ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর শনিবার, ২০২৪ || ৭ পৌষ ১৪৩১
good-food
৮৯

সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর চিরবিদায়

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৬:০৪ ৫ অক্টোবর ২০২৪  

সাবেক রাষ্ট্রপতি একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (বি চৌধুরী) আর নেই। শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে তিনটায় উত্তরা উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে জানিয়েছেন তার প্রেস সচিব জাহাঙ্গীর আলম। “স্যার আর নেই। স্যার আমাদের ছেড়ে রাত তিনটা ১৫ মিনিটে চলে গেছেন।”

 

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৯৪ বছর। তিনি স্ত্রী হাসিনা ওয়ার্দা চৌধুরী, এক ছেলে দুই মেয়ে রেখে গেছেন। বড় মেয়ে মুনা চৌধুরী ব্যারিস্টার, ছোট মেয়ে শায়লা চৌধুরী চিকিৎসক এবং উত্তরা উইমেন মেডিকেল কলেজে অধ্যাপনা করেন।ছেলে মাহী বি চৌধুরী রাজনীতিবিদ, যিনি বিকল্পধারা বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব। মুন্সীগঞ্জ-১ আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

 

ফুসফুসে সংক্রমণ হওয়ায় গত ২ অক্টোবর ভোরে বারিধারার বাসা থেকে প্রবীণ রাজনীতিবিদ চিকিৎসক অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে তার প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত দেড়টায় বি চৌধুরীর মেয়ে ডা. শায়লা চৌধুরী বলেন, “অবস্থা সংকটজনক। বাবাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়েছে।”

 

পরিবারের সদস্যরা জানান, তার প্রথম জানাজা সকাল ৮টায় উত্তরা উইমেন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রাঙ্গনে, দ্বিতীয় জানাজা বাদ জোহর বারিধারায় ৮ নম্বর সড়কে বায়তুল আতিক জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। রোববার বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মরদেহ নেওয়া হবে মুন্সীগঞ্জে। সকাল ১০টায় মুন্সীগঞ্জ স্টেডিয়ামে তৃতীয় জানাজা, বাদ জোহর গ্রামের বাড়ি মজিদপুর দয়হাটায় চতুর্থ জানাজা শেষে পারিবারিক কবরাস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

 

বদরুদ্দোজা চৌধুরী ১৯৩০ সালের ১১ অক্টোবর কুমিল্লা শহরে নানা বাড়িতে (প্রখ্যাত ‘মুন্সেফ বাড়ি’) জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী কৃষক প্রজা পার্টির সহ-সভাপতি, যুক্তফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।

 

বদরুদ্দোজা চৌধুরী ১৯৪৭ সালে ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৪৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আইএসসি পাস করার পর ১৯৫৪-৫৫ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। পরে তিনি লন্ডনের রয়াল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস, এডিনবার্গ ও গ্লাসগো থেকে এফআরসিপি এবং এসসিপিএস লাভ করেন।

 

ঢাকায় মেডিসিন বিভাগের খ্যাতিমান চিকিৎসক হিসেবে দীর্ঘদিন মানুষের চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন তিনি। বি চৌধুরী বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘আপনার ডাক্তার’ নামের একটি অনুষ্ঠান পরিচালনা করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান খ্যাতিমান এই চিকিৎসককে রাজনীতিতে যুক্ত করতে ১৯৭৮ সালে নিজের প্রতিষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রথম মহাসচিব করেন। বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে ১৯৭৯, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

 

জিয়াউর রহমানের সরকারে তিনি উপ প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সরকারে শিক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। বিএনপির সঙ্গে রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে ২০০২ সালের ২১ জুন রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। পরে বি চৌধুরী বিএনপি ছেড়ে ২০০৪ সালের ৮ মে ‘বিকল্পধারা বাংলাদেশ’ নামের রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি আমৃত্যু দলটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন।