ঢাকা, ২৫ নভেম্বর সোমবার, ২০২৪ || ১১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৮৫৭

যেসব কারণে এই শীতে প্রচুর খেতে হবে লাল শাক

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:১৯ ৯ জানুয়ারি ২০২০  

শীতে লাল শাকে ভরে গেছে বাজার। নানা গুণে পরিপূর্ণ এটি। ১০০ গ্রাম লাল শাকে রয়েছে ১০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১ গ্রাম ডায়াটারি ফাইবার, ৪.৬ গ্রাম প্রোটিন, ৪২ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ৩৪০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ১১ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ৩৬৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ২ মিলিগ্রাম আয়রন, ১.৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন এ এবং ৮০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি। সবকটি উপাদানই শরীর গঠনে ভীষণ কাজে লাগে। বিশেষত ওজন কমাতে এই শাকের জুড়ি নেই। চলুন জেনে নেয়া যাক লাল শাকের গুণাগুণ সম্পর্কে-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
প্রতিদিন লাল শাক খেলে শরীরের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি-এর ঘাটতি দূর হয়। ফলে রোগ- প্রতিরোধক ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়। এতে ছোট-বড় কোনো রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
জ্বরের চিকিৎসায়
ঋতু পরিবর্তনের কারণে যারা জ্বরে ভুগছেন, তারা এই ঘরোয়া পদ্ধতিটির সাহায্য নিতে পারেন। এক্ষেত্রে একটা প্যানে পরিমাণ মতো পানি নিয়ে তাতে এক মুঠো লাল শাক ফেলে দিতে হবে। এরপর পানিটা ফোটাতে হবে। পানির পরিমাণ অর্ধেক হলে চুলা বন্ধ করতে হবে। পরে পানি ঠাণ্ডা করে পান করতে হবে। এভাবে কয়েকদিন করলেই জ্বর পালিয়ে যাবে।
দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে
লাল শাকে থাকা ভিটামিন সি রেটিনার ক্ষমতা বাড়িয়ে সার্বিকভাবে দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই যারা চোখে কম দেখেন বা পরিবারে গ্লকোমার মতো রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা সময় নষ্ট না করে লাল শাক খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন অল্প দিনেই উপকার পাচ্ছেন।
হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে
লাল শাকে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন কে, যা হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। একবার হাড় শক্তপোক্ত হলে অস্টিওপরোসিসের মতো রোগ আর ধারে কাছেও ঘেঁষবে না।
হার্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
লাল শাকে থাকা "ফাইটোস্টেরল" নামক উপাদান শরীরে প্রবেশ করে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। নানাবিধ হার্টের রোগের অ্যান্টিডোট হিসেবেও কাজ করে। সপ্তাহে কম করে ২-৩ দিন লাল শাক খেলে এর ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে কোনো ধরনের হার্টের রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না।
অ্যানিমিয়া দূরে পালায়
লাল শাকে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা শরীরে লোহিত রক্তকণিকার মাত্রা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। অ্যানিমিয়া রোগীরা এ শাকটি খেতে পারেন। দুই আঁটি লাল শাককে পিষে রস সংগ্রহ করুন। এর সঙ্গে ১ চামচ লেবুর রস এবং ১ চামচ মধু মিশিয়ে নিয়মিত খান। এতে শরীরে কখনও রক্তের অভাব হবে না।
হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে
লাল শাকে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার, যা হজমে সহায়ক অ্যাসিডের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে বাওয়েল মুভমেন্ট যাতে ঠিক মতো হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বদহজমের আশঙ্কা কমে। সেই সঙ্গে গ্যাস-অম্বলের প্রকোপও হ্রাস পায়।
কিডনির কর্মক্ষমতা বাড়ে
লাল শাক খেলে কিডনির কর্মক্ষমতা বাড়ে। রক্তে উপস্থিত একাধিক ক্ষতিকর উপাদান শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। ফলে রক্ত পরিশুদ্ধ হয়। নানাবিধ রোগের প্রকোপও কমে।
দাঁতের স্বাস্থ্য
লাল শাকের মূল দিয়ে দাঁত মাজার পর লবণ-পানি দিয়ে কুলকুচি করলে দাঁতের হলুদ ভাব কেটে যায়। সেই সঙ্গে পোকা লাগাসহ মাড়ি এবং দাঁত সম্পর্কিত নানাধিক রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষে না।
চুল পড়া কমায়
এক আঁটি লাল শাঁক ভালো করে বেটে একটা পেস্ট বানান। এরপর তাতে ১ চামচ লবণ মিশিয়ে ভালো করে নাড়ান। দুটি উপাদান ঠিক মতো মিশে গেলে মিশ্রনটি ছেঁকে নিয়ে পান করুন। প্রতিদিন করলে চুল পড়ার হার অনেক কমবে।
অ্যাজমার প্রকোপ কমে
লাল শাকে থাকা বিটা-ক্যারোটিন শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে, অ্যাজমার প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে রেসপিরেটরি সিস্টেমের উন্নতিও ঘটে চোখে পড়ার মতো। দেশে যে হারে বায়ু দূষণের মাত্রা বাড়ছে, তাতে লাল শাক খাওয়ার প্রয়োজন বেড়েছে, সেই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই!