ঢাকা, ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ১৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
৮৩৭

উপার্জনের সম্বল চুরি হওয়া বাইক পেলেন শাহনাজ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:২২ ১৬ জানুয়ারি ২০১৯  

 

অবশেষে উপার্জনের একমাত্র সম্বল চুরি হওয়া মোটর বাইকটি হাতে পেলেন শাহনাজ আক্তার।

বুধবার দুপুরে ঢাকার তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার বিপ্লব সরকার বাইকের চাবি শাহনাজের হাতে তুলে দেন। এ সময় শাহনাজের মুখে খুশির ঝিলিক দেখা যায়।

অভিযোগ পাওয়ার পর মাত্র সাড়ে ১০ ঘণ্টায় চুরি যাওয়া বাইকটি উদ্ধার করতে পেরে পুলিশও খুশি।

তেজগাঁও উপপুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে বাইকের চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে শাহনাজ বেগমের হাতে ১০ হাজার টাকা তুলে দেন বিপ্লব সরকার।

বিপ্লব সরকার বলেন, ‘সংগ্রামী নারী শাহনাজ আক্তার বাইক চালিয়ে সংসার চালাতেন। বাইক চুরির পর থেকে তিনি বাইক চালাতে পারেননি। তাঁর উপার্জনের পথ বন্ধ ছিল। সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমরা কিছু আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। শাহনাজ এ সহায়তা নিতে চাচ্ছিলেন না। একে আর্থিক সহায়তা না বলে বলা যায়, আমরা এই সংগ্রামী নারীর পাশে থাকতে চেয়েছি।’

বাইক উদ্ধারের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শাহনাজ।

এত কম সময়ে বাইক উদ্ধার প্রসঙ্গে বিপ্লব বলেন, ‘শাহনাজ আক্তার নামের এই নারীর বাইক চুরি যাওয়ার খবর পাবার মাত্র সাড়ে ১০ ঘণ্টায় আমরা উদ্ধার করেছি। বাইকটি যিনি চুরি করেছেন, তাঁকেও আটক করতে পেরেছি।’

বিপ্লব সরকার বলেন, ‘চাবি হস্তান্তর করার সময় শাহনাজ আক্তারের মুখে হাসি ছিল, একইভাবে একটি ভালো কাজ দ্রুত করতে পারায় আমাদের মুখেও হাসি ছিল। চুরি মামলার অভিযোগে আটক জোবাইদুলের গতিবিধি সন্দেহজনক। আমরা আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে রিমান্ড চাইব।’

অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ার করে জীবিকা চালানো আলোচিত সেই নারী বাইকচালক শাহনাজের চুরি যাওয়া মোটরবাইকটি নারায়ণগঞ্জের রঘুনাথপুর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারকাজে নেতৃত্ব দেন পুলিশের তেজগাঁও জোনের সহকারি কমিশনার আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর খামারবাড়ি এলাকায় প্রতারণার মাধ্যমে বাইকটি চুরি করে নিয়ে যান জোবাইদুল।

এ ঘটনায় শাহনাজ শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন।

শাহনাজ জানান, জোবাইদুল কয়েকদিন আগে তাঁর কাছে জনি নামে পরিচিত হন। জনি নামের এ যুবকও অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ার করেন বলে জানিয়েছিলেন। শাহনাজকে একটি স্থায়ী চাকরি দেয়ার কথা বলে মঙ্গলবার তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। মঙ্গলবার শাহনাজকে বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরিয়ে খামারবাড়ি এলাকায় একটি অফিসের সামনে আসেন। তাঁরা অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে একসঙ্গে চা খান।

একপর্যায়ে জোবাইদুল শাহনাজের কাছে জানতে চান, বাইকটি তিনি কীভাবে চালান। এরপর তিনি নিজেই বাইকে চড়ে বসেন। কিছুক্ষণ বাইক চালানোর ভাবভঙ্গি করে একসময় বাইকটি চালিয়ে চলে যান। শাহনাজ পেছন পেছন গেলেও আর তাঁকে ধরতে পারেননি। তারপর জোবাইদুলের মুঠোফোনে ফোন দিলে খারাপ ব্যবহার করতে থাকেন এবং জানান তিনি শাহনাজ নামের কাউকে চেনেন না।

বাইক উদ্ধারে নেতৃত্ব দেওয়া আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন বলেন, আসামি জোবাইদুল (২৬) প্রথমে মিথ্যা কথা বলেন। শাহনাজ আক্তারের কাছে টাকা পেতেন বলে জানান। পরে প্রতারণা করে বাইক চুরির কথা স্বীকার করেন। আসামি নিজেকে শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। তিনি বিবাহিত। তাঁর গ্রামের বাড়ি বরিশাল। আসামির কথাবার্তায় মনে হচ্ছে তিনি মাদকাসক্ত এবং বাইক চুরির কোনো দলের সঙ্গে জড়িত।

এক মাস ধরে মোবাইল স্মার্টফোনের অ্যাপভিত্তিক ট্যাক্সি-সেবার নেটওয়ার্ক উবারের মাধ্যমে মোটরবাইক চালাচ্ছেন শাহনাজ আক্তার। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে তিনি অনেকটাই পরিচিত হয়ে উঠেছেন।

বাংলাদেশ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর