ঢাকা, ০৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার, ২০২৪ || ১৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৭০৪

যে ৮ উদ্ভট কাজ আপনি-আমি প্রতিদিনই করি

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০২:১৬ ৪ জুন ২০২৩  

গবেষণায় দেখা গেছে, দিনের প্রায় প্রতিটি মুহূর্ত আটটি উদ্ভট বিষয় আমরা করে থাকি। অনেকেই হয়তো জানি না আসলে কেন আমরা এমন কাজগুলো করে থাকি।


লাইফ সায়েন্স ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে এমন অনেকগুলো উদ্ভট অভ্যাসের কথা বলা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে, একটি হাতের বেশি ব্যবহার, মিথ্যা বলা, শারীরিক সৌন্দর্য বাড়ানো, পরচর্চা-গালগল্প, টুকিটাকি মনে করতে না পারা, বিরক্ত-বিষণ্ণ-উদাস হওয়া, মৃত্যু নিয়ে চিন্তা এবং শরীরের জন্য ক্ষতিকর জেনেও তা করা।


এ কাজগুলো সত্যিকার অর্থে অদ্ভুতও বটে। মজার বিষয় আমাদেরকে অট্টহাসিতে ভাসিয়ে দেয় অন্যদিকে দিনের এক-তৃতীয়াংশ সময় আমরা ঘুমের মধ্যে মৃতপ্রায় অবস্থায় থাকি।

 

কোন একটি হাতের বেশি ব্যবহার

প্রতিদিনকার কাজে আমরা নিজের অজান্তে কোন একটি হাত বেশি ব্যবহার করতে স্বাচছন্দ্যবোধ করি। আপনি ডানহাতি অথবা বামহাতি যাই হোন না কেন কোন একটি হাত বেশী সক্রিয় থাকে। অন্যটি কম। বিজ্ঞানীদের মতে, মানুষের একটি হাত হচ্ছে ‘প্রভাবশালী’। যা কী না উদ্ভট বা উদ্ভুত।

 

তবে দুই হাতে সমান দক্ষতা এমন সব্যসাচী হওয়া আসলে মানুষের জন্য বিরল অথবা বড় ধরনের প্রাপ্তি। মস্তিষ্ক নিয়ে একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে মানব মস্তিষ্কের ডান অংশের তুলনায় বাম অংশে অনেক বেশী সুক্ষ তন্তু থাকে। আর ডান পাশের মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করে শরীরের বাম পাশের অঙ্গ আর বাম পাশের অংশ নিয়ন্ত্রণ করে ডান দিকের অঙ্গ। আর বাম অংশে এই অধিক তন্তুগুলোর জন্যই সাধারণত মানুষের ডান হাত-পা বেশী সক্রিয় হয়ে থাকে।

 

মিথ্যা বলা

আমরা অনেক কারণে মিথ্যা বলে থাকি। এদের মধ্যে কিছু কারণ হচ্ছে ক্ষতিকর আর কিছু হচ্ছে অহিংস ও অক্ষতিকর। তবে প্রত্যেকেই কিছু মাত্রায় মিথ্যা বলে থাকি। গবেষকরা এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি আসলে কেন মানুষ মিথ্যা বলে। তবে তারা জানতে পেরেছেন মানুষের মধ্যে মিথ্যা বলার প্রবণতা প্রায় স্বাভাবিক বিষয়। এবং এর সঙ্গে কয়েকটি মানসিক ইস্যু জড়িত। এদের মধ্যে সবচেয়ে প্রকট হচ্ছে আত্মমর্যাদা।  

 

এমনটি জানিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস-এর মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক রবার্ট ফেল্ডম্যান। মানুষের প্রতারণা বিষয়ে গবেষণা করে তিনি জানতে পেরেছেন মানুষের আত্মমর্যাদার ওপর যত বেশি আঘাত আসে তত বেশি ওই ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলতে থাকেন।

 

সামাজিক সম্পর্ককে সহজ করতে অনেকে মিথ্যা বলে থাকেন। অন্যের আবেগকে আঘাত করা থেকে এড়িয়ে চলতে অথবা অযথা তর্ক এড়াতে অনেকে মিথ্যার আশ্রয় নেন। তবে সাজা অথবা অমর্যাদাকর অবস্থা এড়াতে মানুষ সবচেয়ে বড় ও ভয়ংকর মিথ্যা বলে থাকেন।

 

শারীরিক সৌন্দর্য বাড়ান

শারীরিক সৌন্দর্য বাড়াতে অস্ত্রোপচার অথবা অন্য কোন চিকিৎসায় বছরে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ খরচ করেন সাড়ে ১৩ বিলিয়ন ডলার। এমন তথ্য দিয়েছে আমেরিকান সোসাইটি ফর অ্যাস্থেটিক প্লাস্টিক সার্জারি নামের সংস্থা। মানুষ কেন অস্ত্রোপচার অথবা স্থায়ীভাবে সাজসজ্জা হিসেবে শরীরে ট্যাট্টু অথবা অলংকার বিঁধে তার কারণ বের করার চেষ্টা করেছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ হিসেবে তারা জানতে পেরেছেন, মানুষ মনে করে প্লাস্টিক সার্জারি অথবা কসমেটিকস ব্যবস্থা নিতে পারলে তাদের দেখতে আকর্ষণীয় লাগবে তাদেরকে অন্যের চোখে ভালো লাগবে। আর এসব কিছু তাদেরকে আনন্দ দিবে।

 

পরচর্চা-গালগল্প

আপনি যদি বেশিরভাগ মানুষের মতো হয়ে থাকেন তবে দিনের কোন না কোন এক সময় আপনি রটনা, গালগল্প অথবা পরচর্চার মধ্যে দিয়ে যান। পছন্দ করেন কি না করেন এটি আমাদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের একটি অংশ হয়ে গেছে।যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির আদিম প্রাণী বিশেষজ্ঞ রবিন ডানবার বলেন, ‘অন্যের অনুপস্থিতিতে তাকে নিয়ে কথা বলার প্রবণতা কথোপকথনকে মাতিয়ে তোলে। এতে ওই দুই ব্যক্তির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়।’

 

প্রায় একই মন্তব্য করেছেন সাউথ ফ্লোরিডা ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক জেনিফার বসোন। তিনি বলেন, ‘তৃতীয় এক ব্যক্তির মধ্যে অপছন্দনীয় বিষয় ও বিরক্তিকর আচরণগুলো নিয়ে কথা বললে গালগল্প বা পরচর্চাকারী দুই জনের মধ্যে বন্ধন আরও সুদৃঢ় হয়।’

 

টুকিটাকি মনে করতে না পারা

টুকিটাকি তথ্য হঠাৎ মনে করতে না পারা অনেকের ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। তবে কোন কোন সময় এক রুম থেকে আরেক রুমে কেন গিয়েছে তা মনে করতে না পারা অথবা সন্তান, সহকর্মী, প্রতিবেশীর নাম মনে করতে না পারাটা অনেক সময় বড় ধরনের বিড়ম্বনায় ফেলে দেয়। অনেক কারণে মস্তিষ্ক কোন একটি ছোট্ট অথচ প্রয়োজনীয় তথ্য যথাসময়ে মনে করতে পারে না। এসব কারণের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মানসিক চাপ ও অনিদ্রা।

 

বিরক্ত-বিষণ্ণ-উদাস হয়ে পরা

প্রত্যেকেই কিছু সময়ের জন্য বিরক্ত বা বিষণ্ণতায় আচ্ছন্ন হতে পারে। এটি আসলেই উদ্ভুত বিষয় যে পৃথিবীতে করার অনেক অনেক কিছু থাকা সত্ত্বেও কখনও কখনও মানুষকে বিষণ্ণতা পেয়ে বসে। স্নায়ূতন্ত্রের অবসন্নতা ও দূর্বলতার কারণে অনেকে বিষণ্ণতা বোধ করতে পারে।

 

মৃত্যু নিয়ে চিন্তা

কেউ যদি কখনও মৃত্যু নিয়ে না ভেবে থাকে তবে তার সঙ্গে সাধারণ মানুষের তেমন কোন মিল নেই। উইসকন্সিন-মেডিসন ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক পেলিন কেসেবির বলেন, মৃত্যু নিয়ে ভাবনা খুবই স্বাভাবিক ও সহজাত বিষয়। তবে নিজের মৃত্যু নিয়ে আচ্ছন্ন বা বুদ হয়ে পড়াটা স্বাভাবিক পর্যায়ে পড়ে না।

 

শরীরের জন্য ক্ষতিকর জেনেও তা করা

ধূমপান, অতিমাত্রায় অ্যালকোহল পান ও মাদক সেবন ক্ষতিকর জেনেও এসমস্ত আত্মঘাতী স্বভাব থেকে নিজেকে বিরত রাখা আসলেই কঠিন কাজ। কেন খারাপ স্বভাব থেকে দূরে থাকা মানুষের জন্য কঠিন। বিজ্ঞানীরা একটি তালিকা করেছেন যেখানে দেখানো হয়েছে আমরা কেন আমাদের জন্য ভালো এমন বিষয়গুলো বুঝতে ব্যর্থ হই।