ঢাকা, ২২ নভেম্বর শুক্রবার, ২০২৪ || ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২৬২

সুখী মানুষরা যেসব কাজ করেন না

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০১:২০ ২৩ মার্চ ২০২৪  

সুখ বা ভালো থাকার আদর্শ কোনো সংজ্ঞা নেই। এটি কেবলই একধরনের মানুষের মানসিক অবস্থা। আপনি যে ধরনের কাজ করে নিজেকে ভালো রাখতে পারেন বা সুখী মনে করেন, সেসব কাজে ভবিষ্যতে আবার অসুখীও মনে হতে পারে আপনার। আবার খুবই অল্পতে সন্তুষ্ট থাকা মানুষের সংখ্যাও বেশ কম।

 

যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক মনোবিজ্ঞানী এরিন অলিভোর মনে করেন, একজন মানুষের সুখী হওয়ার জন্য তার অপূর্ণতাগুলোকে ভালোবাসতে শিখতে হবে। এছাড়াও তার পরামর্শ―আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করুন এবং জীবনকে আবিষ্কার করুন। এই মনোবিজ্ঞানীসহ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ এ ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন। এবার তাহলে রিডার্স ডাইজেস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী জেনে নেয়া যাক, কীভাবে অপ্রয়োজনীয় আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

 

ভালোবাসার চাপে না থাকা: খুবই কাছের কিছু মানুষ থাকে যাদের আমরা অনেক আপন কিংবা ভালোবাসার মানুষ বলে মনে করি। অনেক সময় তেমন কিছু মানুষের কাছ থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত আঘাত পাওয়ার পর নিজেকে গুটিয়ে নেই আমরা। নিজেকে অদৃশ্য এক পর্দায় ঢেকে আড়াল হয়ে যায়। যা নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ভালোবাসা না পাওয়ার ভয় সবারই থাকে। কিন্তু যেসব মানুষ সুখী, তারা ভালোবাসা সরাসরি চাইতে শেখেন। আর তারা কারও কাছ থেকে সাড়া না পেলেও আড়াল করেন না নিজেকে। বিপরীতে তারা আরও মানসিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠেন।

 

প্রয়োজনে বারবার একই ভুল করা: অনেকেই মনে করেন সুখী মানুষরা কখনোই কোনো ভুল করেন না বা ব্যর্থ হন না। সুখী মানুষরাও ভুল করেন, ব্যর্থ হন। তবে অন্যদের থেকে তারা এখানেই ব্যতিক্রম, তারা ভুল বা ব্যর্থতা থেকেও শিক্ষা অর্জন করেন এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যান। কারণ, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে গেলে তবেই সুন্দর হয় জীবন।এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সমাজকর্মী ও প্রশিক্ষক অ্যামি বেন্টন বলেন, অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে জীবন দুর্বিষহ করার মাধ্যমে কিছু খারাপ অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু ভালো থাকার জন্য সেসব বাধা যেভাবেই হোক অতিক্রম করতে হবে আপনাকে।

 

ব্যর্থ হওয়ার ভয় নয়: একজন মানুষের জীবনের প্রধান শক্তি হচ্ছে তার আত্মবিশ্বাস। সুখী হতে চাইলে অবশ্যই নতুন কিছু করার চেষ্টা বা ঝুঁকি নিতে হবে আপনাকে। এর জন্য ভয় পেলে চলবে না। মনের সব ভয়কে অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে হবে। আর আত্মবিশ্বাসকে সবসময় চর্চার মধ্যে রাখতে হবে। মনে রাখবেন, সুখী মানুষরা ব্যর্থতাকে মোকাবিলা করতে কখনো পিছপা হন না।

 

 

অন্যকে দোষ না দেয়া: কেউ কোনো কারণে খারাপ ব্যবহার করতে পারে বা ঠকাতে পারে। জীবনে এমন অভিজ্ঞতা সবারই থাকে। কিন্তু আপনি যদি সুখী মানুষ হতে চান, তাহলে কখনো কাউকে দোষারোপ করা যাবে না। নিজেকে একজন ভুক্তভোগী মানসিকতার চাদর থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে নিজের সৃজনশীল মানসিকতাকে অধিকতর কাজে লাগাতে হবে। কারণ, সৃজনলীতা মানসিকভাবে সমৃদ্ধ করে মানুষকে।

 

 

সমস্যা মোকাবিলা করা: জীবনে অনেক সমস্যা, জটিলতা বা ঝড় আসে, সেসব কিন্তু কোনো না কোনোভাবে মোকাবিলা করেছেন। এ সময় কখনো ভেঙে পড়লে চলবে না। কারণ, যেকোনো সমস্যায় প্রথমে টিকে থাকা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। আর সমস্যা সমাধানের পর এর প্রতিকার খুঁজে বের করুন। কেননা, জীবনে কোনো ঝড়ই স্থায়ী নয়। একসময় তা থেমে যায়।

 

নিজেকে মূল্যবান ভাবা: সামাজিক দায়বদ্ধতা বা সম্পর্কের কারণে অন্যের জন্য অনেক কিছুই করতে হয় আমাদের। অন্যের জন্য কিছু করা বরাবরই ভালো লাগার কাজ। বিয়ে ও পরিবারবিষয়ক থেরাপিস্ট মেগান বিয়ার্স এ ব্যাপারে বলেছেন, প্রায়ই অনেকে বলেন যে, তারা অন্যের ঠিক করে দেয়া সিদ্ধান্ত নিয়ে জীবনের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে একপর্যায়ে ক্লান্ত হয়ে যান। তারা জীবনের কোনো অর্থ খুঁজে পান না। যা একদমই উচিত নয়। আপনার জীবন নৌকার মাঝি আপনাকেই হতে হবে। তাহলে সুন্দর হবে জীবন।

 

সবার আগে সুস্থতা: জীবনে সুখী হওয়ার জন্য শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখা বেশি জরুরি। এর অর্থ আবার এটা নয় যে, আপনার সিক্স-প্যাক অ্যাবস এবং বিলাসবহুল জীবনযাপন করতে হবে। পুষ্টি উপাদানে ভরপুর খাবার খেয়ে, পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমিয়ে, নিয়মিত শরীরচর্চা ও মেডিটেশন করে যত্ন নিতে হবে নিজের। শরীর হচ্ছে সবচেয়ে বড় সম্পদ। এ জন্য নিজের শরীরের যত্ন নিজেকেই নিতে হবে। যত যা কিছুই করেন না কেন, নিজের সুস্থতার দিকে খেয়াল রাখবেন আগে। শরীর সুস্থ থাকলেই সুখী আপনি।