ঢাকা, ২৬ নভেম্বর মঙ্গলবার, ২০২৪ || ১২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৪০৭

লকডাউন উপেক্ষা: জানাজায় লাখো মানুষ, সরাইলের ওসি প্রত্যাহার

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০৮:০৬ ১৯ এপ্রিল ২০২০  

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার বেড়তলা গ্রামসহ আশপাশের গ্রামগুলোর মানুষকে ১৪ দিন ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে প্রশাসন। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের নায়েবে আমির মাওলানা জুবায়ের আহমেদ আনসারীর জানাজার নামাজে লাখো মানুষের অংশ নেয়ার ঘটনায় এ নির্দেশ দেয়া হয়।

 

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। শনিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সালেহ মো. মুসা মুঠোফোনে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।



এদিন সকাল ১০টায় বেড়তলা এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা মাঠে দেশবরেণ্য আলেম জুবায়ের আহমেদ আনসারীর জানাজা হয়। মাঠে জায়গা না হওয়ায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অন্তত দুই কিলোমিটার অংশে মানুষ জানাজা পড়েন।

 

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত ১১ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় লকডাউন চলছে। কিন্তু লকডাউন না মেনে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। ফলে করোনাভাইরাস বৃহৎ আকারে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।

 

অবশ্য এর আগে প্রশাসন বলেছে, ‘ধর্মীয় নেতারা আশ্বস্ত করেছিলেন সীমিত পরিসরেই জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। জানাজায় জনস্রোতে পরিণত হওয়ার বিষয়টি আঁচ করতে পারেনি পুলিশ।

 

অবশ্য মারাত্মক ঝুঁকির মাঝে জনসমাগম ঠেকাতে প্রশাসনের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। এ কারণে সরাইল থানার ওসি শাহাদাৎ হোসেন টিটুকে ওই এলাকার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

 

করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই এদিন সকালে ওই ইসলামী দলের নেতার জানাজায় বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত হন। পরে তাদের গা ঘেঁষাঘেষি করে অংশগ্রহণ দেখে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে রাতে পুলিশ সদরদপ্তর এ পদক্ষেপ নেয়।

 

সদরদপ্তর থেকে জানানো হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জানাজায় লোক সমাগমের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারেননি ওই ওসি। ফলে তাকে সরাইল থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

 

এর আগে জনসমাগমের পর ওসি মো. শাহাদাৎ বলেন, জানাজায় এত লোক হবে আমরা চিন্তাও করতে পারিনি। লোকজন আসতে শুরু করার পর আমাদের কিছুই করার ছিল না।

 

এদিকে ইউএনও আবু সালেহ মো. মুসা বলেন, বেড়তলা এবং আশপাশের গ্রামগুলোতে আমরা মাইকিং করে বলে দিয়েছি কেউ যেন ঘর থেকে বের না হয়। আগামী ১৪-১৫ দিন তারা যেন এই কোয়ারেন্টাইন মেনে চলে। স্থানীয় মেম্বারের নেতৃত্বে যুবসমাজের ব্যক্তিদের দিয়ে আমরা কমিটি গঠন করে দিচ্ছি - তারা যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলো বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেন। তাদের সুরক্ষার জন্য একান্তই হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেন বের না হয়। আমরা হ্যান্ডমাইক ব্যবহার করে সবাইকে বলে দিয়েছি।

 

তিনি বলেন, যেহেতু অনেক মানুষ অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে এখানে (বেড়তলা) ছিল- এই এলাকার মানুষগুলো যেন স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে নিজেদের এড়িয়ে চলতে পারেন সেজন্য আমরা এই ব্যবস্থা নিয়েছি।

 

উল্লেখ্য, সিভিল সার্জনের তথ্যমতে শনিবার (১৮ এপ্রিল) পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৭। এর মধ্যে মারা গেছেন দুজন। বাকিরা আইসোলেশনে রয়েছেন।

বাংলাদেশ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর