ঢাকা, ২৩ নভেম্বর শনিবার, ২০২৪ || ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২৮৯৯

বঙ্গবন্ধু ট্রাই টাওয়ারে যা থাকছে

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৫:৫৪ ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০  

সুউচ্চ অট্টালিকার নান্দনিকতায় কারো ভালো লাগা কাজ করে না-এমন মানুষ খুবই কম পাওয়া যাবে পৃথিবীতে। এ যেমন ধরেন মনোরম ভবনের কথা বললে আমাদের মনে আসে দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা, চীনের সাংহাই টাওয়ার, সৌদি আরবের মক্কা ক্লক টাওয়ার, আমেরিকার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ইত্যাদি। এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় টাওয়ার হলো মনোমুগ্ধকর বুর্জ খলিফা। তো এমন কোনো বিল্ডিংয়ের মালিক হতে চাওয়া বাংলাদেশের মতো দেশের জন্য কি বিলাসিতা? না, অবশ্যই না।

 

একটি দেশের আধুনিকায়ন করতে যেমন সুষম উন্নয়ন প্রয়োজন, ঠিক তেমন একটি মেজর সিটি থাকা লাগে। যেটি দিন শেষে ওই নির্দিষ্ট শহরকে রিপ্রেজেন্ট করবে দেশে এবং দেশের বাহিরে। আমাদের রাজধানী ঢাকার কথা যদি চিন্তা করি, বর্তমানে এটি বিশ্বে বসবাসের অযোগ্য নগরীর একটি। এখন এর আধুনিকায়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। যেমন-মেট্রোরেল, বিআরটি, বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের উন্নয়ন, ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রভৃতি অবকাঠামো উন্নয়নে জোরেশোরে কাজ হচ্ছে। যখন বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান হবে; তখন এ আধুনিকায়নকে ফুটিয়ে তুলবে একটি নির্দিষ্ট সিটি। দিনশেষে সেগুলো আধুনিক ঢাকাকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবে।

 

একটি দেশের অর্থনীতি টেকসই নাকি ভঙ্গুর তা নির্ভর করে এসব মেগা প্রকল্পের ওপর। দুবাই বা চীন কিংবা আমেরিকার অর্থনীতির উন্নতির পেছনে প্রকল্পগুলোর অবদান কম কিসে? নতুন কোনো বিনিয়োগকারী বা পর্যটক যখন বাংলাদেশ নিয়ে জানতে চাইবে, দিনশেষে এসব অবকাঠামো তাদের আকৃষ্ট করবে। বহির্বিশ্বে বর্তমানে হাজারো পর্যটক দুবাই কিংবা মালয়েশিয়া যায় শুধু বুর্জ খলিফা অথবা পেটরনাস টুইন টাওয়ারের সঙ্গে একটি ছবি তুলতে! যুগের পরে যুগ এসব অবকাঠামো একটি শহরের পরিচয় বহন করে এবং হয়ে ওঠে নান্দনিকতা ও আভিজাত্যের প্রতীক।

 

এবার আলোচনা করি বাংলাদেশের স্বপ্নের "বঙ্গবন্ধু ট্রাই টাওয়ার" প্রকল্প নিয়ে। এটি গড়ে উঠছে ঢাকার অদূরে পূর্বাচলে। যেখানে এ প্রকল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠবে একটি স্মার্ট সিটি। তিনটি সুউচ্চ টাওয়ারকে কেন্দ্র করে থাকছে নান্দনিক স্টেডিয়াম, হাসপাতাল, বিজনেস সেন্টার, আধুনিক ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ইত্যাদি। প্রকল্পের মূল আকর্ষণ "বঙ্গবন্ধু ট্রাই টাওয়ার" এ থাকছে ভাষা আন্দোলনের স্মরণে ৫২ তলা, মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে ৭১ তলা এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লিগ্যাসি স্মরণে ১১১ তলা বিল্ডিং। 

 

এ তিন টাওয়ারের চারদিকে ৪৯ তলার আরো ৪০টি ভবন নির্মিত হবে। যদিও পূর্বের নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান কেপিসি গ্রুপের পরিবর্তন হলে তাদের ডিজাইন করা ১৪২ তলার টাওয়ার "৭১" এ পরিবর্তন আনা হয়। এছাড়া প্রশাসনিক কারণ এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অসম্মতিও ডিজাইন পরিবর্তনে দায়ী ছিল।

 

বর্তমান প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে শিকদার গ্রুপের সিস্টার কোম্পানি পাওয়ার প্যাক হোল্ডিংস লিমিটেড এবং জাপানের কাজিমা কর্পোরেশনের মাধ্যমে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৪ সালে সেটি দৃশ্যমান হওয়া শুরু করবে। এখন প্রকল্পের পাইলিংয়ের কাজ চলছে পুরোদমে। এর তদারকির দায়িত্বে আছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।

 

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৬,০০০ কোটি টাকা। এতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী দেশগুলো হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ফিলিপাইন। ইতোমধ্যে প্রকল্পের মোট প্রস্তাবিত ব্যয়ের ৬০,০০০ কোটি টাকা জোগাড় করা হয়েছে। এ নিয়ে অনেকেরই ভিন্নমত থাকতে পারে। তবে এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক দৃঢ়তা প্রকাশ পাবে। তদুপরি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে বহির্বিশ্বে।
 

বাংলাদেশকে জানো বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর