ঢাকা, ২২ নভেম্বর শুক্রবার, ২০২৪ || ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৮২৭

পুরুষের তুলনায় নারীদের মাইগ্রেন বেশি হয় কেন?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০০:৩১ ১৮ আগস্ট ২০২৩  

মাইগ্রেন পুরুষের তুলনায় নারীদের বেশি হতে দেখা যায়। এ নিয়ে কাজ করেছেন বেশ কয়েকজন গবেষক।স্পেনের এলচে ইউনিভার্সিটাস মিগুয়েল হার্নান্দেজের বিজ্ঞানীদের ২০১৮ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, মাইগ্রেন মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং সেক্স হরমোন এতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মলিকুলার বায়োসায়েন্সেস জার্নালে ফ্রন্টিয়ার্সে প্রকাশিত এই ফলাফলটি মাইগ্রেনের ওপর এমন কয়েকটি গবেষণার মধ্যে একটি।

 

মাইগ্রেন কী?

মাইগ্রেন হলো এক ধরনের মাথাব্যথা যা মাথার একপাশে প্রচণ্ডভাবে অনুভূত হয়। এই ধরনের মাথাব্যথায় মাথার একটি অংশে ধাক্কা দেওয়ার মতো অনুভূতি হয়। মাইগ্রেন কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন স্থায়ী হয় এবং এর সাথে যুক্ত ব্যথা এতটাই তীব্র যে এটি জীবনযাপনও স্থবির করে দিতে পারে। বমি বমি ভাব, বমি এবং আলো ও শব্দের প্রতি চরম সংবেদনশীলতা- এগুলো হতে পারে মাইগ্রেনের লক্ষণ।

 

মাইগ্রেন কি না জানবেন কীভাবে?

মাইগ্রেন সবার ক্ষেত্রে একইভাবে অনুভূত হয় না। এর লক্ষণগুলো নির্দিষ্ট নয় এবং ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে পরিবর্তিত হয়। তবে বেশিরভাগের ক্ষেত্রে মাথার একপাশ থেকে প্রচণ্ড মাথা শুরু হয়ে ধীরে ধীরে তা ঘাড় পর্যন্তও ছড়িয়ে যেতে পারে। এছাড়া আলোর দিকে তাকানোর ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে, গরম এবং ঠান্ডায়ও সমস্যা বাড়তে পারে।

 

মাইগ্রেনের ক্ষেত্রে লিঙ্গ ব্যবধান কেন?

হরমোন, বিশেষ করে ইস্ট্রোজেন, মাইগ্রেনের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মাসিক চক্রের চক্রাকার প্যাটার্ন, গর্ভাবস্থায় ঘটে যাওয়া পরিবর্তন এবং মেনোপজের ট্রানজিশনাল পর্যায়গুলোর কারণে নারীরা বেশি ঝুঁকির মধ্যে পড়েন। ইস্ট্রোজেনের মাত্রায় পরিবর্তন, যেগুলো মাসিক চক্র, গর্ভাবস্থা এবং মেনোপজের সময় ঘটে, কিছু নারীর মাইগ্রেনকে ট্রিগার করতে পারে বা বাড়িয়ে দিতে পারে।

 

অন্যান্য কারণ কী?

বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্যান্য কারণ যেমন মানসিক চাপ, অনিয়মিত ঘুম, খাদ্যাভ্যাস এবং অন্যান্য জীবনযাপন সংক্রান্ত কারণে নারীদের মাইগ্রেন দেখা দিতে পারে। গবেষণায় বলা হয়েছে যে, পুরুষের তুলনায় নারীদের ব্যথার প্রতি উচ্চ সংবেদনশীলতা থাকতে পারে। এই উচ্চতর সংবেদনশীলতা নারীদের মধ্যে মাইগ্রেনের ক্রমবর্ধমান ফ্রিকোয়েন্সিতে অবদান রাখতে পারে। এছাড়া সামাজিকও সাংস্কৃতিক কারণ, যেমন চাপ নেওয়া এবং মোকাবিলা করার প্রক্রিয়া, এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাব পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।

 

মাইগ্রেন হলে ব্যথা কীভাবে কমানো যায়?

মাইগ্রেনের আক্রমণ অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে। এই মাথাব্যথার চিকিৎসার প্রথম এবং প্রধান উপায় হলো, আপনার মধ্যে মাইগ্রেনের কারণ কী তা বোঝা। স্ট্রেস, খাবার, ক্ষুধামন্দা, ক্যাফেইন, সংবেদনশীলতা, ওষুধ, শারীরিক কার্যকলাপ এবং ঘুমের ধরনে পরিবর্তন অনেকের মধ্যে মাইগ্রেনকে ট্রিগার করে। এগুলো এড়িয়ে চললে দ্রুত সুফল পাবেন। এছাড়া কিছু ওষুধ আছে যা মাইগ্রেনের প্রভাব কমায়।

 

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তা খেতে পারেন। ব্যথা কমাতে আপনার মাথা এবং ঘাড়ে গরম বা ঠান্ডা প্যাক রেখে তাপমাত্রা থেরাপি দিতে পারেন। কফি খান, লাইট বন্ধ করুন, অন্ধকার ঘরে বিশ্রাম নিন, ধীর তালের কোনো গান শুনতে পারেন, নিয়মিত ঘুমের সময় বজায় রাখুন, যেসব খাবার খেলে মাইগ্রেন বাড়তে পারে তা এড়িয়ে যান এবং উৎপাদনশীল কাজে নিয়োজিত হোন।