ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২২০

বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে সিরিজ বানিয়ে প্রশংসিত সায়ন্তন

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০০:২৭ ৭ আগস্ট ২০২২  

বিয়ে সব খানে, সব মানুষেরই জীবনে আনন্দের একটি বিষয়। এই আনন্দের বহিঃপ্রকাশে দেখা যায় নজরকাড়া আয়োজন। কিন্তু সেই আনন্দের পর অনেক সময় কষ্ট এসে হানা দেয় সংসারে। সংসারে স্বামী-স্ত্রীর জীবনে নানা সমস্যা আসে, সেগুলো উতরে ওঠেন অনেকে। তবে কিছু সমস্যা থেকে যায় না বলা। সেগুলোরই একটি বৈবাহিক ধর্ষণ। আর এই ধর্ষণ ঘটনার ধর্ষক প্রায় সব সময় পুরুষ।

 

বিয়ের পর স্ত্রীর শরীর যেন পুরোপুরি স্বামীর- এমন ধারণায় ঘটতে থাকে বৈবাহিক ধর্ষণ। এমন ঘটনা নিয়ে ওয়েব সিরিজ নির্মাণ করেছেন নির্মাতা সায়ন্তন ঘোষাল। হইচইতে প্রকাশ পাওয়া সিরিজটির নাম সম্পূর্ণা। এটি নির্মাণ করে প্রশংসা পাচ্ছেন নির্মাতা। কলকাতার সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে লিখছেন অনেকেই।

 

সিরিজটিতে একটি পরিবারকে দেখান হয়েছে, যেখানে বৈবাহিক ধর্ষণের শিকার বাড়ির ছোট বউয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাজনন্দিনী পাল। রাজনন্দিনী পালের স্বামী রুকু বা রক্তিমের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনুভব কাঞ্জিলাল। প্রায় প্রতি রাতেই রাজনন্দিনীকে শারীরিক নির্যাতন করেন অনুভব।

 

সব জেনে চুপ করে থাকেন রাজনন্দিনীর ভাসুর; এ চরিত্রের অভিনেতা প্রান্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়। শাশুড়ি চরিত্রে লাবণী সরকার, শ্বশুর রজত গঙ্গোপাধ্যায় এবং বাড়ির বড় বউয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সোহিনী। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, সিরিজে কী ঘটতে যাচ্ছে তা আগে থেকেই বোঝা যাচ্ছিল। সেই অর্থে সিরিজটি হয়ে উঠেছে প্রেডিক্টেবল। কিন্তু সায়ন্তন যে বিষয়টি নির্বাচন করেছেন, সেটি খুবই সময়োপযোগী।

 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনে প্রকাশিত সম্পূর্ণা সিরিজের রিভিউয়ে আকাশ মিশ্র লিখেছেন, ‘সহজ কথায় বলতে গেলে এই সিরিজ একেবারেই অভিনয়ের জন্য দেখতে পারেন। কারণ সম্পূর্ণা সিরিজে সোহিনী নিজের এক শ শতাংশ উজাড় করে দিয়েছেন। প্রতিটি ফ্রেমে অসাধারণ তিনি। অভিনয়ের দিক থেকে সোহিনীর পর যার নাম আসে, তিনি হলেন লাবণী সরকার। অনেকগুলো শেড রয়েছে তার চরিত্রে। কখনও মা, কখনও শাশুড়ি, কখনও আবার সব সম্পর্ক ভুলে নারীর প্রতীক। সোহিনী ও লাবণীর অভিনয়ই এই সিরিজের সেরা প্রাপ্তি। বিষয় হিসেবে বৈবাহিক ধর্ষণকে বেছে নেয়ার ব্যাপারে অবশ্যই বাহবা প্রাপ্তি সায়ন্তনের। তবে চিত্রনাট্য আরও একটু শক্তপোক্ত হলে সিরিজটি জমে যেত।’

 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজএইটটিন বাংলায় স্বরলিপি দাসগুপ্তা সম্পূর্ণা নিয়ে লিখেছেন, ‘সম্পর্কে গেলে প্রেমিকার সঙ্গে যখন যা খুশি করার যেন একটা অদৃশ্য ছাড়পত্র থাকে। এহেন কাঠামোয় ম্যারিটাল রেপ বিষয়টি যেন কিছু মানুষের কাছে সোনার পাথরবাটির মতো। বিয়ের পরে তো স্ত্রীর শরীরের মালিকানা স্বামীর কাছেই! স্বামী কি কখনও স্ত্রীকে ধর্ষণ করতে পারে নাকি? সমাজের এই গতে বাঁধা প্রশ্নগুলিকেই উত্তর দিতে পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল মারিট্যাল রেপ-কে কেন্দ্র করে বাংলা ভাষায় ওয়েব সিরিজ বানিয়ে ফেলেছেন।’

 

তিনি আরও লেখেন, ‘সেভাবে চেনা জানা না থাকলেও, ইচ্ছে অনিচ্ছের কথা না ভেবেই পাত্র পাত্রী পৌঁছে যায় ফুল শয্যার রাতে। এমনটাই হয়ে এসেছে। কারণ সমাজ বলে দিয়েছে, এমনই করতে হয়। সেই নিয়ম মেনেই, ফুলশয্যার বিছানায় অপেক্ষারত লাজুক নন্দিনীর কাছে পৌঁছায় রুকু। নন্দিনীর মালিকানা এবার তার। চোয়াল শক্ত হয় রুকুর। পৌরুষ প্রকাশ করার সময় তার। নন্দিনী কী চাইছে তা জানার প্রয়োজনই মনে করে না সে। প্রথম রাতেই ম্যারিটাল রেপ-এর শিকার নন্দিনী।’

 

এমন সাহসী ও জরুরি বিষয় নিয়ে সিরিজ নির্মাণের জন্য সায়ন্তন ঘোষালকে কুর্ণিশ করেছেন স্বরলিপি। ৬ পর্বের সিরেজে বের হয়ে আসে সমাজের ভদ্র-নম্র একটি চরিত্রের ভেতরের চেহারা। স্বরলিপি লেখেন, ‘সিরেজে ক্লাইম্যাক্সের জন্য টানটান অপেক্ষা নেই। শেষটাও হয়তো সামান্য প্রেডিক্টেবল। কিন্তু তবুও এই ওয়েব সিরিজ শেষ পর্যন্ত দেখতে ইচ্ছে করবে।’

 

সায়ন্ত এর আগে নির্মাণ করেছেন ইণ্দু, গোরা, লালবাজার, ডার্ক ওয়েব, ব্যোমকেশসহ বেশ কটি ওয়েবসিরিজ।

বিনোদন বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর