ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৪৯৯

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও ওজন কমায় আখের রস!

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:৪১ ২২ নভেম্বর ২০২০  

শীতকাল হোক কিংবা গরমকাল সবসময়ই আখের রস পাওয়াই যায়। এক গ্লাস পান করলেই ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। তাই একে প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিঙ্ক বলা হয়। শুধু ক্লান্তি দূর করতেই নয়, ত্বক ও শরীরের জন্যও উপকারি এটি।

 

নাছোড় ব্রণের হাত থেকে মুক্তি দিতে পারে আখের রস। মুলতানি মাটির সঙ্গে প্যাক তৈরি করে সপ্তাহে তিনবার মুখে লাগালে তৈলাক্ত ত্বক ঝকঝকে পরিষ্কার হয়ে ওঠে৷ আখে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকে। তাই নিয়মিত তা পান করলে দাঁত, নখ ও হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। এটি চিবিয়ে খেলে মাড়ির স্বাস্থ্য ভালো থাকে, দাঁতের ক্ষয়রোধ হয় এবং মুখের দুর্গন্ধ কমে যায়৷ 

 

আখের রসের আরও উপকারিতা-


ডায়াবেটিস দূরে রাখে

খেতে মিষ্টি হলেও এটি ডায়াবেটিসের পক্ষে খুবই কার্যকরী। এতে জিআই’র পরিমাণ খুব কম থাকে। ফলে ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত আখ খেতে পারেন। গ্লাইসেমিক ইনডেক্সে একেবারে কম থাকায় আখের রস পান করলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না। বরং এই প্রকৃতিক উপাদান গ্রহণ করলে সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত তা পান করার পরামর্শ দেয়া হয়। 

 

তবে ডায়াবেটিকদের চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে আখের রস পান করা উচিত। কারণ, জেনে নেয়া উচিত এটি পান করলে তাদের শরীরে আর কোনও সমস্যা হওয়ার শঙ্কা থাকে কি না।

 

হৃদরোগ উপশম
একাধিক গবষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন আখের রস পান করলে একাধিক রোগ ধারেকাছে ঘেঁষতে পারে না। আজ যেসব রোগ আমাদের ঘিরে ধরেছে, প্রায় সবকটির প্রকোপ কমাতে এর বিকল্প নেই।েএতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, জিঙ্ক, পটাশিয়াম এবং অন্যান্য উপাদান নানাভাবে শরীরের উপকারে লাগে। হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে এই রস। হার্ট অ্যাটাক রুখতেও সাহায্য করে। শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের নিঃসরণ কমাতেও সহায়তা করে।


ওজন কমায়
আখের রস মিষ্টি হলেও ওজন কমাতে ভূমিকা রাখে। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এমনকি কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে দেয়।

 

ত্বকের যত্নে
আখের রস ত্বকের পক্ষে খুবই উপকারি। এতে আলফা হাআইড্রক্সি অ্যাসিড থাকে, যা ব্রণ, বলিরেখা দূর করে ত্বককে হাইড্রেট করে। না পান করে মুখে মাস্ক হিসেবে লাগালে ত্বকের রুক্ষতা দূর হয়। একে উজ্জ্বল ও সতেজ করে তোলে।

 

হজমশক্তি বাড়ায়
এতে পটাসিয়ামের পরিমাণ অনেক। ফাইবারও যথেষ্ট পরিমাণে থাকে। ফলে আখের রস পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দূর হয়। হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। গরমকালে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দেখা যায়। এটি তা দূর করতে সক্ষম। পেটের ইনিফেকশন রুখতেও কার্যকরি ভূমিকা পালন করে এই রস।


কয়েকটি বিষয়ে সতর্ক থাকুন
বাজারে আখের রস তৈরির মেশিনগুলো সচল রাখার জন্য নিয়মিত তেল দেয়া হয়। তা রসে মিশে মারাত্মক বিপদ ঘটাতে পারে৷ এরচেয়ে আখের খোসা ছুলে বাড়ি আনুন। ভালো করে ধুয়ে শুকনো করে ফ্রিজে রাখুন৷ রস পান করার আগে ছোট ছোট করে কেটে ব্লেন্ডারে পিষে নিন। হ্যাঁ, সামান্য আদা দিতে ভুলবেন না। 

 

তারপর ছিবড়ে হাত দিয়ে চেপে চেপে রস নিংড়ে বের করে নিতে হবে৷ সামান্য বিট লবণ ও লেবুর রস যোগ করে পান করুন৷ অন্য কোনও ফলের রসের সঙ্গে মিশিয়ে সুস্বাদু মকটেলও তৈরি করতে পারেন৷


আখের রস সদ্য তৈরি করে নিতে হবে৷ ফ্রিজে রাখলে ঘণ্টা দু’য়েক পরও পান করা চলে। কিন্তু এরপর একেবারেই চলবে না। কারণ রসে এর মধ্যেই রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু হয়ে যায়৷


যারা প্রতিদিন আখের রস পান করেন। তারা দিনে দু’ গ্লাসের উপরে উঠবেন না৷ একমাত্র জন্ডিস রোগী ছাড়া কারো দিনে দু’ গ্লাসের বেশি আখের রসের প্রয়োজন হয় না৷