোট মাছের অসম্পৃক্ত চর্বি উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগসহ বিভিন্ন জটিল এবং ঝুঁকিপূর্ণ রোগ থেকে শরীরকে রক্ষা করতে পারে। কাজেই এসব নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত।


ছোট মাছের পুষ্টিগুণ
পানীয় অংশ ৭৫.০ গ্রাম, খনিজ পদার্থ ১.৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১১০ মিলিগ্রাম, প্রোটিন বা আমিষ ১৮.১ গ্রাম, চর্বি ২.৪ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ৩.১ গ্রাম, ভিটামিন-সি ১৫ মিলিগ্রাম, লৌহ বা আয়রন ১.০ মিলিগ্রাম, এনার্জি ১০৬ কিলোক্যালরি।


ছোট মাছের উপকারিতা-

# ছোট মাছে আছে প্রচুর ক্যালসিয়াম। এগুলো ক্যালসিয়ামের অনন্য উপাদান। মলা, ঢেলা, চাঁদা, ছোট পুঁটি, ছোট চিংড়ি, কাচকি ইত্যাদিতে প্রচুর ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং ভিটামিন 'এ' বিদ্যমান। মানবদেহে দৈনিক প্রচুর ক্যালসিয়ামের চাহিদা থাকে। বিশেষ করে বাড়ন্ত শিশু, গর্ভবতী মা এবং প্রসূতি মায়েদের এর চাহিদা আরও বেশি। হাড় ও দাঁত গঠনে তা অত্যন্ত দরকারি। তাই প্রতিদিন আমাদের ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ ছোট মাছ খাওয়া উচিত।


# উঠতি বয়সী শিশুদের জন্য প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন-সি, ভিটামিন বি-৩ এবং ভিটামিন-ডি যুক্ত গুঁড়া মাছ খুবই উপকারী। এগুলো শারীরিক গঠন মজবুত করে।


# ছোট মাছে অসম্পৃক্ত চর্বি আছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এছাড়া আয়রন, প্রোটিন, ফসফরাস, ভিটামিন-এ, ভিটামিন বি২, ফ্যাটি অ্যাসিড, লাইসনি ও মিথিওনিনেরও ভালো উৎস সেগুলো। যাদের শরীরে এসবের ঘাটতি রয়েছে, তারা নিঃসন্দেহে এ জাতীয় মাছ খেতে পারেন।


# ছোট মাছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-এ থাকে, যা রাতকানা, অন্ধ হয়ে যাওয়া ছাড়াও দৈনন্দিন অনেক শারীরিক সমস্যা দূর করতে সক্ষম। শিশুদের রাতকানা রোগ ঠেকাতে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ মলা, ঢেলা ও গুঁড়া মাছ খাওয়া হবে। দৃষ্টিশক্তির জন্যও গুঁড়া মাছ খুবই উপকারী।


# যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ গুঁড়া মাছ তাদের ব্লাডপ্রেসার কমাতে সাহায্য করে।


# ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খনিজ লবণ সমৃদ্ধ ছোট মাছ ভীষণ উপকারী। হৃদরোগী, স্ট্রোকের রোগী, গর্ভবতী মা ও দুগ্ধদানকারী মায়ের জন্য এগুলো খুবই কার্যকরী।


প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ছোট মাছ রাখুন। পরিবারের সবাই এই খাবারে অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে পরিবার অনেক রোগ থেকে রেহাই পাবে। তবে গুঁড়া মাছে ফসফরাসের পরিমাণ বেশি থাকায় কিডনী রোগিদের তা কম খাওয়া ভালো। এতে ইউরিক অ্যাসিড বেশি বলে গেঁটে বাতের রোগীদের কম খাওয়া শ্রেয়।