ঢাকা, ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ৪ আশ্বিন ১৪৩১
good-food
৪০

বিক্ষোভ-সংঘাতে অস্থির মণিপুর, তিন জেলায় কারফিউ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০২:৫৩ ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

বিক্ষোভ ও সংঘাতে অস্থির ভারতের মণিপুরের তিন জেলায় শান্তি রক্ষায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। মেইতেই ও কুকিদের মধ্যে ব্যাপক সহিংসতার জেরে আবার অশান্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে ভারতের ‘সেভেন সিস্টার্স’ খ্যাত সাত রাজ্যের অন্যতম মণিপুরে।

 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে লিখেছে, সাম্প্রতিক সহিংসতা ও বিক্ষোভে মণিপুরে ক্রমেই বাড়ছে হতাহতের ঘটনা। রাজ্যের রাজধানী ইম্ফাল ঘিরে হামলা-বিক্ষোভ ফিরছে। এ অবস্থায় ইম্ফাল পূর্ব, ইম্ফাল পশ্চিম ও থৌবাল জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে ইন্ডিয়া টুডে।

 

খবরে বলা হয়েছে, এর আগের এক নির্দেশে ইম্ফাল পূর্ব ও ইম্ফাল পশ্চিম জেলার প্রশাসকরা মঙ্গলবার ভোর ৫টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করেছিলেন। পরবর্তীতে জেলা দুটির নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে শিথিলকরণের আদেশ বাতিল করে উভয় জেলায় কারফিউ পুনরায় জারি করা হয়েছ।

 

তবে জেলাপ্রশাসকদের ঘোষণায় সংবাদমাধ্যম, বিদ্যুৎসেবা, আদালত ও স্বাস্থ্যসেবাসহ অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবাগুলো কারফিউয়ের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। রাজ্যটিতে সাম্প্রতিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলাসহ চলমান সহিংসতায় আটজনের প্রাণ গেছে এবং ১২ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।

 

এসব হামলার পেছনে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী সোমবার মণিপুর সচিবালয় এবং রাজভবনের সামনে বিক্ষোভ করে। রাতে মশাল নিয়ে হয় বিশাল বিক্ষোভ। গত বছরের মে থেকে মণিপুরের মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে জাতিগত দাঙ্গায় ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং হাজারো মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।

 

শুক্রবার কুকি বিদ্রোহীরা বিষ্ণুপুর ও চূড়াচাঁদপুর সীমান্তের কিছু প্রান্তিক এলাকায় হামলা ও গুলি করে বলে মণিপুর রাজ্য সরকার দাবি করে। তাদের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনী ওই এলাকায় চিরুনি অভিযান চালায়। তারা বিদ্রোহীদের বেশ কয়েকটি বাঙ্কার ধ্বংস করেছে বলে জানায় রাজ্য সরকার।

 

যৌথ বাহিনীর অভিযানের পর মণিপুরের মইরাং শহরে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় কুকি বিদ্রোহীরা, তাতে কয়েকজন নিহত হন। শুক্রবার সন্ধ্যায় ইম্ফালের দ্বিতীয় ও সপ্তম মণিপুর রাইফেলস ক্যাম্প থেকে অস্ত্র লুট করার চেষ্টা করেছিল উত্তেজিত মেইতেইরা। তবে নিরাপত্তা বাহিনী ফাঁকা গুলি ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করলে তাতে তারা ব্যর্থ হয়।

 

অবশ্য তখন উত্তেজিত জনতার মধ্য থেকে গুলি ছোড়া হলে পুলিশের দুই সদস্য আহত হন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ইম্ফাল উপত্যকার বিক্ষোভকারীরা সাংবাদিকদের বলেছেন, ড্রোন, রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনায় তারা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর হতাশ। তাই বেসামরিক নাগরিকদের আত্মরক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

 

সম্প্রতি রাজ্যের জিরিবাম জেলায় সহিংসতায় ছয়জনের মৃত্যু হয় বলে বলে মণিপুর পুলিশ তথ্য দেয়। সন্দেহভাজন কুকি বিদ্রোহীরা ইম্ফাল থেকে ২২৯ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে জেলাটির নুংচাপ্পি গ্রামে হামলা চালায় বলে পুলিশের দাবি। সেখানে তারা ইউরেমবাম কুলেন্দ্র সিংহ (৬৩) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করে।

 

মণিপুরের উপত্যাকাগুলিতে আধিপত্য বিস্তার করে থাকা মেইতেই সম্প্রদায়ের সশস্ত্র সদস্যদের সঙ্গে পাহাড়ি কুকি বিদ্রোহীদের বন্দুক লড়াইয়ে আরও পাঁচজন নিহত হন। এসব গোষ্ঠীগুলো নিজেদের ‘গ্রাম প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবক’ বলে দাবি করে বলে এখ খবরে জানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

বিশ্ব বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর