ঢাকা, ২৩ নভেম্বর শনিবার, ২০২৪ || ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
১৯৯০

নিষেধাজ্ঞার কারণে আমদানি করা যাবে না চাল-গমসহ ২৫ পণ্য

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:০৩ ৯ আগস্ট ২০২৩  

খাদ্য ও কৃষিপণ্য আমদানির ব্যাপারে দুঃসংবাদ দিলো ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউট- আইএফপিআরআই। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে ১৯টি দেশ থেকে কেনা যাবে না ২৫টি পণ্য। এই তালিকায় আছে চাল, চিনি, ময়দা, গম আর সার। ফলে অভ্যন্তরীণ ভোগ্যপণ্যের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। উৎপাদনে উদ্বৃত্ত, তবু বাজার স্থিতিশীল রাখতে গতবছর শুধু চাল আমদানি করা হয়েছিলো সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার। 

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২২ সালে বিদেশ থেকে গম, চিনি, সারসহ ৯ টি খাদ্য ও কৃষিপণ্য আনতে গুণতে হয়েছে মোট ১ হাজার কোটি ডলার। টাকার অংকে যা ১ লাখ কোটিরও বেশি। পরের বছরেই বেড়েছে এই পরিমাণ। যোগ হয়েছে আরও ৩ হাজার কোটি। যা চলতি বাজেটের ১৪ ভাগ।

 

দেশে খাদ্য আমদানির যখন এই দশা  তখন দুঃসংবাদ দিলো ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউট। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তারা বলছে, ১৯টি দেশ থেকে এখন আর কেনা যাবে না ২৫টি কৃষিপণ্য। কারণ, এসবের ওপর আরোপ করা হয়েছে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা। এরফলে ভারত থেকে চাল-চিনি-ময়দা, ইউক্রেন থেকে গম-সার আর চায়না থেকে ফসফেট রক সহজে কেনা যাবে না ।

 

বিশ্লেষকরা বলছেন, নানাকারণেই গোটাবিশ্বে কমে গেছে খাদ্য উৎপাদন। এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সরবরাহ। আর তাই তৈরি হয়েছে এমন শঙ্কা। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বাজারে।

 

সাপ্লাই চেইন বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ মজিবুল হক বলেন, আমাদের মুদ্রস্ফীতি ইতিমধ্যেই অনেক বেশি এই নিষেদাজ্ঞার ফলে মুদ্রস্ফীতি আরও বেরে যাবে এবং আমাদের অর্থনীতিতে বাজে প্রভাব ফেলবে। দিনশেষে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পরবে।

 

তবে এই ঝুঁকিতে অনেকটা ইচ্ছে করেই যে ঝুঁকছে সরকার তা বুঝা গেলো সাবেক কৃষি সচিব  আনোয়ার ফারুক কথায়।তিনি বলেন, সদিচ্ছা থাকলেই এড়ানো সম্ভব আসন্ন এই সংকট। আমরা যদি স্থানীয় ভাবে চাল সংগ্রহ ঠিকভাবে করতে পারি তাহলে আমদের চাল আমদানির প্রয়োজন হয় না। বোরো মৌসুমে অতিরিক্ত যে ফলন হয় । সরকার যদি অধিক দামে কৃষকের থেকে ধান কিনে কম দামে ভোক্তাদের বিক্রি করে তাহলেই হয়ে যায়।  ২৪ থেকে ৩০ লক্ষ টন চাল সরবরাহ সরকারের জন্য কঠিন কিছু  বলে আমি মনে করি না ।

 

একসময় চিনি ও সার উৎপাদনেও স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিলো দেশ। কিন্তু একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই দুই খাতেও বেড়েছে পরনির্ভরশীলতা। তাই খামখেয়ালী না করে পুনরায় এসব চালুর পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।

 

অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব আলী বলেন, কৃষি পণ্যের জন্য যে সারের প্রয়োজন তা আমদানি না করে দেশের মধ্যে উৎপাদনের করার ব্যবস্থা করতে হবে। সার উৎপাদন করতে গেলে নতুন করে কলকারখানা চালু করতে হবে। সঠিকভাবে সঠিক মাত্রায় সার উৎপাদন করতে পারলে কৃষি পণ্যের ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার যে ধরনের সুযোগ দিচ্ছে তা বহাল থাকবে।  

শুধু বাংলাদেশ নয়, এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়বে উন্নয়নশীল আরও অনেক দেশেই, বলছে ইফ্রি। উৎপাদনে উদ্বৃত্ত, তবু বাজার স্থিতিশীল রাখতে গেলোবছর কেবল চাল আমদানি করা হয়েছিলো সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার।