ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৭০৬

হেপাটাইটিস যেভাবে ছড়ায়, লক্ষণ ও প্রতিরোধ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০১:০৬ ২৯ জুলাই ২০২১  

করোনাভাইরাসের এই অতিমারিতে থেমে নেই অন্যান্য ভাইরাসজনিত রোগ। করোনার পাশাপাশি তারাও মানুষের জীবনের ওপর বিস্তার করে রয়েছে ভয়াল থাবা। হেপাটাইটিস বি যাদের মধ্যে অন্যতম একটি রোগ। বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রায় ৪ কোটি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত। বাংলাদেশে পাওয়া সমীক্ষায় তা প্রায় ৬৬ লাখের মতো। তাই, এই ভাইরাসকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
 

কীভাবে ছড়ায়
হেপাটাইটিস বি হেপাডনা ভাইরাস পরিবারের সদস্য। এটি একধরনের ডাবল স্ট্রান্ডেড ডিএনএ ভাইরাস। জীবিত ভাইরাস মানুষের মিউকাস মেমব্রেনের সরাসরি সংস্পর্শে এলে তা আরেকজনের শরীরে ছড়াতে পারে। যেমন:

  • অরক্ষিত যৌনমিলনের সময়ে।
  • রক্ত এবং যেকোনো ধরনের  শরীরের তরল, যেমন: লালা, বীর্য রস প্রভৃতির মাধ্যমে।
  • হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত মায়ের থেকে সন্তান জন্মদানের সময়।

 

  • একই সিরিঞ্জ জীবাণুমুক্ত না করে অনেকে ব্যবহার করলে।
  • একান্ত ব্যক্তিগত সরঞ্জাম, যেমন: রেজর, টুথব্রাশ বা নেইল কাটার ভাগাভাগি করে ব্যবহার করলে।
  • শরীরে ট্যাটু করলে।
  • স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগীদের সেবাদানকালে।

 

লক্ষণ

  • হেপাটাইটিস বি-তে আক্রান্ত হলে যকৃতে প্রদাহ হয়।
  • প্রথমদিকে অন্যান্য ভাইরাসবাহিত রোগের মতো কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। এগুলোর মধ্য রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, দুর্বলতা, খাওয়ায় অরুচি, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, পেটব্যথা, গিঁঠে ব্যথা, চামড়ায়     র‍্যাশ বা দানা।
  • অতিরিক্ত জন্ডিসের লক্ষণও দেখা যেতে পারে, যেমন: প্রস্রাব হলুদ হওয়া, চোখের রং হলুদ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

 

প্রতিরোধ

  • রক্ত সঞ্চালনের আগে অবশ্যই হেপাটাইটিস বি স্ক্রিনিং করে নিতে হবে।
  • অরক্ষিত যৌনমিলন পরিহার করতে হবে।
  • শরীরে ট্যাটু করা বা একই সিরিঞ্জ অনেকে মিলে ব্যবহার করা যাবে না।
  • স্বাস্থ্যকর্মীরা হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত রোগীদের সেবা দেওয়ার সময় অবশ্যই দুটি গ্লাভস ব্যবহার করবেন।

    
দীর্ঘমেয়াদি হেপাটাইটিস বি এর চিকিৎসা
দীর্ঘমেয়াদি হেপাটাইটিস বি একটি জীবনব্যাপী রোগ, যার পরীক্ষা ও চিকিৎসা যথেষ্ট ব্যয়বহুল। যাঁরা দীর্ঘমেয়াদি হেপাটাইটিস বি-তে আক্রান্ত, তাঁদের ৬ মাস অন্তর লিভারের সনোগ্রাম, আলফাফিটোপ্রোটিন, লিভার ফাংশন টেস্ট, ফাইব্রোস্ক্যান, রক্তে ভাইরাসের উপস্থিতি দেখাসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করাতে হয়। আর এর চিকিৎসার জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

 

বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ, যেমন: অ্যান্টাকেভির, টেনোফোভির, ল্যামিভিউডিন, এডেফোভির প্রভৃতি থেকে চিকিৎসক রোগীর শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় ওষুধ নির্বাচন করেন। পাশাপাশি প্রয়োজন হয় বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা।

 

এত কিছুর পরও, কখনো কখনো ক্যানসারে অগ্রসর হওয়াকে থামানো যায় না। একমাত্র সচেতনতাই পারে এই ঘাতক ব্যাধি থেকে আমাদের রক্ষা করতে। ভাইরাসবাহী এই রোগটিকে এখনই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে একে প্রতিরোধ করতে হবে।