ঢাকা, ০৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ২০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৫২৩

পাকিস্তানি শাসকের ষড়যন্ত্রের আভাস পেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু

আকবর হোসেন সুমন

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১১:৪১ ১ মার্চ ২০২২  

একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনীর কাছে পাকবাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল। ৯ মাস ধরে চলে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম। মর্মান্তিক এই প্রেক্ষাপটের আগে বাঙালি তৈরি করেছিল ধারাবাহিক সংগ্রামের পটভূমি। 

 

১৯৬৯ এর গণ-অভুত্থানে আইয়ুব খান পদত্যাগ করেন। ক্ষমতায় আসেন সেনাপ্রধান ইয়াহিয়া খান। দেন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আশ্বাস। ১৯৭০ সালের ২৬ মার্চ বেতার ভাষণে পরবর্তি নির্বাচন এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন।

 

টানাপোড়েনের ওই নির্বাচনে ১৬৯ আসনের ১৬৭টিতেই জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে ৩০০ আসনের ২৮৮ আসন নিয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় আওয়ামী লীগ।

 

মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিক হারুন হাবীব বলেন, “১৯৭০ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান মিলিয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে।” 

 

সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতৃত্বে সরকার গঠন ন্যায়সঙ্গত হলেও সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি করেন। 

 

হারুন হাবীব বলেন, “গণতান্ত্রিক প্রথা মেনেই বঙ্গবন্ধু হবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ শাসন করবে পাকিস্তান রাষ্ট্র। কিন্তু কোন বাঙালি কখনও পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতা নিবে এটা পশ্চিম পাকিস্তানের কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠী এবং আমাদের এখানকার যারা তাদের পদলেহী রাজনীতিবীদ এরা কখনও মানতে পারেনি। ওরা ভাবতেই পারেনি যে ৬ দফার ভিত্তিতে ১৯৭০ এর এই নির্বাচনে এমন গণরায় লাভ করবে।”

 

বঙ্গবন্ধু বুঝে নিয়েছিলেন বাঙালির অধিকার আদায়ে আন্দোলন সংগ্রামের বিকল্প নেই। স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ৩রা মার্চ পল্টনের সমাবেশে পঠিত হয় স্বাধীনতার ইশতেহার। কর প্রদান বন্ধ, অফিস-আদালতে হরতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধসহ ৮ দফা কর্মসূচিতে ওইদিনই অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।

 

স্বাধীনতার ইশতেহারে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ ঘোষণার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে দেয়া হয় জাতির পিতা উপাধি।  

 

আন্দোলনের মুখে ইয়াহিয়া খান ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদ অধিবেশন ডাকতে বাধ্য হয়। এর আগে শেখ মুজিবসহ ১২ নেতাকে আহবান জানায় ঘরোয়া বৈঠকে অংশ নেয়ার। 

 

পাকিস্তানি শাসকের ষড়যন্ত্রের আভাস পেয়েছিলেন অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। রেসকোর্সে আগত জনতার উদ্দেশ্যে দেয়া জ্বালাময়ী ভাষণে বঙ্গবন্ধু তুলে ধরেন শোষণের কথা। চলমান সামরিক আইন প্রত্যাহার, পাকিস্তানী সৈন্য প্রত্যাহার, গণহত্যার তদন্ত শেষে বিচার এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি উঠে আসে ঐতিহাসিক ভাষণে। আর সে ভাষণেই প্রোজ্বল ছিল সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরার ইঙ্গিত। ছিল স্বাধীনতার স্পষ্ট ধারণা।

মুক্তমত বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর