ঢাকা, ২০ এপ্রিল রোববার, ২০২৫ || ৭ বৈশাখ ১৪৩২
good-food
২৩৩

শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙালেন ড. জাফর ইকবাল

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২০:০৪ ২৬ জানুয়ারি ২০২২  

জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের অনুরোধে অনশন ভাঙলেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। টানা সাতদিন পর বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল সোয়া ১০টায় এই আমরণ অনশন ভাঙেন তারা। তবে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে তাদের আন্দোলন চলবে জানান।

 

এর আগে মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) ভোররাতে ঢাকা থেকে সিলেটে পৌঁছান জাফর ইকবাল। তিনি শাবিপ্রবিতে গিয়ে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।

 

ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক বলেন, ‘তোমরা কেন তোমাদের জীবন অপচয় করছো? তোমাদের বাঁচতে হবে। তোমরা ইতোমধ্যে বিজয়ী হয়ে গেছ। সারাদেশের মানুষ তোমাদের পক্ষে আছে। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। জীবন অনেক মূল্যবান। তুচ্ছ বিষয়ে জীবন অপচয় করা যাবে না।’

 

জাফর ইকবাল জানান, উচ্চপর্যায়ে তার আলোচনা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন। এ কারণেই তিনি ক্যাম্পাসে ছুটে এসেছেন।  তিনি বলেন, ‘আজ উচ্চপর্যায়ের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আমার বাসায় আলোচনা হয়েছে। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তোমরা যে দাবি করছো, সেটা পূরণ হবে। তোমাদের ওসিলায় দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক হবে।’

 

পরিপ্রেক্ষিতে অনশন ভাঙের আন্দোলনকারীরা। তাদের অন্যতম নাফিসা আঞ্জুম ইমু বলেন, ‘ঢাকা থেকে জাফর স্যার (মুহম্মদ জাফর ইকবাল) এসে বলার পর আমরা কেউ তা ফেলতে পারিনি। স্যারের কথা আমরা বিশ্বাস ও ভরসা করি। তার কথায় সবাই আশ্বস্ত হয়ে অনশন ভাঙতে রাজি হই।’

 

আন্দোলনকারীরা একসঙ্গে অনশন শুরু করেছিলেন। তাই অনশনও একসঙ্গে ভাঙেন। হাসপাতালে যারা চিকিৎসাধীন ছিলেন, তারাও ক্যাম্পাসে আসেন। এরপর সবাই মিলে অনশন ভাঙেন। গত বুধবার বেলা ৩টা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের মধ্যে ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

 

ছাত্রীদের একটি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রভোস্টের দুর্ব্যবহার এবং হলে বিছানা সংকট ও খাওয়ার সমস্যা সমাধানের দাবিতে দিন দশেক আগে শুধু ওই হলের ছাত্রীদের আন্দোলন শুরু হয়। দুই দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে রূপ নেয়। ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়া ছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলার অভিযোগ ওঠে।

 

গত ১৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের পিটুনি, কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ, সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনা ঘটার পর থেকে আন্দোলন জোরদার হয়। উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি। আন্দোলন সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করে এবং শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। সেটিও মেনে নেয়নি শিক্ষার্থীরা।

 

একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরবর্তীতে উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। এসব ব্যাপারে উপাচার্যের কোনও বক্তব্য অবশ্য পাওয়া যায়নি।