ঢাকা, ২২ ডিসেম্বর রোববার, ২০২৪ || ৮ পৌষ ১৪৩১
good-food
১৭৯

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বনাম প্রথাগত সংবাদমাধ্যম

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০২:৪৯ ২ আগস্ট ২০২৪  

ফোন একবার হাতে নিলে আর নামানো হয় না, ফেইসবুক ইন্সটাগ্রাম দেখতে দেখতে সময় চলে যায়। সময় কাটানোর এরকম অলস ব্যবস্থা হয়ত এখন পর্যন্ত আর তৈরি হয়নি। আর নানান রকম ছবি ও ভিডিও দেখতে দেখতে মনের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনাও বাড়ে।

 

এই তথ্য জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপার্টমেন্ট অফ ভ্যাটেরান্স অ্যাফেয়ার্স ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মার্কিন মানসিক-রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কলেন ব্যাকেট-ড্যাভেনপোর্ট বলেন, “যাদের ‘ডিপ্রেশন’ বা মানসিক চাপে ভোগার সমস্যা রয়েছে তাদের অনেকেই অতিরিক্ত সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় কাটায়।”

 

যদি কারও ‘পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার (পিটিএসডি)’ বা দূর্ঘটনা পরবর্তী মানসিক সমস্যা তৈরি হয়ে থাকে তবে তাদের বেশিক্ষণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করা উচিত না।

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বনাম প্রথাগত সংবাদ মাধ্যম

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর পিটিএসডি’র এই মনোবিজ্ঞানি বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে কেউ যে কোনো সময় যত খুশি ভিডিও-ছবি ছাড়তে পারেন। অন্যদিকে সংবাদ মাধ্যমগুলোতে সম্পাদনার মাধ্যমে তথ্য যাচাই বাছাই করে, প্রতিদিন কী পরিমান বিষয় প্রকাশ করা হবে সেটা নিয়ন্ত্রণ করা হয়।”

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেকেন্ড সেকেন্ডে নানান বিষয় ‘আপডেইট’ হতে থাকে। ফলে দেখা যায় বিরামহীন-ভাবে ‘স্ক্রল’ করা হচ্ছে। এই অন্তহীন তথ্যের ভাণ্ডাড়ে ডুবে গিয়ে নিজের কাজের কথাই হয়ত ভুলে যাওয়া হয়। বিশেষ করে পিটিএসডি’তে ভোগা মানুষদের মনে আরও বেশি প্রভাব পড়ে।

 

“আর যেসব জিনিস দেখে মনে প্রভাব পড়ে সেগুলোর বিষয়ে হয়ত বলা হয় না, যে কারণে মানসিক চাপটা থেকেই যায়” ব্যাখ্যা করেন ডা. ব্যাকেট-ড্যাভেনপোর্ট।

 

সর্বনাশা ‘স্ক্রলিং’

‘ডুমস্ক্রলিং’ নামটা পরিচিতি পায় কোভিড-১৯ মহামারীর সময়ে। ডা. ব্যাকেট-ড্যাভেনপোর্ট বলেন, “বিজ্ঞানিরা দেখতে পায়- সোশাল মিডিয়া’তে থাকা সীমাহীন ভিডিও বা ছবি দেখতে দেখতে মনে এক ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যাকে বলা হচ্ছে সর্বনাশা বা ‘ডুমস্ক্রলিং।”

 

এর ফলে কোনো বিষয়ে নির্দিষ্ট সমাধান বা সাহায্য না করে বরং ‘চ্যালেঞ্জ’য়ের দিকে ঠেলে দিয়ে দুশ্চিন্তার অনুভূতি বাড়িয়ে তোলে। আবেগ অনুভূতিতে আঘাত আনতে পারে এরকম অনেক কিছুই ‘ডুমস্ক্রলিং’য়ের কারণে হতে পারে।

 

স্বাস্থ্যকরভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে চাইলে

কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার মতো, মোবাইল ফোন ব্যবহার করেও মানসিক সমস্যায় প্রতিকারের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। নানান ধরনের অ্যাপ রয়েছে ‘পিটিএসডি কোচ’, ‘পিই কোচ’ বা ‘সিপিটি কোচ’- এই ধরনের অ্যাপগুলোর মাধ্যমে ‘পিটিএসডি’তে ভোগা ব্যক্তিরা সমস্যা নিয়ন্ত্রণে কাজে লাগাতে পারেন।

 

স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞের সাহায্য নিয়েও মানসিক চাপ কমানো যেতে পারে। কমাতে হবে মোবাইল ফোনের ব্যবহার। দরকার হলে ফোন থেকে ফেইসবুক বা ইন্সটাগ্রাম ফেলে দিতে হবে। কারণ ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ দিয়েও এসব ব্যবহার করা যায়। ফোনে থাকলে যখন তখন ব্যবহার করা হয়ে যায়। যা অন্যান্য যন্ত্রের মাধ্যমে সম্ভব না।

 

অ্যাপস’য়ের ব্যবহার নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে ফোনে অ্যালার্ম দিয়ে রাখা যেতে পারে। কোনো কোনো ফোনে নির্দিষ্ট সময়ের পর অ্যাপগুলো কাজ করবে না এমন পদ্ধতিও দেওয়া থাকে। সেগুলো ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার কমানো সম্ভব।

 

ডা. ব্যাকেট-ড্যাভেনপোর্ট বলেন, “কীভাবে আপনার ফোন ব্যবহার করবেন সেটা জানা জরুরি। বাজে অনুভূতি তৈরি না করে কীভাবে ফোনকে সাহয্যকারীর ভূমিকায় আনা যায়, সেটা আপনাকেই তৈরি করে নিতে হবে।”

তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর