ঢাকা, ০৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ২০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৫৫৫

সমৃদ্ধ সংস্কৃতির অপমৃত্যু

সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:৩৬ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

শত শত হিরো আলমের দেশে এক হিরো আলমকে বকাঝকা করে কি লাভ? সুস্থ সংস্কৃতির অপমৃত্যু তো তখনই হয়েছে যখন ভালো কিছু অভিনেতা সস্তা জনপ্রিয়তা লাভের আশায় ভাঁড়বেশে দর্শকের সামনে নিজেকে হাজির করলেন। অন্যদিকে বাবা মা ভাই বোন সম্মিলিত তথা আবহমান বাংলার সামাজিক গল্প সমৃদ্ধ নাটকের গায়ে তথাকথিত সিরিয়াস বা ধীরগতির নাটক তকমা লাগিয়ে নির্বাসিত করা হলো পরিবার বেষ্টিত ম্যাসেজ ভিত্তিক নাটক গুলোকে।

 

একাধিক শিল্পী ও নির্মাতাকে কোণঠাসা করা হলো। সিরিয়াস নাটক মানেই পাবলিক খায় না (দর্শক দেখে না) এমন তথ্য উপস্থাপন করে স্বার্থান্বেষী কিছু মহল নিজেদের অসত্য বাণী প্রচার করা শুরু করলো। একপর্যায়ে সবকিছুকে ছাপিয়ে ভিউ প্রতিযোগীতার মধ্য দিয়ে মূল্যায়ন পেতে থাকলো বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত আধুনিকতার নামে অশ্লীলতা ও কৌতুকের নামে ভাঁড়ামি সম্বলিত সমাজ নষ্টের উপকরণে ভরপুর নাটকের নামে কিছু কনটেন্ট।

 

রহস্যময় লক্ষ লক্ষ ভিউয়ের সংবাদে সয়লাব হতে থাকলো সোশ্যাল মিডিয়া। অস্থির সময়ের সুযোগ নিয়ে অনুপ্রবেশ ঘটলো ডিস ব্যবসায়ী হিরো আলমের। অনুকূল স্রোতে তিনিও দাপিয়ে বেড়ানো শুরু করলেন মিডিয়া জগতের বিভিন্ন অঙ্গনে। তিনি নায়ক, তিনি বিভিন্ন ভাষার গায়ক। এই দেখে অনেকে জাত গেলো জাত গেলো বলে বক্ষ চাপড়ানো শুরু করলেন।

 

কিন্তু যখন কিছু প্রতিষ্ঠিত শিল্পী অস্থির অঙ্গভঙ্গির মধ্য দিয়ে গলার রগ ফুলিয়ে উচ্চস্বরে সংলাপ পরিবেশন করে ড্রইংরুম দর্শকদের বিরক্তির উদ্রেক হলেন তখন কথিত ভিউয়ের প্রসংশায় তোলপাড় সোশ্যাল মাধ্যম। এই একই ভিউয়ের দাবিতে সম্মুখে পথচলা সহজ হয়েছে হিরো আলমদের। তাহলে দোষ কার? এক হিরো আলম দিয়েই কিন্তু দিনের শেষ নয়।

 

পরিবর্তনের দোহায় দিয়ে যদি বর্তমান অবস্থা চলতেই থাকে তাহলে উঁচু নাক নিচু করে ও গায়ের চামড়া সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আরো অসংখ্য হিরো আলমকে গ্রহণ করার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। অতএব বিড়ালের গলাই ঘন্টা বাঁধার এখনি সময়। রক্ষা করতে হবে আমাদের ঐতিহ্যময় সংস্কৃতি। তানাহলে অদূর ভবিষ্যতে হিরো আলমদের হাতেই থাকবে তথাকথিত ভিউয়ের পাহাড়। 

 

লেখক: সৈয়দ অহিদুজ্জামান ডায়মন্ড
জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রকার। 

মুক্তমত বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর