ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
১৭৪

শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি: জয়

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০১:৩৭ ১১ আগস্ট ২০২৪  

গণআন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেননি বলে জানিয়েছেন তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। শনিবার (১০ আগস্ট) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি। 

 

শেখ হাসিনার ছেলে বলেন, ‘আমার মা কখনোই আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেননি। তিনি সময় পাননি। মা যাওয়ার আগে একটি বার্তা দিয়ে পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আন্দোলনকারীরা তাদের লংমার্চ নিয়ে গণভবনের দিকে রওনা হয়। তখন হাতে সময় ছিল না। এমনকি তার জিনিসপত্রও গোছানো যায়নি। সংবিধান যেহেতু আছে, তিনি এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।’
 

শেখ হাসিনা সরকারের এই উপদেষ্টা বলছেন, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যদিও সেনাপ্রধান এবং বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সংসদ ভেঙে দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ছাড়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের বিষয়টি আদালতে চ্যালেঞ্জ করা সম্ভব।

 

শেখ হাসিনার ছেলের আশা, তাদের দল আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে। আর সেই নির্বাচন হতে হবে তিন মাসের মধ্যে। আমি নিশ্চিত, আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে। যদি তা না হয়, আমরা বিরোধী দল হব।

 

শেখ হাসিনার দেশত্যাগের দুদিনের মাথায় ঢাকায় বিএনপির প্রথম সমাবেশে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, প্রতিশোধ-প্রতিহিংসা নয়, দেশ হোক শান্তির। এ প্রসঙ্গে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ওই কথায় আমি খুবই সন্তুষ্ট, তিনি ভুলে যাওয়ার কথা বলছেন, ক্ষমার কথা বলছেন। আসুন আমরা ওই অতীতটা ভুলে যাই। আমরা প্রতিশোধের রাজনীতি না কারি। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে, সেটা ঐক্য সরকার হোক বা যাই হোক।’

 

বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন আয়োজনের জন্য, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য আওয়ামী লীগ বিএনপির সঙ্গে কাজ করতেও রাজি বলে জানান সজীব ওয়াজেদ। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, রাজনীতিতে আলোচনাটা খুব জরুরি। আমরা যুক্তি, পাল্টা যুক্তি দিতে পারি, ভিন্নমত পোষণ করতে পারি। এর মাধ্যমে একটা না একটা সমঝোতায় পৌঁছানো সব সময়ই সম্ভব।’

 

আওয়ামী লীগ নির্বাচনে গেলে প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী হতে চান কি না, সেই প্রশ্নে শেখ হাসিনার ছেলে বলেন, ‘আমার মা এই মেয়াদের পর এমনিতেই অবসরে যেতেন। তখন যদি আমার দল চায়, রাজি হতেও পারি। আমি অবশ্যই সেটা বিবেচনা করব।’

 

গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্ররা শেখ হাসিনার বিচার চাইছে। তিনি দেশে ফিরে বিচারের মুখোমুখি হতেও প্রস্তুত বলে দাবি করছেন সজীব ওয়াজেদ। তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার করার হুমকিতে আমার মা কখনোই ভয় পাননি। কোনো অন্যায়ও তিনি করেননি। তাঁর সরকারের লোকজন যদি অবৈধ কিছু করে থাকে, তার মানে এই না যে তিনিই সেসব করার নির্দেশ দিয়েছেন। তার মানে এই না যে আমার মা সেসব অপরাধের জন্য দায়ী।’

 

আন্দোলন দমাতে মানুষের ওপর গুলি করার নির্দেশ সরকারের কে দিয়েছিল, সেই প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট জবাব সজীব ওয়াজেদ দেননি। তিনি বলেন, ‘সরকার যন্ত্র বিরাট এক ব্যাপার। যারাই দায়ী হোক না কেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা উচিত। আন্দোলনকারীদের ওপর সহিংস হওয়ার নির্দেশ আমার মা কখনোই কাউকে দেননি। পুলিশ সহিংসতা থামানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু কিছু পুলিশ কর্মকর্তা অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করেছে।’

 

যে পুলিশ কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালিয়েছেন, সরকার তাদের বরখাস্ত করেছে বলেও দাবি করেন সজীব ওয়াজেদ। তিনি বলেন, ‘সরকারের তরফ থেকে যা যা করার সুযোগ ছিল, আওয়ামী লীগ সরকার তা করেছে।’

 

দেশে ফেরার প্রসঙ্গে সজীব ওয়াজেদ জানান, যখন ইচ্ছা তিনি দেশে ফিরতে পারেন। তিনি বলেন, ‘কখনো কোনো অন্যায় তো আমি করিনি। তাহলে আমি দেশে ফিরতে চাইলে কেউ ঠেকাতে যাবে কেন? একটা রাজনৈতিক দল তো শেষ হয়ে যায় না। আপনি তাদের মুছে ফেলতে পারেন না। আমাদের সহযোগিতা ছাড়া, আমাদের সমর্থকদের বাদ দিয়ে বাংলাদেশে আপনারা স্থিতিশীলতা আনতে পারবেন না।’

বিশ্ব বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর