ঢাকা, ২০ এপ্রিল রোববার, ২০২৫ || ৭ বৈশাখ ১৪৩২
good-food
২৪৭

করোনা ঠেকানোর ৭ উপায়

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:২৩ ১১ জুন ২০২১  

করোনা এখনো পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়নি। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এখনো মানুষ মারা যাচ্ছে। হারাচ্ছেন প্রিয়জন। ভ্যাকসিন ছাড়া এ ভাইরাস নির্মূল সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে সবাই সতর্ক হলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এ জন্য আরও সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা।


এসব সতর্কতা অবলম্বন করলে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হবার সম্ভাবনা কিছুটা হলেও কমে আসবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। এ সতর্কতাগুলো কী? সেগুলো তুলে ধরা হলো।


১. গণপরিবহন এড়িয়ে চলুন
দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পর ফের চালু হচ্ছে গণপরিবহন। যাতায়াতের ক্ষেত্রে গণপরিবহন এড়িয়ে চলা কিংবা সতর্কতার বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বাস, ট্রেন কিংবা অন্য যে কোন ধরণের পরিবহনের হাতল কিংবা আসনে করোনাভাইরাস থাকতে পারে।

সেজন্য যেকোনও পরিবহনে চলাফেরার ক্ষেত্রে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করা এবং সেখান থেকে নেমে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করার উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।


২. কর্মক্ষেত্রে এক কম্পিউটার ব্যবহার করবেন না
অফিসে একই ডেস্ক এবং কম্পিউটার ব্যবহার করলেও ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাঁচি-কাশি থেকে করোনাভাইরাস ছড়ায়। যেকোনও জায়গায় করোনাভাইরাস কয়েক ঘন্টা এমনকি কয়েকদিন পর্যন্ত সক্রিয় থাকতে পারে। অফিসের ডেস্কে বসার আগে কম্পিউটার, কিবোর্ড এবং মাউস পরিষ্কার করে নিন।


৩. জনসমাগম এড়িয়ে চলুন
যেসব জায়গায় মানুষ বেশি জড়ো হয় সেসব স্থান এড়িয়ে চলা কিংবা বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে খেলাধুলার স্থান, সিনেমা হল থেকে শুরু করে ধর্মীয় স্থানও রয়েছে।


বাংলাদেশের মতো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে জুমার নামাজের সময় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। সৌদি আরবও এ ক্ষেত্রে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে।


৪. আর্থিক প্রতিষ্ঠানে একই কলম ব্যবহার করবেন না
বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যখন গ্রাহকরা যান, তখন অনেকেই একটি কলম ব্যবহার করেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনও ব্যক্তি যদি সেই কলম ব্যবহার করেন, তাহলে পরবর্তী ব্যবহারকারীদেরও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।


সেজন্য নিজের কলম আলাদা করে রাখতে পারেন। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে। এছাড়া টাকা উত্তোলনের জন্য যে এটিএম বুথ ব্যবহার করা হয়, সেখান থেকেও সংক্রমণ হতে পারে। কারণ এটিএম বুথের বাটন অনেকে ব্যবহার করে।


৫. লিফট ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে আরেকটি জায়গা হতে পারে বাড়ি কিংবা অফিসের লিফট। লিফট ব্যবহারের সময় নির্ধারিত ফ্লোরে যাবার জন্য লিফটের বাটন অনেকে ব্যবহার করছেন।


বিভিন্ন অফিস ভবনে প্রতিদিন শত-শত মানুষ লিফট ব্যবহার করছেন। এদের মধ্যে কেউ যদি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী থাকেন এবং সে লিফটের বাটনে অন্যদের আঙ্গুল গেলেও সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে।


৬. টাকা-পয়সা থেকেও ছড়াতে পারে
ব্যাংক নোট বা টাকায় নানা ধরণের জীবাণুর উপস্থিতি শনাক্ত করার ঘটনা নতুন নয়। এমনকি ব্যাংক নোটের মাধ্যমে সংক্রামক নানা রোগ ছড়িয়ে পড়ার কথাও বলেন বিশেষজ্ঞরা।


বাংলাদেশের একদল গবেষক গত বছরের অগাস্ট মাসে বলেছিলেন, তারা বাংলাদেশি কাগুজে নোট ও ধাতব মুদ্রায় এমন ধরণের ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পেয়েছেন, যা সাধারণত মল-মূত্রের মধ্যে থাকে।


বিশেষজ্ঞরা, ব্যাংক নোট এড়িয়ে স্পর্শবিহীন মাধ্যম বা প্রযুক্তি ব্যবহার করে কেনাকাটা বা লেনদেন করার পরামর্শ দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে ভাইরাসের উপস্থিতি নিয়ে টাকা বা ব্যাংক নোট জীবাণুমুক্ত করার একটি উদ্যোগ দেখা যায় চীনে।


দেশটিতে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর সেখানে ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকাতে বাজার থেকে ব্যাংক নোট সরিয়ে নিয়ে তা আবার জীবাণুমুক্ত করে বাজারে ছাড়ে দেশটি।


৭. করমর্দন করবেন না

করমর্দন ও কোলাকুলির মাধ্যমেও করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে। যদিও এ ব্যাপারে সবাই সচেতন। আপনি যে ব্যক্তির সাথে কোলাকুলি এবং করমর্দন করছেন, তিনি যদি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন তাহলে সেটি অন্যের দেহে সংক্রমিত হতে পারে। তবে এখনো গ্রাম অঞ্চলে এসব নিয়ম পালনে কিছুটা অনিহা দেখা যায়। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।


এজন্য করমর্দন এবং কোলাকুলির না করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবকিছুর মূল কথা হচ্ছে নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাখা। হাত না ধুয়ে নিজের মুখমণ্ডল স্পর্শ করবেন না। এটি হলে ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য নিয়মিত ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করছেন বিশেষজ্ঞরা।

করোনাভাইরাস বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর