ঢাকা, ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার, ২০২৪ || ১২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৪৫৯

মুজিববর্ষ : আলোয় আলোয় সেজেছে রাজধানী

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:৫৯ ১৬ মার্চ ২০২০  

আলোয় আলোয় রঙিন হয়ে উঠেছে রাজধানী ঢাকা। শুধু ঢাকা মহানগরীই নয়, বর্ণিল সাজে সেজেছে সারাদেশ।  

 

মুজিববর্ষের মূল অনুষ্ঠানকে ঘিরে সোমবার সন্ধ্যার পর থেকেই  রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোসহ ব্যাংক-বীমা সরকারি দপ্তর থেকে শুরু করে বিভিন্ন অভিজাত হোটেল, নগরের অলি-গলিতে অবস্থিত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কার্যালয় বর্ণিল আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়। রাস্তার দু’পাশ ও মোড়ে-মোড়ে শোভা পাচ্ছে বিদ্যুৎ-বাল্বের বাহারি রংয়ের আলোর ঝলকানি।

 

১৭ মার্চ স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিন। এ দিনটিকে সামনে রেখে চলতি বছরের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার।

 

মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী পালনে গোটা দেশজুড়ে নেয়া হয়েছে কর্মসূচি। করোনাভাইরাসের কারণে ইতোপূর্বে গৃহীত নানা আয়োজনে পরিবর্তন আনা হলেও  মঙ্গলবার মূলমঞ্চের আতশবাজির অনুষ্ঠান ঠিক রয়েছে।

 

দিবসটি উপলক্ষে সোমবার সন্ধ্যা রাত থেকে আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয় রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থাপনা। এজন্যই রাজধানী ঢাকা এখন রূপ-নিয়েছে আলোর নগরীতে।

 

নগরীর প্রধান সড়ক, স্থাপনাগুলোয় শোভা পাচ্ছে বাহারি রঙের আলো। বর্ণিল আলোকসজ্জায় চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছে। বাদ যায়নি রাস্তার মোড়, ল্যাম্পপোস্টও। নগরবাসিও বেশ উপভোগ করছেন এমন দৃশ্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীর এমন আয়োজন দেখতে পেয়ে অনেকেই জানিয়েছেন তাদের সন্তুষ্টির কথা।

 

মুজিববর্ষের সকল আয়োজনের মধ্যে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি যথাযথ সম্মান জানানোর পাশাপাশি নতুন প্রজন্ম বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস জানবে - এমনটাই প্রত্যাশা আলোকসজ্জা দেখতে আসা দর্শনার্থী ও আয়োজকদের।

 

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে নতুন সাজে সেজেছে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়ক, স্থাপনা, অফিস-আদালত।

 

সোমবার সন্ধ্যার পরই লাল-সবুজের আলোতে ঝলমলিয়ে ওঠে পুরো রাজধানী। চোখ ধাঁধানো এ আলোকসজ্জার ঝলকানিতে মন কেড়েছে সবার।

 

রাজধানীর ব্যাংকপাড়া মতিঝিল, পল্টন, দৈনিক বাংলা, গুলিস্তানসহ বিভিন্ন এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলো আলোকসজ্জা করা হয়েছে। বিভিন্ন রঙের ও বর্ণের এসব আলোকসজ্জা উৎসব পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

ব্যাংলাদেশ ব্যাংক ভবনেও শোভা পাচ্ছে চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জা। এ ভবনে বিদ্যুৎবাতি-ঝলমলিয়ে ফুটে উঠছে লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা, সামনে স্মৃতিসৌধ, একপাশে অস্ত্র হাতে মুক্তিযোদ্ধারা অন্যপাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতীকী ছবি।

এ ছাড়া মতিঝিল শাপলা চত্বর এলাকায় সোনালী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, জীবন বীমা ভবনসহ বড় বড় স্থাপনা সাজানো হয়েছে। রাস্তার দু’পাশের গাছে গাছে বাহারি আলোকরশ্মি। সাদা, লাল, নীল, সোনালী হরেক রঙের মরিচবাতি।

 

এদিকে মুজিববর্ষ উপলক্ষে নতুন রূপে সেজেছে লুই আই কানের অনন্য সৃষ্টি জাতীয় সংসদ ভবন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে চিরচেনা সংসদ ভবন বর্ণিল রূপ নিয়েছে। নানা রঙের আলোকসজ্জায় বঙ্গবন্ধু ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সংসদ ভবনের দেয়ালে। সংসদের ভেতরে ও বাইরে বঙ্গবন্ধু কর্নার রাখা হয়েছে। সেখানে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত বই পাওয়া যাচ্ছে। আর বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ ছবির ব্যানার ফেস্টুন টাঙানো হয়েছে।


কোরোনাভাইরাসের কারণে মূল অনুষ্ঠান বাতিল হওয়ার পর সংসদের এটিই এখন মূল অনুষ্ঠান। তবে সেখানে লোক সমাগম তেমন করা হবে না। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী বাস্তবায়ন কমিটির এই অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানের শুরুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি বাণী দেবেন।

 

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেছেন, মঙ্গলবার রাত ৮টায় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠান শুরু হবে। ১৭ মার্চ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আতশবাজির মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় পিক্সেল শোয়ের মাধ্যমে শেষ হবে। মূলত টেলিভিশনের মাধ্যমেই বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানের নাম করণ করা হয়েছে ‘মুক্তির মহানায়ক’।


বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী বাস্তবায়ন কমিটি থেকে জানানো হয়, জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বিপুল জনসমাগম করে যে অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল করোনার কারণে সেটি হচ্ছে না। তাই সে অনুষ্ঠানের কিছু অংশ দেখানো হবে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত অনুষ্ঠিানে।

১৯২০ সালের ১৭ মার্চ রাত ৮ টায় জন্মগ্রহণ করেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আনন্দঘন সেই সময় স্মরণীয় করে রাখতে জন্মশতবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান রাত ৮টায় আতশবাজী ও ফায়ার ওয়ার্কসের মাধ্যমে শুরু হবে অনুষ্ঠানমালা। পাঁচ থেকে সাত মিনিট ধরে চলবে এ আতশবাজি।

 

সোমবার সংসদ ভবন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সেখানে সাজ সাজ রব। রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদের আয়োজন ঘুরে দেখেছেন। এজন্য সেখানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইনশৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সংসদের প্রবেশ পথে দৃষ্টিনন্দন বিলবোর্ডে স্থান পেয়েছে বঙ্গবন্ধুর মুখচ্ছবি। আর মূল অনুষ্ঠানের জন্য দক্ষিণ প্লাজায় বসানো হয়েছে বিশাল ডিসপ্লে বোর্ড। সেখানে দেখানো হবে লেজার শো। পিক্সেল ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে দেখানো হবে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন সময়ের ভাষণের উদ্ধৃতি ও বিভিন্ন মুহূর্ত। ১৯৫২ সাল থেকে শুরু করে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাগুলো তুলে ধরা হবে। এছাড়া আলোকসজ্জার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন সময়ের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠবে। দুই ঘণ্টার অনুষ্ঠানে পিক্সেল শো, কোরিওগ্রাফিসহ আরও কিছু আয়োজন রয়েছে। এই অনুষ্ঠান সকল টিভি চ্যানেল, অনলাইন ও সোশাল মিডিয়ায় একযোগে প্রচার করা হবে। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সারা বিশ্বের মানুষ বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পারবে।

বাংলাদেশ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর