ঢাকা, ২৩ নভেম্বর শনিবার, ২০২৪ || ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২৬২

শীতকালে ঠাণ্ডা সমস্যা থেকে যেভাবে আপনার শিশুকে দূরে রাখবেন

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০১:১৬ ২৬ জানুয়ারি ২০২২  

রাফিজার বয়স সাড়ে চার মাস। বেশ হাসি-খুশিই ছিল। বুকের দুধ পান করা আর ঘুমানোর সময়টুকু বাদ দিয়ে যতক্ষণ জেগে থাকত ততক্ষণ হাত-পা নেড়ে খেলা করত। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে খুব বিরক্ত করছে সে। ঠান্ডা লেগেছে তার। বাবা পাশের এক ওষুধের দোকান থেকে ঠান্ডাজনিত ওষুধ এনে খাওয়াচ্ছে। কিন্তু তারপরও ভালো হচ্ছে না। ঠিকমত ঘুম না হওয়ায় কান্নাকাটি করছে সে। এক পর্যায়ে মেয়ে একেবারে নেতিয়ে পড়ে। 

 

মেয়ের এ অবস্থা দেখে তারা দ্রুত পাশের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানান রাফিজা নিওমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। দ্রুত তাকে আইসিউতে ভর্তি করাতে হবে। প্র্য়া দশদিন আইসিউতে চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠে রাফিজা। তারপর কেবিনে দেয়া হয় তাকে। সব মিলিয়ে সতের দিন পর বাসায় ফিরে রাফিজা।

 

শীতকালে প্রায়ই শিশুরা ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। এসময় শীতের সকালে খুব ঠান্ডা থাকে। আবার সন্ধ্যা বা রাতে আবার ঠান্ডা বেড়ে যায়। যার ফলে শিশুরা এ তাপমাত্রার সাথে খুব বেশি খাপ খাওয়াতে পারেনা।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মনির হোসেন বলেন শিশুরা ঠান্ডাজনিত যে কয়েকটি রোগে ভোগে তার মধ্যে কাশি অন্যতম। বেশ কয়েক রকমের কাশি রয়েছে। যেমন- ক্রুপ কাশি, হুপিং কাশি এবং শুকনো কাশি। ক্রুপ কাশিতে শিশুর শ্বাসনালি ফুলে যায়। শুকনো কাশি মূলত ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণের জন্য হয়ে থাকে। এছাড়া হুপিং কাশি হলে সাধারনত শিশুরা বারবার কাঁশতে থাকে। এ কাশি দীর্ঘক্ষণও হতে পারে। 

 

তিনি বলেন, বিভিন্ন কারনে শিশুদের কাশি হতে পারে। তবে মূলত ফ্লু বা ঠান্ডা লাগলে কাশি হয়। এছাড়াও শিশুদের ঠান্ডা লাগার কারনে নাক বন্ধ হয়ে যায়। নাক দিয়ে পানি অথবা সর্দি পড়ে। এমনকি সর্দির কারনে জ্বরও আসতে পারে। 
ডা. মনির বলেন, সাধারনত শিশুদের ঠান্ডা একটি কমন সমস্যা। যেকোন কারনে শিশুর লাগতে পারে। এজন্য যে প্রতিবারই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে তার প্রয়োজনও নেই। তবে অবশ্যই এসময় শিশুর অতিরিক্ত যতœ নিতে হবে। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে শিশুরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠে। 

 

তিনি বলেন, তবে দীর্ঘদিন কাশি যদি ভালো না হয় অথবা ঠান্ডা যদি ভালো নয় তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়া শিশুর কাশির সাথে যদি সর্দি থাকে, শ্বাস নেওয়ার সময় যদি আওয়াজ হয়, জ্বর থাকে, শিশুর খাওয়া কমে গেলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। 

 

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাইদুর রহমান সোহাগ বলেন, শিশুদের ঠান্ডা লাগতে পারে। এজন্য খুব বেশি উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। তবে তা যদি এক সপ্তাহের বেশি থাকে তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। 

 

শীতে শিশুর শরীর গরম কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে রাখার পরামর্শ দেন এই বিশেষজ্ঞ। এছাড়াও শিশুদের সংক্রমণ প্রতিরোধ টিকা প্রদানেরও পরামর্শ দেন তিনি। শীতকালে  স্বাভাবিকভাবেই  মানুষের  রোগ বালাই কিছুটা  বেড়ে যায়। তবে  এসময়ে  বিশেষ করে শিশুর শরীরের  প্রতি বেশি  যতœবান  হতে হবে। কেননা  শিশুরা নিজের শরীরের  অবস্থা কিংবা  রোগ বালাই  সম্পর্কে  কিছু বলতে পারেনা।  এ সময়  বিভিন্ন রোগে  বিশেষ করে ঠান্ডা জনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হয়  শিশুরা।