ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৯৫০

দাঁত দিয়ে নখ কাটা! আর না

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:৩২ ৩০ এপ্রিল ২০২১  

অনেকেই দাঁত দিয়ে নখ কাটেন। এটি খুবই অস্বাস্থ্যকর বদভ্যাস। জানেন কি এতে স্বাস্থ্যের কতটা ক্ষতি হয়? এজন্য মারাত্মক রোগ হতে পারে। কাজ করার জন্য হাত আমাদের প্রধান অঙ্গ। বিভিন্ন কাজের সময় বিভিন্ন ধরনের রোগ-জীবাণু, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ইত্যাদি শরীরে প্রবেশ করতে পারে দাঁত দিয়ে নখ কাটার মাধ্যমে। 


হাত ভালোভাবে ধুয়ে ফেললেও অনেক সময় নখের আনাচে-কানাচে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর জীবাণু লুকিয়ে থাকতে পারে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস ত্যাগ করার কিছু উপায়-


দাঁত দিয়ে নখ কাটার কারণ
অবিরত দাঁত দিয়ে নখ কাটা নখের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এতে নখের পার্শ্ববর্তী চামড়াগুলো ড্যামেজ হয়ে যাওয়া একটি গ্রুমিং ডিজর্ডার। একে বলা হয় অনিকোফেইজিয়া। 


শিশুদের মধ্যে দাঁত দিয়ে নখ কাটার ব্যাপারটি বেশি লক্ষ্য করা যায়, যখন তারা উদ্বেগ বা বিরক্তিতে ভোগে। কিছু শিশু ঝোঁকের বশেও এই কাজটি করে। এছাড়া নখ কামড়ানোর বিভিন্ন সম্ভাব্য কারণগুলো হলো-


১. প্রভাবিত ব্যক্তির বাবা বা মায়েরও এ অভ্যাস ছিল বা আছে।
২. ইমোশনাল বা মানসিক চাপ
৩. নার্ভাসনেস
৪. উদ্বেগ


৫. বিরক্তি
৬. ক্ষুধা
৭. নিরাপত্তাহীনতা


দাঁত দিয়ে নখ কাটার ক্ষতিকর দিক
১. যদি দাঁত দিয়ে নখ কাটেন, তাহলে এতে নখ স্বাভাবিক আকার হারিয়ে ফেলে। সৌন্দর্য নষ্ট হয়।
২. দাঁত দিয়ে নখ কাটার কারণে চোয়ালের পাশাপাশি দাঁতও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এমনকি অনেক সময় দাঁত ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।


৩. এটা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে সহায়তা করতে পারে। কারণ, হাত জীবাণুর আখড়া ছাড়া আর কিছুই নয়। এই জীবাণু পুরোপুরি নখে লুকানো থাকতে পারে। যখন নখ কামড়াবেন, তখন এই জীবাণু শরীরে প্রবেশ করবে। অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়াবে।


৪. এই বদভ্যাস সামাজিকভাবেও বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে পারে। অন্যদের উপস্থিতিতে নখ কামড়ানো বাজে অভ্যাস। এটি সামাজিক আচরণ লঙ্ঘন করে।
৫. এটি নখের ছাড়া আশেপাশের টিস্যুর ক্ষতি করতে পারে। এছাড়া নখ ঠিকমতো বৃদ্ধি পাওয়ার হারও কমিয়ে দিতে পারে।


৬. দাঁত দিয়ে নখ কাটার কারণে দাঁতের মাড়ির ক্ষতি হতে পারে। ওরাল ইনফেকশন, ওরাল ড্যামেজ ইত্যাদি হতে পারে। এমনকি নখের আঘাতে মুখে ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে।


দাঁত দিয়ে নখ কাটা প্রতিরোধের উপায়
এই বদভ্যাস ত্যাগ করার জন্য কিছু উপায় রয়েছে যা খুব সহজেই এটি প্রতিকার করতে সক্ষম। চলুন জেনে নেয়া যাক-


১. নখ সবসময় ছোট করে কেটে রাখা এবং পরিষ্কার রাখা। ২. নিজের হাত ও নখ সবসময় যত্নে রাখুন ম্যানিকিউর-এর মাধ্যমে। ম্যানিকিউর শুধু হাতের সৌন্দর্যই বাড়িয়ে তোলে না। এমনকি নখগুলোকেও সুন্দর ও চকচকে রাখে। নখ সুন্দর থাকলে দাঁত দিয়ে কাটার কোনও প্রশ্নই আসে না!


৩. এটা শুনতে একটু অদ্ভূত শোনালেও পদ্ধতিটা বেশ কার্যকরী। নখে স্টিকার ব্যবহার করলে বা হাতে গ্লাভস পরিধান করলে নিজেকে নখ কামড়ানো থেকে বিরত রাখতে পারা যায়।


৪. হাত ও মুখ ব্যস্ত রাখুন সবসময়। নখ কামড়ানোর অভ্যাস থেকে নিজেকে মুক্ত করতে মুখে চুইংগাম নিয়ে সারাক্ষণ চিবুতে পারেন। হাতে কাজ না থাকলে একটি বল বা যেকোনও কিছু নিয়ে হাতকে ব্যস্ত রাখতে পারেন। এভাবে এক সপ্তাহ নিজেকে ব্যস্ত রেখে অভ্যাসটি দূর করতে পারেন।


৫. তেতো স্বাদের নেইল পলিশের ব্যবহার খুব ভালো পদ্ধতি। এটি নখ কামড়ানো থেকে বিরত রাখতে সহায়তা করবে। এতে নখগুলোও সুন্দর লাগবে দেখতে। আর নিজেকে সংযত রাখতে পারবেন।


৬. কখন দাঁত দিয়ে নখ কামড়ান? যখন বোরিং ফিল করেন? যখন বিরক্ত থাকেন? নাকি যখন অন্যমনস্ক হয়ে কিছু ভাবেন? অথবা যখন উদ্বিগ্ন থাকেন তখন? আসলে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দাঁত দিয়ে নখ কাটে; যখন তারা বোরিং ফিল করে, ক্ষুধার্ত থাকে, স্ট্রেস ফিল করে এবং নার্ভাস থাকে। তাই এই বদভ্যাস দূর করার জন্য নিজেকেই সচেতন হতে হবে।