ঢাকা, ২৪ নভেম্বর রোববার, ২০২৪ || ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৩৮২

আকাশপথে সামাজিক দূরত্ব কেমন হবে?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১২:২৯ ১২ মে ২০২০  

কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ভবিষ্যতে বিমান ভ্রমণের ওপর নজরদারি, বিধিনিষেধ যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ - তা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই।

 

লকডাউন উঠলেও যে বিমানে ভ্রমণের ওপর নানা ধরণের বিধিনিষেধ - শর্ত বসানো হবে, তাও বলাই বাহুল্য।

 

ব্রিটেনের সরকার ইতিমধ্যেই পরিষ্কার করেছে, মে মাসের শেষদিক থেকে বিদেশ থেকে যে কেউই বিমানে করে এদেশে এলে তাকে ১৫ দিনের জন্য কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

 

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায়, ব্রিটেন-ভিত্তিক এয়ারলাইন্সগুলোর সমিতি এয়ারলাইন্স ইউকে বলেছে, এটা হলে যাত্রী বিমানের ব্যবসা লাটে উঠবে। তাদের কথা, ১৫দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হলে ব্রিটেনের দিকে কেউই পা মাড়াবে না।

 

লন্ডনের হিথরো সহ ইউরোপের বিভিন্ন এয়ারপোর্টে ইতিমধ্যেই নানাধরনের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা চালু হয়ে গেছে।বিমান যাত্রী এবং স্টাফদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। ফেসমাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।

 

এয়ার ফ্রান্স সোমবার থেকে সীমিত পরিসরে তাদের ফ্লাইট শুরু করেছে। তারা জানিয়েছে প্রত্যেক যাত্রীর জন্য ফেসমাস্ক এবং গ্লাভস ব্যবহার করতে বাধ্যমূলক করা হচ্ছে।

 

ব্রিটেনের ম্যানচেস্টার এবং স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দরের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন তারা বিমানবন্দরের কর্মচারীদের জন্য ফেসমাস্ক এবং গ্লাভস পরা বাধ্যতামূলক করছেন। যাত্রীদেরও ফেসমাস্ক এবং গ্লাভস পরতে বলা হবে।


মার্চের শেষ থেকে ইজি জেটের বিমান উড়ছে না। তারা বলছে, সামজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে দুই যাত্রীর মাঝে একটি সিট খালি রাখতে তারা প্রস্তুত। কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, বিমানের ভেতরে সামাজিক দূরত্ব কীভাবে নিশ্চিত করা যাবে?

 

এ নিয়ে এভিয়েশন খাতে বড় ধরনের তর্ক বিতর্ক শুরু হয়েছে।কিছু কিছু এয়ারলাইন্স - যেমন, এমিরেটস, ইউরোপের ইজি জেট বা আমেরিকার ডেল্টা এয়ারলাইন্স - বলছে তারা কিছুদিনের জন্য দুজন যাত্রীর মাঝে একটি সিটি খালি রাখতে প্রস্তুত। আয়ারল্যান্ডের বিমান সংস্থা এয়ার লিঙ্গাসও একই ইঙ্গিত দিয়েছে।

 

তারাই বলছে, সরকারগুলোরও উচিৎ কিছুদিনের জন্য এই ব্যবস্থা যেন বাধ্যতামূলক করা হয়।

কিন্তু সব এয়ারলাইন্স সেটা মানতে রাজী নয়।

 

যেমন ইউরোপে স্বল্প ভাড়ার যাত্রী বিমান খাতের অন্যতম জায়ান্ট রায়ান এয়ার জানিয়ে দিয়েছে সিট খালি রাখার শর্ত চাপানো হলে তারা বিমান চালাবেই না।

 

রায়ান এয়ারের প্রধান নির্বাহি মাইকেল ও লিয়েরি বলেছেন, এ ধরনের শর্ত হবে ‘ইডিওটিক‘ অর্থাৎ চরম বোকামি।

 

তার যুক্তি - মাঝের সিট খালি রাখলেই তাতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত হবেনা, বরঞ্চ তাতে যাত্রী বিমান ব্যবসা অচল হয়ে পড়বে।


রায়ান এয়ারের প্রধান নির্বাহি মাইকেল ও লিয়েরি বলেছেন, সিট খালি রাখার শর্ত চাপানো হলে তারা বিমান চালাবেনই না
কিন্তু ইজি জেটের প্রধান নির্বাহি ইয়োহান লান্ডগ্রেন বলছেন যাত্রীদের ভেতর ভরসা তৈরি করতে মাঝের একটি সিট খালি রাখা এখন সঙ্গত হবে।

 

তিনি মনে করেন, এমনিতেই অদূর ভবিষ্যতে ভয়েই মানুষজন বিমান ভ্রমণ করতে চাইবে না, যাত্রীর চাপ থাকবে কম। ফলে, মাঝের সিট খালি রাখা কোনো সমস্যা হবেনা।

 

এক সিট অন্তর অন্তর যাত্রী বসানো নিয়ে সরকারগুলোর পক্ষ থেকে এখনও স্পষ্ট করে কিছু শোনা যায়নি।

 

করোনাভাইরাস সামাল দিতে মার্চ থেকে একের পর এক দেশ লকডাউন জারি করা শুরু করার পর অর্থনীতির যেসব খাত সবচেয়ে বেশি হুমকিতে পড়েছে তার অন্যতম এভিয়েশন বা বিমান চলাচল।

 

জাতিসংঘের বেসামরিক বিমান চলাচল বিষয়ক সংস্থা আইসিএও বলছে, এ বছরের প্রথম নয় মাসে বিমান যাত্রীর সংখ্যা গত বছরের এই সময়ের তুলনায় ১২০ কোটি বা দুই-তৃতীয়াংশ কম হবে।