ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২২৫

প্রেসিডেন্ট রাইসির উত্থান-পতন

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৫:১৯ ২১ মে ২০২৪  

ইব্রাহিম রাইসি। ইরানের প্রেসিডেন্ট। রোববার আজারবাইজানের একটি সীমান্তবর্তী এলাকায় জলাধার প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তার হেলিকপ্টার। কপ্টার দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ইরানের প্রেসিডেন্টের। ওই হেলিকপ্টারটিতে ছিলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানসহ কয়েকজন বড় মাপের ইরানি নেতাও। তিন বছর আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া ইব্রাহিম রাইসি (৬৩)কে মনে করা হতো একদিন তিনি দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির উত্তরসূরি হবেন।

 

ইব্রাহিম রাইসির জন্ম ১৯৬০ সালে উত্তর-পূর্ব ইরানের পবিত্র শহর মাশহাদে। মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি তেহরানের পার্শ্ববর্তী শহর কারাজের প্রসিকিউটর জেনারেল হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত তিনি তেহরানের প্রসিকিউটর জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০০৪ সাল থেকে তিনি এক দশক জুডিশিয়াল অথরিটির উপ-প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।

   

এই ক্ষমতায় থাকাকালীন  তিনি বিচার বিভাগ ও প্রশাসনের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৪ সাল থেকে মার্চ ২০১৫ পর্যন্ত তিনি ইরানের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে তাকে বিচার বিভাগের প্রধান (প্রধান বিচারপতি) নিযুক্ত করেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। রাইসি  বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে নিযুক্ত ছিলেন মুক্তিপ্রাপ্ত বা নির্বাসিত বিপ্লবীদের  সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলতেন। ১৯৮৮ সালে পাঁচ মাস ধরে তিনি রাজনৈতিক বন্দিদের মৃত্যুদণ্ড তত্ত্বাবধানকারী কমিটির অংশ ছিলেন।

 

এর ফলে রাইসি ইরানের বিরোধীদের মধ্যে  জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে আলেমদের অবস্থান সহ উল্লেখযোগ্য সমাবেশে অংশগ্রহণ করতেও দেখা গেছে রাইসিকে।  কট্টরপন্থি হিসেবে পরিচিত রাইসি পরে ৮৮ সদস্যের বিশেষজ্ঞ সভার উপ- চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন। সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা নির্বাচন সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে এই সভা। তার মেয়াদে, রাইসি বিচার বিভাগীয় সংস্কারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছেন, অর্থনৈতিক দুর্নীতিকে নির্মূল করার চেষ্টা করেছেন এবং বিচারিক দক্ষতা বৃদ্ধি করে আয়াতুল্লাহ খামেনির প্রশংসা অর্জন করেছেন।

 

২০২১ সালের জুনে প্রেসিডেন্ট  নির্বাচনে রাইসি ১৮ মিলিয়নেরও বেশি ভোট পেয়ে  ইরানের ১৩তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত  হন। তিনি সরকার, সামরিক এবং আইনসভার সমস্ত শাখার পাশাপাশি শক্তিশালী ধর্মতান্ত্রিক শাসক শ্রেণির সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতেন। ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে ইব্রাহিম রাইসির হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা কি পরিণতি ডেকে আনে সেটাই দেখার বিষয়।

বিশ্ব বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর