ঢাকা, ১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার, ২০২৫ || ৩ মাঘ ১৪৩১
good-food
৪০১

সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ আর নেই

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:০০ ১৯ মার্চ ২০২২  

বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার (১৯ মার্চ) সকালে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।

 

’৯০ এর গণআন্দোলনের পর দেশে গণতন্ত্রে ফেরার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেসময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন সাহাবুদ্দীন। পরে ১৯৯৬ সালে আবার রাষ্ট্রপ্রধানের পদে ফেরেন তিনি।

 

২০০১ সালে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব থেকে অবসরে যান সাহাবুদ্দীন। পরে রাজধানীর গুলশানের বাসভবনে অনেকটা নিভৃত জীবনযাপন করেন। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধ্যক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি।

 

সাহাবুদ্দীনের দুই ছেলে গুলশানের বাসায় বাবার সঙ্গে থাকেন। তার দুই মেয়ে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে রয়েছেন।

 

’৯০ এর আন্দোলনে স্বৈরশাসক হুসেন মুহাম্মদ এরশাদের পতন হয়। এরপর নাটকীয়ভাবে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে আসেন তখনকার প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন।

 

এরশাদ পদত্যাগ করার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শূন্য রাষ্ট্রপতির পদে এবং নির্বাচন হওয়ার আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান রূপে কে আসীন হবেন তা নিয়ে দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল কোনও সমঝোতায় পৌঁছাতে পারছিল না। 

 

এক দল অন্য দলের প্রার্থীর প্রতি অনাস্থা পোষণ করছিল। অবশেষে বিচারপতি সাহাবুদ্দীনের নাম এলে উভয় দলই ঐকমত্য পোষণ করে। তারা বলে তিনিই একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে পারেন।

 

সুপ্রিম কোর্টে ফেরার শর্ত দিয়ে সাহাবুদ্দীন তাতে রাজি হন। ১৯৯০ সালের ৫ ডিসেম্বর ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ উপ-রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন। ফলে সেই পদে অধিষ্ঠিত হন সাহাবুদ্দীন। ৬ ডিসেম্বর এরশাদ ক্ষমতা ছাড়লে তিনি হন রাষ্ট্রপতি। পরে তার নেতৃত্বাধীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়।

 

নির্বাচনের পর আবার প্রধান বিচারপতির পদে ফেরেন সাহাবুদ্দীন। এজন্য সংবিধানে পরিবর্তন আনতে হয়। চাকরির মেয়াদ শেষে ওই পদ থেকেই অবসরে যান তিনি।

 

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। এরপর দলটির প্রার্থী হিসেবে সংসদীয় সরকার পদ্ধতিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সাহাবুদ্দীন। ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি সেই দায়িত্বে ছিলেন।

 

এর আগে ২০১৮ সালে ৮০ বছর বয়সে মারা যান সাহাবুদ্দীনের স্ত্রী আনোয়ারা আহমদ। দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনিও। তাদের পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার বড় ড. সিতারা পারভীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। ২০০৫ সালের ২৩ জুন যুক্তরাষ্ট্রে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি।